ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন এখনই
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমি আমার আর্টিকেলের মধ্যে
বিস্তারিত আলোচনা করবো। এছাড়াও সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা ও
সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম সম্পর্কেও আলোচনা করবো
আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমার
এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে ব্যায়াম
সম্পর্কিত সকল তথ্য জেনে নেওয়া যাক
পেজ সুচিপত্রঃ ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
- ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
- সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা
- নিয়মিত ব্যায়াম করার উপকারিতা
- সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম
- নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা
- শ্বসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব
- কখন ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময়
- সপ্তাহে কয় দিন ব্যায়াম করা উচিত
- প্রতিদিন ব্যায়াম করলে কি হয়
- FAQ/ব্যায়াম সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
- ব্যায়াম করার সময় যেসব ভুল করা জাবে না
- লেখকের মন্তব্যঃ ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে বিস্তারিত বলবো।
ব্যায়াম করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী সঠিক নিয়মে যদি প্রতিদিন
ব্যায়াম করা যায়। তাহলে সেটা আমাদের শরীরকে টাটকা ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে এবং
শরীরের মধ্যে শক্তি উৎপন্ন করে।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে শরীরের মধ্যে থাকা
অনেক অসুখ বিসুখ ভালো করে দেয়। ব্যায়াম করে উপকার পেতে হলে অবশ্যই সেটা সঠিক
নিয়মে করতে হবে তা না হলে এটা উপকারের বদলে ক্ষতি করতে পারে তাই এখন আমি
ব্যায়াম করলে কি উপকার হয় এবং কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো।
ব্যায়াম করার উপকারিতা গুলো হচ্ছে
শরীরকে শক্তিশালী করেঃ সঠিক নিয়মে যদি ব্যায়াম করা যায় তাহলে এই
ব্যায়াম এই ব্যায়াম শরীরের পিসিকে শক্ত করে এবং হাড় মজবুত
করে। যার কারণে অনেক ভারী ভারী কাজ করা সহজ হয়ে যায় এবং শরীর থাকে সুস্থ ও
সবল।
রক্ত চলাচল ভালো করেঃ নিয়মিত যদি ব্যায়াম করা হয় তাহলে শরীরের মধ্যে রক্ত
চলাচল বাড়ে। এই রক্তচলাচল বাড়ার কারণে হৃদপিন্ডের মধ্যেও রক্ত চলাচল
ভালোভাবে করতে পারে যার কারণে হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য থাকে ভালো এবং হার্ট
অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকলে সেটা দূর হয়ে যায়।
ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখতেঃ আপনাদের যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং
সেটা মাঝে মাঝে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। তাদের জন্য ব্যায়াম অনেক উপকারী।
কারণ নিয়মিত যদি ডায়াবেটিসের রোগী ব্যায়াম করে। তাহলে রক্তের মধ্যে শর্করার
মাত্রা কমে যায়, যার কারণে ডায়াবেটিস থাকে নিয়ন্ত্রণে।
রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেঃ যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত
ব্যায়াম করতে পারেন। কারণ ব্যায়াম যদি নিয়মিত করা হয়, তাহলে রক্ত
চলাচলের মাত্রাটা স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে। যে কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয় না। এমনকি
এর কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকলে সেটাও কমে যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ যারা অতিরিক্ত মোটা বা ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান।
তারা নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম যদি নিয়মিত করা হয়,
তাহলে এই ব্যায়াম শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়াতে সাহায্য করে। যার কারণে
শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না বরং অতিরিক্ত চর্বি কমতে শুরু করে
ফলে ওজন কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে ফুসফুসের
কার্যক্ষমতা অনেক গুণে বেড়ে যায়। যার কারণে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কোন সমস্যা হয়
না এবং হাঁপানোর সমস্যা থাকলে বা হওয়ার ঝুঁকি থাকলে সেটা দূর হয়ে যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ ব্যায়াম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে
যায়। ব্যায়াম করলে শরীরের মধ্যে রক্ত চলাচল ভালোভাবে করতে পারে যার কারণে
শরীর যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শরীরের রোগকে দূর করে। এমনকি
ভাইরাস জনিত কোন অসুখ শরীরে সহজে আক্রমণ করতে পারে না।
দুশ্চিন্তা কমাতেঃ যাদের মানসিক চাপ অনেক বেশি এবং সব সময়
দুশ্চিন্তায় ভোগেন, তাদের জন্য এই ব্যায়াম অনেক উপকারী। কারণ তারা যদি
নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারে। তাহলে এই ব্যায়াম শরীরের মধ্যে হ্যাপি
হরমোন নিঃসরণ করে। যেটা মানসিক চাপ দুশ্চিন্তা এবং বিষন্নতা দূর করে দেয়
এবং মনকে সতেজ ও চাঙ্গা রাখে।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিঃ ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা
বাড়ে। কারণ ব্যায়াম করলে শরীরের মধ্যে এবং মস্তিষ্কের মধ্যে অক্সিজেন
ভালোভাবে চলাচল করতে পারে। এর কারণে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ভালো হয়, যে
কোন কাজে মনোযোগ ভালো পাওয়া যায়, এবং স্মৃতিশক্তি অনেক ভালো হয়।
যাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কম তারা নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।
ঘুমের সমস্যা দূর করেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে যাদের ঘুমের সমস্যা আছে
তাদের ঘুমের সমস্যা দূর হয় এবং ঘুমের মান অনেক ভালো হয়। রাতের বেলায় ঘুম
গভীর হয় আর ঘুম ভালো হলে শরীর ও মন প্রফুল্ল থাকে।
শরীরের ক্লান্তি দূর করেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে এটা শরীরের
মধ্যে দ্রুত শক্তি নিয়ে আছে এবং শরীরের যত ক্লান্তি থাকে সব ক্লান্তি দূর
করতে সাহায্য করে। যার কারণে সারাদিন কাজ করার পরেও শরীরের ক্লান্তি অনুভব
হয় না অর্থাৎ প্রচুর পরিমানে পরিশ্রম করা যায়।
হাড়ের স্বাস্থ্য ও ত্বক ভালো রাখেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে হাড়
হয় মজবুত এবং হাড়ের ক্ষয় কমে যায়। এছাড়াও ব্যায়াম করলে
শরীর থেকে খারাপ টক্সিন বার হয়ে যায়। যার কারণে ত্বক
হয় পরিষ্কার ও উজ্জ্বল এবং ত্বকের স্বাস্থ্য থাকে ভালো।
বয়সের ছাপ দূর করেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর থাকে তরুণ্যের
মতন সতেজ ও টাটকা এবং দেখতেও আকর্ষণীয় লাগে। যদি ব্যায়াম সঠিক
নিয়মে করা যায় এবং এটা প্রতিদিন নিয়ম করে করা হয়, তাহলে এটা ত্বককে
উজ্জ্বল করে এবং ত্বকের উপর বয়সের ছাপ দূর করে।
হজম শক্তি বাড়েঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে এটা শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে
উন্নত করে যার কারণে পেটের মধ্যে গ্যাস পেট ফাঁপা এমনকি বদ হজমের মত সমস্যা থাকলে
সেটা ভালো হয়ে যায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেটা কমে যায়।
আত্মবিশ্বাস বাড়াতেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর
হয় এবং শরীর থাকে সুস্থ ও সতেজ। এমনকি শরীরের সুন্দরতা বাড়ে এবং
ব্যক্তিত্ব উন্নত হয় যার কারণে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
যৌন স্বাস্থ্যের জন্যঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে যৌন স্বাস্থ্য ভালো
থাকে, যার কারণে যৌন ইচ্ছা, যৌন আকাঙ্ক্ষা বাড়ে এবং যৌন কোন সমস্যা
থাকলে সেই সমস্যা ভালো হয়। ফলে যৌন মিলনের সময় অনেক দীর্ঘ হয় এবং যৌন
জীবন অনেক সুখের ও মধুর হয়ে ওঠে।
ব্যায়াম করার অপকারিতা গুলো হচ্ছে
অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয় যেমন শরীর অনেক দুর্বল
হয়ে যায় এবং ক্লান্তি অনুভব হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে পেসিতে টান
ধরে এমনকি ছিড়ে যেতেও পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক অনেক কমে যেতে
পারে।
সঠিক নিয়মে ব্যায়াম না করলে এটা শরীরের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। যেমন
হাড় ও জয়েন্টের ব্যথা এমনকি মেরুদন্ডে ব্যথা করতে পারে। এছাড়াও হার ও
জয়েন্ট ছুটে যেতে পারে বা ভেঙ্গে যেতে পারে।
অসুস্থ শরীরে যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম করা হয় তাহলে সেটা শরীরের
হৃদরোগের সমস্যা তৈরি করতে পারে এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের রোগে শরীরকে
আক্রান্ত করতে পারে। যার জন্য অসুস্থ অবস্থায় ব্যায়াম করা যাবে না।
অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে মানসিক চাপ কমার চাইতে বেড়ে যেতে পারে। যদি
প্রতিদিন অতিরিক্ত ব্যায়াম করা হয় এবং মাঝেমধ্যে ব্যায়াম না করা হয়। তাহলে
এটা মানসিক চিন্তা তৈরি করে। যার কারণে হতাশা তৈরি হয় তাই অতিরিক্ত
ব্যায়াম করা উচিত নয়।
অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে এবং ব্যায়াম করার সময় অতিরিক্ত পানি না খেলে বা শরীরে
পানির অভাব থাকলে। সেটা শরীরের মধ্যে ডিহাইড্রেশন তৈরি করতে পারে, যেটা
স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
রাতের বেলায় অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে এটা ঘুম উন্নত করার চাইতে ক্ষতি
করতে পারে। যার কারণে ঘুম দেরিতে আসতে পারে। তাই অতিরিক্ত ব্যায়াম না
করে স্বাভাবিক মাত্রায় ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে এটা থেকে ভালো উপকার পাওয়া
যাবে তা না হলে ক্ষতি করবে স্বাস্থ্যের।
যারা ওজন কমাতে চান তারা যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন এতে শরীরের অতিরিক্ত
ক্যালোরি খরচ হবে। যার কারণে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে। যার
কারণে ওজন কমার চাইতে উল্টো ওজন বেড়ে যেতে পারে তাই অতিরিক্ত ব্যায়াম না
করে পরিমাণ অনুযায়ী ব্যায়াম করা উচিত।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা দেখতে পেলাম যে ব্যায়াম যদি সঠিক নিয়মে করা যায়। তাহলে
এটা স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি করে। তবে অতিরিক্ত ব্যায়াম বা ভুল ভাবে ব্যায়াম
করলে। সেটা স্বাস্থ্যের উপকারের চাইতে উল্টো ক্ষতি করতে পারে। তাই উচিত হবে সঠিক
নিয়মে সঠিক পরিমাণে ব্যায়াম করা। তাহলে এটা থেকে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। আশা
করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি ব্যায়াম করার উপকারিতা সম্পর্কে এবং ব্যায়াম
করার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা
এখন আমি আপনাদেরকে সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে
জানাবো। যেগুলো জানার পর আপনি যদি সকালবেলায় ব্যায়াম করেন। তাহলে
এই উপকারিতা গুলো আপনি আপনার শরীরের মধ্যে দেখতে পাবেন। চলুন তাহলে সেই
উপকারিতাগুলো জেনে নেওয়া যাক। সকালবেলায় যদি ব্যায়াম করা হয়,
তাহলে সেটা শরীরকে সতেজ ও টাটকা রাখতে সাহায্য করে।
সকালবেলা ব্যায়াম করলে শরীরের মধ্যে রক্ত চলাচল বাড়ে, শরীরের
মধ্যে শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং সারাদিন কাজ করার মধ্যে আনন্দ ও
ভালো মনোযোগ পাওয়া যায়। যাদের অতিরিক্ত ওজন আছে তাদের জন্য সকালে
ব্যায়াম করা অনেক উপকারী। কারণ সকাল বেলায় যদি খালি পেটে হালকা ব্যায়াম
করা যায়, তাহলে এটা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
কারণ সকাল বেলায় ব্যায়াম করলে শরীরের মধ্যে থাকা অতিরিক্ত খারাপ
চর্বি কমতে শুরু করে। যার কারণে শরীরের ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে এবং
শরীর থাকে ফিট। এছাড়াও যাদের মানসিক চাপ বেশি তাদের মানসিক চাপ কমাতে
সকালবেলায় ব্যায়াম করা অনেক ভালো। সকালবেলায় ব্যায়াম করলে শরীরের
মধ্যে হ্যাপি হরমোন নিঃসরণ হয়। যার কারণে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা
দূর হয় এবং মন ও মেজাজ থাকে প্রফুল্ল।
যাদের হজম শক্তি দুর্বল এবং পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে। তারা যদি
সকালবেলায় নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারে, তাহলে তাদের হজম শক্তি বাড়ার
পাশাপাশি। এটা তাদের পেটের গ্যাস, বদহজম পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
থাকলে সেটা দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত সকালবেলায় ব্যায়াম
করলে এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সহজে শরীরে কোন
অসুখ আক্রমণ করতে পারে না।
এক কথায় বলা যায় যে সকাল বেলায় যদি নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস
গড়ে তোলা যায় তাহলে এটা জীবনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীর
ও মন সুস্থ থাকে। যার কারণে যেকোনো কাজে ভালোভাবে মনোযোগ দেওয়া
যায় এবং সে কাজে সাকসেস পাওয়া যায় আশা করছি সকালবেলা ব্যায়াম
করলে কি উপকারিতা পাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
নিয়মিত ব্যায়াম করার উপকারিতা
এখন আমি নিয়মিত ব্যায়াম করার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। চলুন তাহলে
নিয়মিত ব্যায়াম করলে কি উপকার পাওয়া যায় সেগুলো জেনে নিই। নিয়মিত যদি
ব্যায়াম করা হয় তাহলে এটা শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো এবং উপকারী।
যাদের শরীর দুর্বল এবং মানসিক চাপ অনেক বেশি। এছাড়াও যাদের শরীরের অন্যান্য
অনেক সমস্যা আছে।
কম বয়সেই শরীর বয়স্কদের মতো হয়ে গেছে অথবা শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা আছে।
তাদের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা অনেক উপকারী। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি শরীরের মধ্যে যত প্রকারের সমস্যা আছে সেই
সমস্যাগুলো খুব দ্রুতই ভালো হয়ে যায়।এমনকি এটা যৌন জীবনকে অনেক সুখের ও মধুর
করে তোলে।
যাদের যৌন জীবন অসুখের তাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। নিয়মিত ব্যায়াম করলে
শরীর অকালে বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা দূর হয় এবং শরীরের বয়সের ছাপ কমে।
এটা শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গকে সচল করে তোলে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি
করে। যার কারণে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে এবং অতিরিক্ত কাজ করলে শরীরে
ক্লান্তি অনুভব হয় না।
যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা, হৃদরোগের সমস্যা বা স্টক এর মত ঝুঁকি আছে। তারা
নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন, নিয়মিত ব্যায়াম করলে এইসব ঝুঁকি অনেকটাই কমে
যায় বা ভালো হয়ে যায়। তাই সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করার
গুরুত্ব অপরিসীম। আশা করছি নিয়মিত ব্যায়াম করলে কি উপকার পাওয়া যায় সে
সম্পর্কে আপনি ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম
সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম ব্যায়াম সম্পর্কে আপনারা অনেকে আছেন যারা
জানতে চেয়েছেন তাই এখন আমি সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম সম্পর্কে আপনাদেরকে
বলবো। চলুন কোন ব্যায়ামটি সবচেয়ে বেশি উপকারী সে সম্পর্কে জেনে
নেওয়া যাক। সবচেয়ে উপকারী ব্যায়ামগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্যায়াম হচ্ছে
সকাল বেলায় হাঁটা। এছাড়াও আরো কিছু উপকারী ব্যায়াম আছে সেগুলো হচ্ছেঃ
দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, যোগ ব্যায়াম করা এবং সাইকেলিং করা।
আপনি যদি সকালবেলায় নিয়মিত হাঁটতে পারেন। তাহলে এটা শরীরের জন্য সবথেকে
নিরাপদ ও উপকারী একটি ব্যায়াম। কারণ সকাল বেলায় হাঁটলে সেটা শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি শরীরকে সচল রাখতেও সাহায্য করে। এটা
শরীরের মধ্যে রক্ত চলাচল উন্নত করে, যার কারণে হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো
থাকে এবং ডায়াবেটিস থাকে নিয়ন্ত্রণে।
সকাল বেলায় হাঁটলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায় সেগুলো হচ্ছে, এটা রক্তচাপকে
নিয়ন্ত্রণে রাখে মানসিক চাপ কমায় এবং মনকে সতেজ ও ফুরফুরে রাখে, হাড়কে
শক্ত করে এবং হাড়ের জয়েন্ট গুলোকে ভালো রাখে। ঘুমের সমস্যা থাকলে ঘুমের
সমস্যা দূর হয় এবং ঘুম অনেক গভীর হয়। হজম শক্তি বাড়ে যার কারণে পেটের
সমস্যা দূর হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেটা কমে যায়, মস্তিষ্কের
কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি হয় ইত্যাদি।
যাদের সকালবেলায় হাঁটার অভ্যাস আছে তাদের দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় যে,
তারা খুব সহজেই অসুস্থ হয় না এবং তাদের শরীর স্বাস্থ্য থাকে ভালো। তাই বলা
যায় যে সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম হচ্ছে সকালবেলায় হাটা। এছাড়াও আপনি
নদীতে, পুকুরে অথবা সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে পারেন এটাও অনেক উপকারী একটি
ব্যায়াম। সাঁতার যদি আপনি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন কাটতে পারেন। তাহলে
এটা আপনার শরীরের রক্ত চলাচলকে বাড়াতে সাহায্য করে।
যার কারণে শরীরের মধ্যে শক্তি উৎপন্ন হয়। যারা সাতার নিয়মিত কাটে তাদের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। যার কারণে তারা সহজে অসুস্থ হয় না
এবং তাদের স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকে। তাই বলা যায় যে সকালবেলায় হাটা,
সাঁতার কাটা সহ যোগ ব্যায়াম করা এবং সাইকেলিং করা সবচেয়ে উপকারী
ব্যায়াম। এই ব্যায়ামগুলো যদি আপনি নিয়মিত করতে পারেন, তাহলে শরীর ও
স্বার্থে আপনি ভালো উপকার পাবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে উপরে ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে পড়ে আসতে পারেন।
নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা
নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা কি চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া
যাক। নমনীয়তা বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা অনেক এই ব্যায়াম যদি
নিয়মিত করা হয়, তাহলে এটা শরীরকে নমনীয় করে তোলে। যার
কারণে শরীরের পেশি শক্ত হয় না বরং শরীরের পেশি নরম হয় এবং
প্রসারিত হয়। যার কারণে শরীরকে সহজে নড়াচড়া করানো যায়।
এই ব্যায়াম যদি করা হয়, তাহলে এটা বিভিন্ন ধরনের আঘাতের ঝুঁকি কমাতে
সাহায্য করে। যেমন ধরেন হঠাৎ করে দৌড়ানো, লাফানো বা ভারী কিছু তুলতে গেলে
পেসির মধ্যে টান ধরা বা ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এটা ঘাড়ের
ব্যথা, কোমর বা জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং
শরীরকে হালকা রাখে।
ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালোভাবে হয়। যার কারণে শরীরের মধ্যে
শক্তি পাওয়া যায় এবং শরীর থাকে ফুরফুরে ও টাটকা। যাদের মানসিক চাপ
অনেক এবং স্ট্রেস থাকে। তারা এই ব্যায়াম করলে তাদের মানসিক চাপ দূর হয়
এবং অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও এই
ব্যায়াম বিভিন্ন ধরনের কাজ বা খেলাধুলা করার জন্য শরীরের পারফরম্যান্স
বাড়িয়ে থাকে।
যার কারণে সহজেই খেলাধুলা বা বিভিন্ন ধরনের কাজে ভালো মনোযোগ পাওয়া
যায় এবং ভালো পারফরম্যান্স করা যায়। এই ব্যায়াম
করলে শরীরে বয়সের ছাপ দূর করে অর্থাৎ বয়স জনিত শরীরের মধ্যে
হওয়া বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। আশা করছি নমনীয়তা
বৃদ্ধির ব্যায়ামের উপকারিতা কি সেটা আপনি জানতে পেরেছেন।
শ্বসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব
এখন আমি আপনাদেরকে শ্বসনতন্ত্রের উপর ব্যায়ামের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত
জানাবো। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক। ব্যায়াম করলে শ্বসনতন্ত্রকে
অনেক শক্তিশালী এবং তার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। যদি নিয়মিত
ব্যায়াম করা হয়, তাহলে এটা ফুসফুসের কার্যক্ষমতাকে বাড়ানোর পাশাপাশি এটা
ভালোভাবে অক্সিজেন গ্রহণ করতেও সাহায্য করে।
যার কারণে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে অনেক সহজ হয় যাদের হাঁপানি আছে। তারা নিয়মিত
ব্যায়াম করতে পারেন কারণ নিয়মিত ব্যায়াম করলে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের মতো
সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের মধ্যে রক্ত সঞ্চালন
বৃদ্ধি পায়। যার কারণে শরীরের প্রতিটি অংশে ভালোভাবে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে
এবং শরীরকে সতেজ ও টাটকা রাখে।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে এটা শরীর থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং ক্ষতিকর গ্যাস
গুলোকে শরীর থেকে তাড়াতাড়ি বার করে দেয়। ফলে শরীর এবং ফুসফুস পরিষ্কার
থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে এই ব্যায়ামের প্রভাবে ফুসফুসের আশেপাশের শ্বাস
প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণকারী অঙ্গগুলো অনেক ভালোভাবে কাজ করে এবং অনেক শক্তিশালী
হয়ে ওঠে। যার কারণে নিঃশ্বাস নিতে এবং নিঃশ্বাস ছাড়তে কোন সমস্যা হয় না।
হাটা বা দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইকেলিং করার মত যেসব ব্যায়াম আছে। এই
ব্যায়ামগুলো যদি নিয়মিত করা হয় তাহলে এটা শ্বসনতন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো
রাখতে এবং হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এই ব্যায়াম
এর প্রভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং ফুসফুসের বিভিন্ন ধরনের
সংক্রমণ হাওয়া থেকে রক্ষা করে।
কখন ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময়
আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে কখন ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময়। তাই এখন
আমি আপনাদেরকে ব্যায়াম করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় সম্পর্কে জানাবো যে সময়
গুলোতে আপনি ব্যায়াম করে ভালো উপকার পাবেন। চলুন তাহলে উপযুক্ত সময় কখন
ব্যায়াম করার সেই সময়টা জেনে নিই।
ব্যায়াম করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত এ
সময় ব্যায়াম করা হলে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে যার কারণে সারাদিনে শরীরের
ক্যালরি অনেক কমে যেটা শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। সকালবেলায়
ব্যায়াম করলে শরীরের মধ্যে ভালো এনার্জি পাওয়া যায় এবং মন ও শরীর চাঙ্গা
থাকে যার কারণে ভালো এনার্জি ও মনোযোগ পাওয়া যায়। সকালবেলায় ব্যায়াম
করা অনেক সুবিধা কারণ এই সময় কোন কাজ কাম বা ব্যস্ততা থাকে না।
এছাড়াও ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময় হচ্ছে দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল পাঁচটার
মধ্যে এ সময় শরীরের টেম্পারেচার ও মাংসপেশির কার্যক্ষমতা অনেক বেশি থাকে।
এ সময় ব্যায়াম করলে শরীরের মধ্যে ইস্টামিনা কম থাকে এবং পারফরম্যান্স
অনেক উন্নত করা যায়। তবে সমস্যা হচ্ছে যে এ সময় অনেকের অফিস বা বিভিন্ন
ধরনের কাজকামের জন্য ব্যায়াম করা সম্ভব হয় না।
ব্যায়াম করার আরো একটি উপযুক্ত সময় হচ্ছে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯ টা। এ
সময় যদি ব্যায়াম করা হয়, তাহলে এটা শরীরের সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে
এবং শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে। এছাড়াও এ সময় জিম বা ব্যায়াম করার জায়গায়
মানুষের ভীড় থাকে যার কারণে ব্যায়ামে ভালো মোটিভেশন পাওয়া যায়। যেটা
শরীরের স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তবে এর থেকে
দেরি করে যদি ব্যায়াম করা হয়, তাহলে এটা রাতে ঘুমের সমস্যা তৈরি করতে
পারে।
সপ্তাহে কয় দিন ব্যায়াম করা উচিত
সপ্তাহে কয়দিন ব্যায়াম করা উচিত এটা মূলত নির্ভর করে আপনার ওপর। আপনি
আপনার কোন সমস্যার জন্য ব্যায়াম করবেন সে অনুযায়ী ব্যায়াম কয়দিন করতে
হবে সেটা নির্ভর করে। আপনি যদি নতুন ব্যায়াম শুরু করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই
সেটা সপ্তাহের তিনদিন করা উচিত এতে করে আস্তে আস্তে শরীর এই ব্যায়ামে
অভ্যস্ত হয়। যার কারণে কোন ক্ষতিও হয় না বরং উপকার পাওয়া যায়।
আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন কমানো বা শরীরকে ফিট রাখার জন্য ব্যায়াম করেন।
তাহলে এটা সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন আপনি করতে পারেন। এর মধ্যে দুই থেকে
তিন দিন দৌড়াদৌড়ি, সাইকেলিং এবং জাম্পিং ব্যায়াম করতে পারেন এবং বাকি
দুইদিন জিম এক্সারসাইজ করতে পারেন। আর আপনি যদি বডি বিল্ডিং করতে চান তাহলে
এটা আপনার সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় দিন করা উচিত।
এছাড়াও আপনি যদি আপনার শরীরকে সুস্থ ও সচল রাখতে চান, তাহলে মাঝারি যে
এক্সারসাইজ গুলা আছে যেমন হাটা, সাঁতার কাটা, সাইকেলিং করা ইত্যাদি সপ্তাহে
তিন থেকে চার দিন করা উচিত। সহজ ভাবে বলতে গেলে আপনি আপনার শরীরের কোন
সমস্যা ভালো করার জন্য ব্যায়াম করবেন সে অনুযায়ী আপনাকে সপ্তাহে জিম করা
উচিত।
প্রতিদিন ব্যায়াম করলে কি হয়
আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন যে প্রতিদিন ব্যায়াম করলে কি হয়। প্রতিদিন
ব্যায়াম করলে মূলত এটা শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো এবং উপকার বয়ে
আনে। তবে প্রতিদিন যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম করা হয়, তাহলে এটা আবার
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই আপনাকে প্রতিদিন ব্যায়াম করার
ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে। যে এটা আপনার শরীরে কতটুকু ইফেক্ট ফেলছে।
প্রতিদিন আপনি যদি ব্যায়াম করেন।
তাহলে এটা আপনার শরীরকে সক্রিয় ও সতেজ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আপনার
ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হার্ট ও
ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ঘুম ভালো হয়। তবে প্রতিদিন যদি ব্যায়াম
অতিরিক্ত করা হয়, তাহলে এটা স্বাস্থ্যের বা শরীরের ক্ষতি করে। কারণ
ব্যায়াম করার পর শরীরকে বিশ্রাম দিতে হয়। ব্যায়াম করার পর যদি শরীর
ভালোভাবে বিশ্রাম না পায়, তাহলে এটা শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর
প্রভাব ফেলতে পারে।
যেমন শরীর অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এবং শরীরে দুর্বলতা দেখা দেওয়া,
মাংসপেশিতে টান ধরা, ঘুম নষ্ট হওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং
আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রতিদিন
ব্যায়াম না করে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন হালকা ব্যায়াম করা উচিত। এতে
শরীর বিশ্রাম পাই এবং স্বাস্থ্য ও মন ভালো থাকে। আশা করছি প্রতিদিন
ব্যায়াম করলে কি হয় এই সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন।
FAQ/ব্যায়াম সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
ব্যায়াম করা নিয়ে কিছু আলোচিত প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে
জানাবো। তাই দেরি না করে চলুন সেই আলোচিত প্রশ্নের উত্তরগুলো জেনে নেওয়া
যাক।
ব্যায়ামের পর কি খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ ব্যায়াম করার পর শরীর ক্লান্ত থাকে এ সময় শরীরকে সতেজ টাটকা করার
জন্য প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন দুধ ডিম দই মাছ বা মুরগির মাংস খাওয়া উচিত
এছাড়াও কলা, আপেল, বেরি ফল, নারকেল পানি, বাদাম, আখরোট খাওয়া উচিত। এগুলো
খেলে শরীরের যে ক্লান্তি বা এনার্জির প্রয়োজন সেটা খুব দ্রুতই রিকভার হয়ে
যায়।
ব্যায়াম করলে কেন শরীর ব্যথা করে?
উত্তরঃ হঠাৎ করে যদি কোন নতুন বা ভারী ব্যায়াম করা হয়। তাহলে এটা শরীরের
মাংসপেশিতে ছোট ছোট ফাটল তৈরি করে। যার কারণে ব্যায়াম করার ২৪ বা ৪৮ ঘন্টা
পর শরীর ব্যথা শুরু হয়। তবে নিয়মিত ব্যায়াম করলে এটা অভ্যাসে পরিণত হয়
এবং আস্তে আস্তে এই ব্যথা দূর হয়ে যায়।
স্ট্রেচিং ব্যায়াম কি?
উত্তরঃ স্ট্রেচিং ব্যায়াম হচ্ছে এমন একটি ব্যায়াম যে ব্যায়াম শরীরকে
নমনীয় করতে এবং শরীরের মাংসপেশিকে শান্ত করতে সাহায্য করে। ভারী ব্যায়াম
করার আগে মূলত এই স্ট্রেচিং ব্যায়াম করা হয় যেন শরীরের পিসিতে টান না ধরে
এবং সহজেই শরীর নড়াচড়া করতে পারে।
ব্যায়াম না করলে কি হয়?
উত্তরঃ ব্যায়াম না করলে শরীরের অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে
শরীরের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায়, শরীর দুর্বল হয়ে যায়, স্ট্রেস,
দুশ্চিন্তা ,হতাশা এবং ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। শরীর অচল হয়ে পড়ে এবং
কাজে মনোযোগ পাওয়া যায় না, রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত থাকে যার কারণে হার্টের
সমস্যা, হাড়ের সমস্যা, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা
দেখা দিতে পারে।
রাতে ব্যায়াম করা কি ভালো?
উত্তরঃ রাতে ব্যায়াম করা ভালো তবে সেটা সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯ টা
পর্যন্ত। এর থেকে বেশি রাতে বা গভীর রাতে যদি ব্যায়াম করা হয়, তাহলে সেটা
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে রাতের বেলায় ভারী ব্যায়াম করা মোটেও
উচিত নয়। গভীর রাতে যদি ব্যায়াম করা হয়, তাহলে এটা ঘুমের সমস্যা তৈরি
করে এবং শরীরের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ব্যায়াম করার সময় যেসব ভুল করা জাবে না
এখন আমি আপনাদেরকে জানাবো যে ব্যায়াম করার সময় যে সব ভুল করা যাবে না
এই সম্পর্কে। চলুন ব্যায়াম করার সময় কি ভুল করা যাবে না সেই ভুলগুলো
জেনে নেওয়া যাক। ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই ওয়ার্ম আপ করতে হবে।
ব্যায়াম করার আগে যদি ওয়ার্ম আপ না করা হয়। তাহলে শরীর হঠাৎ করে কোন
ভারী ব্যায়াম সহ্য করতে পারে না, যার ফলে পেশিতে টান ধরতে পারে।
ব্যায়াম করার সময় ভুল পজিশনে বা ভুল নিয়মে ব্যায়াম করা যাবে না।
ভুল পজিশন বা ভুল নিয়মে ব্যায়াম করলে এটা শরীরের মাংসপেশিতে এবং
বিভিন্ন জয়েন্টের ওপর চাপ ফেলতে পারে। যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শরীর
ভালো ভাবে গরম না হলে অতিরিক্ত ভারী ব্যায়াম না করা। ব্যায়াম করার সময়
নিঃশ্বাস থামা যাবেনা। এতে করে হার্টের ওপর চাপ বাড়বে। ব্যায়াম করার পর
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। ব্যায়াম করার পর পর্যাপ্ত পরিমাণে যদি
পানি না খাওয়া হয়, তাহলে এটা শরীরের মধ্যে ডিহাইড্রেশন তৈরি করতে পারে।
যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
ব্যায়াম করার পর শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম দিতে হবে। ব্যায়াম
করার পর যদি শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম না দেওয়া হয়। তাহলে শরীর
দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি
হতে পারে। ব্যায়াম করার পর স্ট্রেচ করতে হবে। এতে পেশি নরম হবে এবং
ব্যথা কম হবে। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি ব্যায়াম করার সময় যে সব
ভুল করা যাবে না সেই সব ভুল সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্যঃ ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমি আমার আর্টিকেলের মধ্যে ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এর পাশাপাশি আমি আমার এই আর্টিকেলের
মধ্যে সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা নিয়মিত ব্যায়াম করার উপকারিতা
সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম কোনটি কখন ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময় এবং
প্রতিদিন ব্যায়াম করলে কি হয় সে সম্পর্কেও আলোচনা করেছি। আশা
করছি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি ব্যায়াম সম্পর্কিত সকল তথ্য
জানতে পেরেছেন।
আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই
এই আর্টিকেলটি আপনি আপনার পরিচিত ব্যক্তিদের কাছে শেয়ার করবেন এবং
তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন। এছাড়াও আমার এই আর্টিকেলটি নিয়ে
আপনার যদি কোন প্রশ্ন বা মতামত থেকে থাকে অথবা আপনি যদি নতুন কোন
বিষয়ে নতুন কোন তথ্য জানতে চান? তাহলে আমাদের নিচে থাকা কমেন্ট
বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা আমাদের যোগাযোগ পেজে আমাদের সাথে
যোগাযোগ করবেন।
অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url