চন্দনের অপকারিতা - সৌন্দর্যের আড়ালে লুকানো বিপদ
চন্দনের অপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানতে চান? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধু মাত্র
আপনার জন্য। কারন আজ আমি আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে চন্দনের অপকারিতা সহ চন্দন
পাউডার এর উপকারিতা ও চন্দন মুখে লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আপনি যদি সাদা চন্দন মুখে দিলে কি হয় জানতে চান। তাহলে অবশ্যই আমার এই পোস্টটি
আপনি মনোযোগ সহকারে ভালোভাবে পড়বেন। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন
চন্দন ভালো সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
পেজ সুচিপত্রঃ চন্দনের অপকারিতা
- চন্দনের অপকারিতা গুলো কি
- চন্দন পাউডার এর উপকারিতা
- চন্দন পাউডার এর দাম কত
- পন্ডস চন্দন পাউডার এর উপকারিতা
- চন্দন মুখে লাগানোর নিয়ম
- চন্দন মুখে দিলে কি হয়
- কোন চন্দন ভালো
- আসল চন্দন গুড়া চেনার উপায়
- সাদা চন্দন মুখে দিলে কি হয়
- লাল চন্দন মুখে মাখলে কি হয়
- লেখকের মন্তব্যঃ চন্দনের অপকারিতা
চন্দনের অপকারিতা গুলো কি
চন্দনের অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই আছেন যারা জানেন না। আসলে চন্দন মুখের
জন্য একটি উপকারী উপাদান। যেটা ব্যবহার করা হয় ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার
জন্য। এটার এত উপকারিতা থাকার পরেও এটি কিছু মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে
পারে। সাধারণভাবে এর অপকারিতা গুলো খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না।
আরো পড়ুনঃ কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয় জানুন এখুনি
তারপরেও কিছু ক্ষেত্রে এর অপকারিতা গুলো পাওয়া যায়। যেটা আপনাদের জানা
অনেক প্রয়োজনীয়।কারণ আপনারা যদি এর অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারেন।
তাহলে আপনারা এটি সতর্ক হয়ে ব্যবহার করতে পারবেন এবং আপনার কোন ক্ষতি হবে
না। আসুন তাহলে জেনে নিই অপকারিতা গুলো সম্পর্কে।
-
চন্দন কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ত্বকে এলার্জি ও চর্ম রোগ সৃষ্টি করতে
পারে। কারণ অনেক সময় চন্দন আমাদের ত্বকের সাথে মানিয়ে নিতে পারেনা এবং
এটা উপকারের চেয়ে তখন উল্টো ক্ষতি করে বসে থাকে। এটা মূলত তাদের বেশি হয়
যাদের ত্বক একটু সংবেদনশীল। যাদের ত্বক সংবেদনশীল তারা যদি এটা ব্যবহার
করে। তাহলে ত্বকে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ত্বকের চুলকানি শুরু
হয়, ত্বকে লাল দাগ হতে পারে, ত্বকে জ্বালাপোড়া শুরু করে, মাঝে
মাঝে ত্বকে র্যাস ও ফুসকুড়ির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
-
চন্দন কিছু মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে। চন্দনের
গন্ধ অথবা চন্দনের তেল ব্যবহার করার কারণে অনেকের নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়ে
থাকে। এটার ফলে নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে, ঘন ঘন কাশি হতে
পারে, এবং বুকে চাপ ধরা সহ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে। এই
সমস্যা গুলো মূলত তাদের হয় যাদের এজমা বা হাঁপানি আছে, এবং ধুলাবালি ও গন্ধে
এলার্জি হয়। কারণ তাদের জন্য চন্দনের গন্ধ এক প্রকার ট্রিগার এর মত কাজ
করে। যার ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং কাশি হতে শুরু করে।
- কিডনির ক্ষতি করতে পারে। যদি সাদা চন্দন অনেকদিন ধরে গ্রহণ করা হয়। তাহলে সেটা কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। কারণ চন্দনের মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান আছে, যেগুলো অনেক সময় ধরে শরীরে জমে গিয়ে কিডনির কোষ গুলোর ক্ষতি করে থাকে। যার ফলে এটা কিডনির কার্যক্ষমতা আস্তে আস্তে কমিয়ে দেয়, মূত্রের সাথে রক্ত দেখা দিতে পারে এবং শরীরের মধ্যে বিষক্রিয়া তৈরি হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে এই চন্দন যদি দীর্ঘমেয়াদে খাওয়ার কারণে কিডনির মধ্যে ইনফ্লামেশন এবং বিষাক্ততা পাওয়া গেছে। যাদের ডায়াবেটিস ও হাই ব্লাড প্রেসার এবং আগে থেকেই যাদের কিডনির সমস্যা আছে তারা এটি থেকে দূরে থাকবেন।
-
গর্ভবতী মহিলা ও স্তনদানকারী মায়ের জন্য এটা ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভাবস্থায়
যদি কোন মেয়ে এই চন্দন ব্যবহার করে থাকে। তাহলে সেটা তার পেটে থাকা
সন্তানের জন্য ক্ষতিকর। যেটা বাচ্চার বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে
পারে। এছাড়াও স্তনদানকারী মায়েরা যদি চন্দন খায়। সেটা শিশুর
জন্য অস্বস্তি বা এলার্জির সমস্যা করতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায়
এবং স্তন দানকারী মায়েরা চন্দন ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকবেন।
-
চন্দনের মধ্যে থাকা কিছু রাসায়নিক উপাদান যেগুলো আমাদের শরীরের কোষের ক্ষতি
করতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, শরীরের কোষের জিনের গঠন
নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেটা কোষের স্বাভাবিক কাজকে বাধা দেয়। যার কারণে
স্বাস্থ্যগত অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এই সমস্যাটা খুব
কমই হয় বা হয় না। কারণ এই গবেষণাগুলো বেশির ভাগি পরীক্ষাগারে করা
হয়েছে অর্থাৎ মানুষের উপর এটা সম্পূর্ণভাবে প্রমাণিত হয় নি। অবশ্যই এটা
ব্যবহার অতিরিক্ত এবং দীর্ঘমেয়াদে করা যাবে না।
উপরে আমি চন্দনের যত গুলো অপকারিতা আছে সেগুলো আলোচনা করেছি। কাদের এটি
ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে সেটা উল্লেখ করেছি। তার পরেও যদি কেউ এটি
ব্যবহার করতে চান। সেক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা আপনার
জন্য নিরাপদ হবে। তাই অবশ্যই এটি ব্যবহারের পূর্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ
নিবেন। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি চন্দনের অপকারিতা সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন।
চন্দন পাউডার এর উপকারিতা
চন্দন পাউডার এর উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই কমবেশি জানেন। তবে আমি চন্দন
পাউডারের এমন কিছু উপকারিতা সম্পর্কে এখন আপনাদের জানাবো। যেগুলো আপনারা অনেকেই
জানেন না। তাই আপনি যদি চন্দন পাউডারের গোপন উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান।
তাহলে অবশ্যই আমার এই পোস্টটি ভালোভাবে পড়বেন।
চন্দন পাউডার অনেক উপকারী একটি উপাদান বিশেষ করে ত্বকের জন্য। এই চন্দন
পাউডারটি অনেকেই আছে যারা রূপচর্চার জন্য ব্যবহার করে থাকে। এই
চন্দন পাউডারটি আপনি যদি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে
এটি থেকে অনেক উপকার পাবেন, যেমনঃ
-
চন্দন পাউডার ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। চন্দন পাউডারের মধ্যে প্রাকৃতিক
এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যেটা আমাদের ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে এবং
ত্বকের ময়লা ও বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয়। যার ফলে আমাদের ত্বক হয়ে
ওঠে আরো সুন্দর, উজ্জ্বল ঝকঝকে ও মসৃণ।
-
চন্দন পাউডার ত্বকের ব্রণ ও ফুসকুড়ি ভালো করে থাকে। যাদের মুখে প্রচুর
পরিমাণে ব্রণের বা ফুসকুড়ি সমস্যা রয়েছে তারা চন্দন পাউডার ব্যবহার করতে
পারেন। কারণ চন্দনের মধ্যে এন্টিব্যাকটেরিয়াল নামের একটি
উপাদান থাকে। যেটা ব্রণের জীবাণু ধ্বংস
করে। যার ফলে এটা আমাদের ত্বকের লাল ভাব ও ফোলা ভাব কমিয়ে দেয়
এবং নতুন ভাবে ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি দূর করে।
-
চন্দন পাউডার ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করে। চন্দন হচ্ছে
একটি প্রাকৃতিক কুলিং উপাদান। যদি ত্বক রোদে পুড়ে যায় বা ত্বকে রোদে
পুড়া দাগ হয় এবং ত্বক জ্বালাপোড়া করে। এই সময় যদি চন্দন পাউডার ত্বকে
ব্যবহার করা হয়। তাহলে ত্বকে রোদে পোড়া দাগ এবং ত্বক জ্বালাপোড়া করা
কমে যায়। যার ফলে ত্বক আবার আস্তে আস্তে আগের স্বাভাবিক রং ফিরে পায়।
-
চন্দন পাউডার ত্বকের দাগ ও ত্বকের কালচে ছোপ দূর করে থাকে। চন্দন
পাউডার যদি নিয়মিত ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটা আমাদের ত্বকের পিগমেন্টেশনের
সমস্যা দূর করে। যার কারনে ত্বকে থাকা পুরনো দাগ বা ব্রণের চিহ্ন
অনেকটাই কমে যায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে।
-
চন্দন ত্বকে বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করে। চন্দনের মধ্যে ফ্রী
রেডিক্যাল প্রতিরোধী কিছু গুন আছে। যেগুলা আমাদের ত্বকের বলিরেখা এবং বয়জনিত
দাগ গুলোকে দূর করতে সাহায্য করে।এটা যদি নিয়মিত ব্যবহার করা হয়। তাহলে
আমাদের ত্বক টানটান হবে এবং মুখে বয়সের ছাপ দূর হবে।
-
মুখের তেলকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এই চন্দন। মুখ অতিরিক্ত তেল
তেল হওয়ার কারণে মুখে ব্রণ বার হয় এবং মুখ কালো হয়ে যায়। চন্দন
পাউডার যদি নিয়মিত ব্যবহার করা হয়। তাহলে মুখের তেল অনেকটাই কমে যায় এবং
মুখে ফ্রেশ একটা ভাব নিয়ে আসে।
-
চন্দন ত্বকের ক্ষত ভালো করতে সাহায্য করে। কারণ চন্দন হচ্ছে একটি
প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক এবং ঠান্ডা উপাদান যেটা ত্বকের কাঁটা সহ তক পুড়ে
যাওয়া বা জ্বালাপোড়া করা মত সমস্যাগুলোকে দ্রুত ভালো করে।
-
চন্দনের সুন্দর একটা গন্ধ মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকে একটা ঠান্ডা
অনুভূতি দেয়। গরমের দিনে যদি এই চন্দন ব্যবহার করা হয় তাহলে এটা মনকে
ভালো রাখে এবং ক্লান্তি দূর করে।
-
এলার্জির কমানোর জন্য চন্দন অনেক ভালো কাজ করে। যাদের অ্যালার্জির
সমস্যা আছে যেমন ত্বক জ্বালাপোড়া করা এবং ত্বকের র্যাস দূর
করতে চন্দন অনেক উপকারী।
আশা করছি যে আপনি উপরের আলোচনা থেকে চন্দন পাউডার এর উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
চন্দন পাউডার এর দাম কত
চন্দন পাউডার এর দাম কত এ বিষয়ে এখন আমি আপনাদেরকে জানাবো। আসলে চন্দন পাউডারের
দাম প্যাকেজিং ও ব্র্যান্ড অনুযায়ী বিভিন্ন রকম হতে পারে এবং এর দাম জায়গা
অনুযায়ী কম বা বেশি হতে পারে। তারপরেও আমি বর্তমান বাজারে চন্দন পাউডারের যে দাম
চলছে সেটা আপনাদের কে এখন বলবো।
আপনি যদি লাল চন্দনের পাউডার নিতে চান। তাহলে যেটা ১০০ গ্রামের প্যাকেট সেটার দাম
পড়বে ৫৭০ থেকে ৬০০ টাকার মতো। আর আপনি যদি পঞ্চাশ গ্রামের প্যাকেট নিতে যান সে
ক্ষেত্রে দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা মতো। আর আপনি যদি সাদা চন্দন বা সাধারণ যে
চন্দন বাজারে পাওয়া যায় সেটা নিতে চান।
সেক্ষেত্রে দাম পড়বে ১০০ গ্রামের দাম ১৮০ টাকার মতো এবং ৫০ গ্রাম নিতে চাইলে ৮০
থেকে ১০০ টাকা। আপনার যদি বাজেট কম হয়, তাহলে আপনি ১০০ গ্রামের যেটা প্যাকেট
পাওয়া যায়। সেটা নিতে পারেন। এটার দাম ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা মতন।
আপনি খাঁটি অর্গানিক পণ্য যদি নিতে চান। তাহলে আপনি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার
মধ্যে একটু খোঁজ করলেই পেয়ে যাবেন। এটা আপনি অনলাইন প্লাটফর্ম অথবা কোন
ফার্মেসিতে অথবা কসমেটিকস দোকান থেকে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। আশা করছি আপনি
চন্দন পাউডারের দাম সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
পন্ডস চন্দন পাউডার এর উপকারিতা
পন্ডস চন্দন পাউডার এর উপকারিতা গুলো এখন আমি আপনাদেরকে বলবো। তাই আর দেরি না করে
চলুন জেনে নেওয়া যাক। পন্ডস চন্দন এটা মূলত ত্বকের জন্য অনেক উপকারী একটা
পাউডার। আপনি যদি পন্ডস চন্দন পাউডারটি নিয়মিত ব্যবহার করেন। তাহলে এটি সূর্যের
অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করে। এটা ব্যবহার করার ফলে ত্বকের
উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বকে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখে।
এটা নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে এটা ত্বকের অতিরিক্ত ঘাম কে শুষে নেয় এবং ত্বককে
তাজা ও একটা সতেজ অনুভূতি দেয়। এই পাউডারটি যদি আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে
এটা আপনার ত্বককে ধুলোবালি ও ময়লা থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে এবং ত্বককে পরিষ্কার
রাখতে সাহায্য করে। আশা করছি যে উপরের আলোচনা থেকে আপনি পন্ডস চন্দন পাউডার এর
উপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
চন্দন মুখে লাগানোর নিয়ম
উপরে আমরা আলোচনা করলাম পন্ডস চন্দন পাউডার এর উপকারিতা নিয়ে। এখন আমরা আলোচনা
করবো চন্দন মুখে লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে। আপনারা অনেকেই আছেন যারা চন্দন কিভাবে
সঠিক নিয়মে মুখে লাগাতে হয় তার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। তাই আপনি যদি চন্দন
মুখে লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চান। তাহলে অবশ্যই আমার এই পোস্টটি
মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
চলুন তাহলে কিভাবে আপনি চন্দন মুখে লাগাবেন জেনে নিই। প্রথমে আপনি
আপনার মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন। আপনি যদি ফেসওয়াশ দিয়ে
মুখধন তাহলে এটা আরেকটু ভালো হবে।তারপর চন্দন পাউডারটি তৈরি করতে
হবে। অবশ্যই চন্দন পাউডারটি ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসপ্যাক বানাতে হবে।
আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়। তাহলে আপনি এক চামচ চন্দন পাউডার এর সাথে দুই
চামচ গোলাপজল, সাথে এক ফোঁটা লেবুর রস দিতে পারেন। এই উপাদানগুলোকে ভালোভাবে
মিশিয়ে পেস্ট বানাতে হবে। আর আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত না হয়ে শুষ্ক হয়।
তাহলে আপনি এক চামচ চন্দন পাউডারের সাথে, এক চামচ দুধ, এক থেকে দুই চামচ মধু
মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে ক্রিমের মত করে নিতে হবে।
তারপর ফেসপ্যাক টি বানানো হয়ে গেলে। সেটা আপনার আঙ্গুল অথবা ব্রাশ দিয়ে মুখে
ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। অবশ্যই চোখ ও ঠোঁটের পাশে এটা দিবেন
না। এরপর আপনার মুখে লাগানো ফেসপ্যাকটি ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখতে
হবে। সম্পূর্ণ যখন ফেসপ্যাক শুকিয়ে যাবে। তখন মুখে হাত দিয়ে না ঘষে ঠান্ডা
পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। মুখ ধুয়ে ফেলার পর এলোভেরা জেল মুখে
ব্যবহার করতে হবে। যাতে করে ত্বক হাইড্রেট থাকে।
চন্দন মুখে দিলে কি হয়
চন্দন মুখে দিলে কি হয় এই সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাবো। আপনি
যদি একজন স্বাস্থ্য সচেতন এবং আপনার ত্বককে ভালোবেসে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনার
চন্দন সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে এবং এটি মুখে দিলে কি হয়। সে সম্পর্কেও ভালো
ধারণা আপনাকে রাখতে হবে। তাই আর দেরি না করে চলুন চন্দন মুখে দিলে কি হয় সে
বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নিন।
আপনি যদি এই চন্দন নিয়মিত ও সঠিক নিয়মে আপনার ত্বকের ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে
আপনার ত্বক অনেক দ্রুত প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। কারণ চন্দন আপনার মুখের
কালচে ভাব এবং মুখে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। যেটা ত্বক ভেতর থেকে
পরিষ্কার করে। ত্বক অনেক মোলাইয়েম থাকে। গরমের দিনে চন্দন মুখে দিলে সেটা আপনার
মুখে ঠান্ডা একটা অনুভূতি দিবে।
আপনার মুখ যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়। আর আপনি যদি এটা ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে
তৈলাক্ত ভাব আপনার মুখ থেকে চলে যাবে। নিয়মিত যদি চন্দন আপনি মুখে দেন। তাহলে
এটা আপনার বয়সের ছাপ দূর করবে। এটা আপনার ত্বকের রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করবে।
আশা করছি যে আপনি উপরের আলোচনা থেকে চন্দন মুখে দিলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন।
কোন চন্দন ভালো
কোন চন্দন ভালো হবে সেটা আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। তাই এখন আমি আপনাদের
জানাবো যে কোন চন্দন সব থেকে ভালো হবে আপনার জন্য। চলুন তাহলে জেনে নিন সব থেকে
ভালো চন্দন কোনটি সে সম্পর্কে।
আসলে চন্দন আপনি কি কাজের জন্য ব্যবহার করবেন। সেটার উপর নির্ভর করে চন্দন কোনটা
ভালো ও খারাপ নির্ধারণ করা হয়। চন্দন ত্বকের জন্য অনেক উপকারী উপাদান। এটা
নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বকের অনেক উপকার এবং ত্বকের সমস্যা ভালো হয়ে যায়।
আপনার যদি ত্বকের সমস্যা থাকে যেমন ব্রণ, ত্বকের দাগ দূর করতে চান এবং
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান। তাহলে আপনার জন্য সাদা চন্দন সব থেকে ভালো
হবে। কারণ সাদা চন্দনের মধ্যে এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও আন্টিইনফ্লামেটরি থাকে।
যেটা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ত্বকের ব্রণ ও ছোপদাগ দূর করতে ভালো কাজ করে।
আর আপনার যদি চর্মরোগ, ফাংগাল ইনফেকশন, ছোপদাগ, কালো দাগ থাকে। সেক্ষেত্রে এগুলো
ভালো করার জন্য আপনি লাল চন্দন ব্যবহার করতে পারেন। লাল চন্দন হচ্ছে ওষুধি
গুণযুক্ত উপাদান যেটা মূলত মুখে ব্যবহারের চেয়ে শরীরের ত্বকে বা আয়ুর্বেদিক
ব্যবহারে বেশি কার্যকর। আশা করছি আপনি উপরের আলোচনা কোন সমস্যার জন্য কোন
চন্দন ভালো হবে সে বিষয়ে জানতে পেরেছেন।
আসল চন্দন গুড়া চেনার উপায়
আসল চন্দন গুড়া চেনার উপায় সম্পর্কে এখন আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। কারণ অনেকেই এই আসল চন্দন না চেনার
কারণে নকল চন্দন ভালো দাম দিয়ে কিনে উপকারের চেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই
আপনি যদি আসল চন্দন গুড়া চেনার উপায় না জেনে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এখন আমার এই
পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
আপনি আসল চন্দন গুড়া যেভাবে চিনবেন। আসল চন্দন গুড়ার যে সুগন্ধ টা রয়েছে। সেটা
একটু মিষ্টি ও প্রাকৃতিক হালকা ঠান্ডা সুগন্ধ পাওয়া যাবে। নকল চন্দনের
কৃত্রিম সুগন্ধ থাকবে যেটা পারফিউম জাতীয়। সাদা চন্দনের গুড়াটি দেখতে
হালকা হলুদ ভাব হবে এবং লাল চন্দন গুড়াটা লালচে বা বাদামির রং এর হবে।
যদি এই চন্দনের গুড়া বেশি উজ্জ্বল বা স্বাভাবিক রং এর থেকে বেশি মনে হয়। তাহলে
সেটা কেমিক্যাল যুক্ত। আসল চন্দন গুড়া পানিতে মিশানোর সময় আস্তে আস্তে
সেটা মিশবে এবং একটা কাঠের গন্ধ বার হবে। আর নকল চন্দন দ্রুত পানির সাথে
মিশে যাবে এবং কোন সুগন্ধ থাকবে না।
আসল চন্দন গুড়া ত্বকে লাগানোর পর একটা ঠান্ডাও আরামদায়ক অনুভব
দিবে। কিন্তু নকল চন্দন টকে লাগানোর পর সেটা ত্বকে চুলকানি সহ ত্বকে
জ্বালাপোড়া করবে। চন্দন গুড়ো কিনার পূর্বে অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ড দেখে
বিশ্বস্ত কোম্পানি থেকে কিনতে হবে। আশা করছি আপনি উপরের আলোচনা থেকে জানতে
পেরেছেন আসল চন্দন গুড়া চেনার উপায়।
সাদা চন্দন মুখে দিলে কি হয়
সাদা চন্দন মুখে দিলে কি হয় এই বিষয়ে এখন আমি আপনাদেরকে বিস্তারিত বলবো। আপনি
যদি সাদা চন্দন মুখে দিলে কি হয় সে সম্পর্কে না জেনে থাকেন। তাহলে দ্রুত আমার এই
পোস্টটি পড়ে ফেলুন।এতে করে আপনি জানতে পারবেন যে, সাদা চন্দন মুখে দিলে কি হয়
সে সম্পর্কে।
সাদা চন্দন মুখের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। যেটা হাজার বছর থেকে
রূপচর্চায় ও ত্বকের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে। আপনি যদি সাদা চন্দন
নিয়মিত মুখে দেন। তাহলে সেটা আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে এবং আপনার
ত্বককে করবে মসৃণ।
আপনার যদি মুখে ব্রণ ও ফুসকুড়ি সমস্যা বেশি থাকে। তাহলে এই সাদা চন্দন নিয়মিত
ব্যবহারের ফলে আপনার মুখের ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমে যাবে। এটা আপনার রোদে
পোড়া ত্বক দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসবে এবং আপনার ত্বকের রং
স্বাভাবিক করবে। আপনার মুখে যদি কালো দাগ থাকে বা ব্রণের দাগ থাকে সেগুলো
আস্তে আস্তে মিটিয়ে যাবে।
সাদা চন্দনের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে। সেটা ত্বকের
কোষগুলোকে সতেজ রাখে এবং আপনার বয়সের ছাপ দূর করে। যার ফলে আপনাকে দেখতে
অনেক সুন্দর লাগে। আপনার যদি মুখে তেল তেল ভাব থাকে। সেই তেল ভাবটাকে দূর
করতে সাদা চন্দন অনেক ভালো কাজ করে।এক কথায় বলা যায় যে, মুখের বিভিন্ন সমস্যা
এবং মুখের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সাদা চন্দন অনেক উপকারী।
লাল চন্দন মুখে মাখলে কি হয়
লাল চন্দন মুখে মাখলে কি হয় এই বিষয় সম্পর্কে আপনারা অনেকে আছেন যারা জানতে
চেয়েছিলেন। এখন মূলত আমি আমার এই আলোচনাতে লাল চন্দন মুখে মাখলে কি হয় সে বিষয়ে
আপনাদেরকে জানাবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক বিস্তারিত আলোচনা।
লাল চন্দন একটি প্রাকৃতিক জনপ্রিয় আয়ুর্বেদিক উপাদান। যেটা অনেকেই আছেন
যারা ত্বকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন। লাল চন্দন অ্যান্টি
ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিসেপটি হওয়ার কারণে। এটি মুখের ব্রণ ও পিম্পল ভালো
করার জন্য অনেক কার্যকরী। এটা মুখের ব্রণ কে ভেতর থেকে শুকিয়ে দেয় এবং
নতুন ব্রণ হওয়া বন্ধ করে দেয়। যাদের মুখে ফুসকরি ও লালচে ভাব সৃষ্টি হয়।
তাদের জন্য লাল চন্দন অনেক উপকারী। লাল চন্দন টকের মধ্যে রক্ত সঞ্চালন
বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে করে তুলে টানটান এবং ত্বক কে করে ফর্সা। লাল চন্দন যদি
মুখে নিয়মিত ব্যবহার করা হয়। তাহলে মুখের কালো ছোপ ছোপ দাগ, ব্রনের দাগ এবং
রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে যায়। আশা করছি আপনি আমার আলোচনা থেকে লাল
চন্দন মুখে মাখলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্যঃ চন্দনের অপকারিতা
চন্দনের অপকারিতা সম্পর্কে আমি আমার আর্টিকেলের মধ্যে আপনাদের সাথে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। আশা করছি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি চন্দনের যত অপকারিতা
আছে সেগুলো সহ চন্দন পাউডার এর উপকারিতা, চন্দন মুখে লাগানোর নিয়ম এবং
চন্দন পাউডারের দাম কত সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার পর উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনি এই
আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকেও চন্দন সম্পর্কে জানার
সুযোগ করে দিবেন। তাছাড়া আপনার যদি আমার এই আর্টিকেলটি নিয়ে কোন প্রশ্ন বা
মতামত থাকে অথবা আপনি যদি নতুন কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে সেটা আপনি
আমাদের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।
অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url