কারি পাতার গাছ কোথা থেকে কিনবেন এর যত গুনাগুণ
কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে এ বিষয়ে আজকে আমি আমাদের আর্টিকেলে আপনাদেরকে
বিস্তারিত জানাবো। কারি পাতা বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায় এবং আপনি কিভাবে কারি
পাতা চিনবেন, কারি পাতা গাছের যত্ন কীভাবে নিবেন, কারি পাতার কি গুনাগুন রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে আমাদের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ
সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি কারি পাতা সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন। তাই আর
দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক কারি পাতা সম্পর্কে সকল তথ্য।
পেজ সুচিপত্রঃ কারি পাতা কথায় পাওয়া যাবে
- কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে
- কারি পাতার গাছ কীভাবে পাবো
- কারি পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে
- চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
- কারি পাতা গাছের উপকারিতা কি
- কারি পাতা গাছের কিভাবে যত্ন নিব
- কারি পাতার গাছ টবে লাগাবেন যেভাবে
- পেটের সমস্যায় কারি পাতার ব্যবহার
- কারি পাতা কিভাবে ত্বককে সুস্থ রাখে
- কারি পাতা বীজ থেকে চারা উৎপাদন করার নিয়ম
-
লেখক এর মন্তব্যঃ কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে
কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে
কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে এটা আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন। কোথায় কারি পাতা পাবো
কিভাবে পাব এইসব আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আপনি কিভাবে খুব সহজে কারি পাতা কোথা
থেকে পাবেন সে সম্পর্কে নিচে বলা হলো। কারি পাতা অনেক প্রয়োজনীয় একটি উপাদান যা
আমাদের অনেক সমস্যায় কাজে লাগে। কারি পাতা রান্নার কাজেও ব্যবহার করা হয়। এটি
একটি সুগন্ধ জাতীয় উপাদান এটির অনেক গুনাগুন রয়েছে। যাই হোক কারি পাতা আপনি
কিভাবে পাবেন বা কোথা থেকে পাবেন।
আরো পড়ুনঃ ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়
সে সম্পর্কে এখন আমি আপনাকে বলবো। কারিপাতা আসলে আপনি যেকোনো বড় সবজির দোকানে
থেকে পেতে পারেন। কারি পাতা অনেক উপকারী এটার পাতা সংগ্রহ করার থেকে এর গাছ
লাগানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি গাছ থাকলে সেখান থেকে আপনি ইচ্ছামতো এবং যখন
ইচ্ছা আপনি কারি পাতা সংগ্রহ করতে পারবেন। এবার প্রশ্ন আসে গাছ কোথা থেকে পাবেন।
নাসারী কারি পাতা গাছ সংগ্রহ করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান।
আপনি এই নার্সারি গুলোতে কারি পাতার গাছ খুব সহজে পেতে পারেন। আপনি বাংলাদেশের
রংপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, রাজশাহী এবং লালমনিরহাট এই বিভাগগুলোতে
যেসব নার্সারি থাকে। সে সব নার্সারিতে আপনি যদি একটু ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেন
তাহলে অবশ্যই কারি পাতার গাছ পাবেন। তাছাড়া বাংলাদেশের আরো কিছু স্থান রয়েছে
যেগুলোতে আপনি এই কারি পাতার গাছ খুব সহজে পেতে পারেন। সেগুলো হচ্ছে বগুড়ার
সৈয়দপুর এরকম অঞ্চলে।
তাছাড়া আপনি যদি গ্রাম অঞ্চলের দিকে একটু লক্ষ্য করেন তাহলে এই গাছ পেতে পারেন।
কারণ এই গাছ সাধারণত সব অঞ্চলেই হয়ে থাকে বিশেষ করে যে অঞ্চলের বৃষ্টি বেশি হয়
সেই জায়গা গুলোতে এই গাছ গুলো খুব সহজেই জন্ম নিয়ে থাকে। আপনি কারি পাতা কোথায়
থেকে পাবেন সেটি নিচে আরেকটু সহজ করে পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হলো অবশ্যই মনোযোগ
সহকারে দেখবেন।
কারি পাতা যেসব জায়গা থেকে আপনি সংগ্রহ করতে পারবেন সেগুলো হলো
- আপনি কারি পাতা পেতে পারেন আপনার স্থানীয় কাঁচা বাজার থেকে।
- তারপর আপনি কোন সুপার শপ থেকেও এটি পেতে পারেন।
- বর্তমানে আপনি অনলাইন মার্কেটপ্লেসেও কারি পাতা সহজেই পেতে পারেন।
কারি পাতার গাছ কিভাবে পাবো
কারি পাতার গাছ কিভাবে পাবেন সে সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে সকল তথ্য দিব। আমার এ
পোস্টটি পড়ে আপনি জানতে পারবেন কারি পাতার গাছ কোথা থেকে এবং কিভাবে আপনি সংগ্রহ
করবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক কারি পাতা গাছ কিভাবে পাবেন।
আপনি কারি পাতা গাছ আপনার স্থানীয় নার্সারি থেকে খুব সহজেই পেতে পারেন।
একটু ভালোভাবে খোঁজ নিলে এই কারি পাতার গাছটি আপনি পাবেন। ঢাকার মধ্যে আপনি
আগারগাঁও কৃষি প্রদর্শনী কেন্দ্র থেকে, হাতিরঝিল নার্সারি থেকে, মিরপুর বোটানিকাল
গার্ডেনের পাশে এবং বনানী নিউ ইস্কাটন সড়কের পাশে কিছু নার্সারি রয়েছে সেখান
থেকে গাছ পেতে পারেন। তাছাড়া আপনি চট্টগ্রামের মধ্যে পোলো গ্রাউন্ড, আলমাস,
আগ্রাবাদ নাসারি এগুলো থেকে এই গাছ সংগ্রহ করতে পারেন।
তারপর রাজশাহী খুলনা সিলেট এগুলো থেকে আপনি বড়ো নার্সারি বা শহরে কৃষি
সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছাকাছি যে নাসারি গুলো আছে সেগুলোতে আপনি একটু খোঁজ
করলেই এই গাছ পেয়ে যাবেন। বর্তমানে কারি পাতার গাছ আপনি অনলাইনের মাধ্যমে খুব
সহজেই পেতে পারেন। আপনি ফেসবুক অথবা বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্ল্যাটফর্ম গুলোতে
এই গাছটি খুঁজে পাবেন। সেই সব জাইগা থেকে এই গাছটি খুব সহজে অর্ডার করতে পারবেন।
অবশ্যই গাছ কেনার সময় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সে গাছের চারা যেন সতেজ হয়, পাতা
যেন শুকনো না হয়। খুব ছোট চারা না নিয়ে একটু মাঝারি সাইজের গাছ কিনলে সেগুলো
বাড়িতে সহজে টবে লাগাতে পারবেন এবং গাছ নেওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করে নিবেন যে এ
গাছটি বীজ থেকে জন্মাইছে না কাটিং করা অবশ্যই চেষ্টা করবেন বিচ বীজ থেকে জন্মানো
গাছ ক্রয় করার। আশাকরি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন কিভাবে কারি পাতার
গাছ সংগ্রহ করা যায়।
কারি পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে
কারি পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা এবং না জানার ফলে আমরা অনেকেই
ভুল করে বসে থাকি। যে কোনটা কারি পাতা আর কোনটা নিম পাতা। কারণ কারি পাতা এবং নিম
পাতা এই দুটাকেই দেখতে একদম একই রকম লাগে। যাই হোক এখন আমি আপনাদেরকে কারি পাতা
চেনার উপায় সম্পর্কে কিছু নিয়ম বলবো। যেগুলো দেখে আপনি খুব সহজেই কোনটি কারি
পাতা সেটি আপনি চিনতে পারবেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি কারি পাতা চিনবেন। প্রথমেই আপনাকে এই পাতার গঠন
লক্ষ্য করতে হবে, কারি পাতা গাছের পাতা গুলো গুচ্ছ আকারে গাঠ ধরে জন্মে এবং একটি
ডাটার সাথে ১০ থেকে ২১ টি ছোট পাতার সমন্বয়ে গঠন হয়। কারি পাতার আকৃতি লম্বা এবং
একটু সরু ডিম্বাকার হয়ে থাকে। এই পাতার রং গারো সবুজ রঙের হয়।
পাতা টা একটু চকচকেও মসৃণ হয়, পাতার সাইডগুলো হালকা ঢেউ ঢেউ হয়ে থাকে। এই
পাতাটি চেনার সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে এ পাতাটির গন্ধ।পাতাটি একটু ঘষলে এক ধরনের
ঝাঁঝালো মসলামাখা লেবুর মত সৌগন্ধ আছে। এই গন্ধে কারি পাতা অন্য সব পাতা থেকে
আলাদা। এটা আপনি খুব সহজেই বুঝে নিতে পারবেন। গাছটি দেখতে জঙ্গল ঝোপাকৃতি এবং
উচ্চতা হয় মাঝারি এটি সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতা হতে পারে।
এই গাছের ছাল মসৃণ ও হালকা বাদামি রংয়ের হয়। এই গাছের ফল ছোট ও কালো রঙের গোল
আকৃতি হয়ে থাকে হয়ে থাকে। এ গাছের ফল খাওয়ার জন্য উপজুক্ত নয়। এছাড়াও এ পাতা
আপনি খুব সহজেই চিহ্নিত করতে পারবেন কেননা নিম পাতায় কোন গন্ধ নেই এবং নিমপাতা
তেতো। কামিনী পাতা যা দেখতে কারি পাতার মত হলেও এটার গন্ধ কম এবং এটি রান্নায়
ব্যবহার করা যায় না।
কারি পাতাতে অবশ্যই একটি সুগন্ধ রয়েছে যা একটু ঘষলেই এক ধরনের মসলা মাখা লেবুর
মত সুগন্ধ বার হয়। যা থেকে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন বা চিনতে পারবেন যে এটি
কারি পাতা। আশা করি আমার উপরের আলোচনা থেকে আপনি কারি পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আমরা অনেকেই ভালোভাবে জানি
না। বর্তমানে চুল পড়া আমাদের একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। আমরা
অনেকেই আমাদের চুল পড়া নিয়ে অনেক চিন্তিত।কিভাবে আমরা আমাদের চুল পড়া বন্ধ
করতে পারব। কারি পাতা কিভাবে ব্যবহার করলে আমাদের চুলের জন্য উপকারী হবে। এক
কথায় চুলের যত্নে কারি পাতার আমরা কিভাবে ব্যবহার করব।
আরো পড়ুনঃ ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
সে সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে বিস্তারিত বলবো। বর্তমান সময়ে আমাদের চুল
অনেক বেশি উঠে যার কারণে আমরা অনেক দুশ্চিন্তায় থাকি। আমাদের এই চুল পড়া
রোধে কারি পাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারি পাতা
আমাদের চুলকে শক্ত করে এবং চুল পড়া বন্ধ করেন ও চুলকে বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে।
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার অনেক জনপ্রিয় এবং আদিকাল থেকেই এর ব্যবহার চুলের
জন্য করা হয়। কারি পাতায় অনেক উপকারী পুষ্টি উপাদান থাকার কারণে আমাদের
চুলকে শক্ত এবং ঝলমলে করতে সাহায্য করে। কারি পাতা আপনি সিদ্ধ করে সেই পানি
চুলে লাগালে আপনি এর উপকারিতা নিজেই দেখতে পাবেন। তাই চেষ্টা করবেন চুলের যত্নে
নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করার।
কারি পাতা গাছের উপকারিতা কি
কারি পাতা গাছের উপকারিতা কি এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। কারি পাতা গাছের
অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা
হয়ে থাকে। এটি রান্নার কাজেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কারিপাতা গাছের উপকারিতা কি
কি রয়েছে সে সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে বিস্তারিত বলবো।
কারি পাতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। কারি পাতাতে থাকা
ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ
প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। আসুন আর একটু বিস্তারিত ভাবে জেনে নেই এটি আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য কি কি ভাবে উপকার করে থাকে।
-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেঃ কারিপাতা রস রক্তে শর্করার
মাত্রা সঠিক ও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এটি ইনসুলিন নিঃসরণের প্রক্রিয়া
উন্নত করে এবং প্যানক্রিয়াসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
-
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কারি পাতাঃ কারি পাতা হজমের সহায়তা করে এবং
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকেন এটি আমাদের পেটের গ্যাস
বদহজম এবং আরো যেগুলো সমস্যা থাকে আমাদের পেটের সেগুলোকে ভালো করে।
-
কারি পাতা দিয়ে ত্বকের যত্নঃ কারি পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ত্বকের নানা রকম সমস্যা যেমন তকে ব্রণ মেছতা
ফুসকুড়ি ভালো করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
-
চুলের যত্নেও কারি পাতা বিশেষ অবদান রাখে। চুল ঝরে যাওয়া চুলের বিভিন্ন
সমস্যা চুল রুক্ষ থাকা এই সকল ক্ষেত্রে কারি পাতা ব্যবহার করলে চুল থাকে
সুস্থ ও সুন্দর এবং চুল হয় ঝলমলে। কারি পাতার সিদ্ধ করা পানি চুলে
লাগালে এটি থেকে আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।
-
হার্টের সুস্থতাতে কারি পাতার উপকারিতাঃ কারি পাতা আমাদের শরীরের
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য
করে।
রান্নার ক্ষেত্রে কারি পাতার ব্যবহার
-
মসলা হিসেবে কারি পাতার ব্যবহার করতে পারেন। রান্নার শুরুতেই আপনি তেলের
সাথে কারি পাতা দিয়ে দিলে খাবারে একটি সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর সুগন্ধ পাওয়া
যায়।
-
মচমচে খাবারের কারি পাতার ব্যবহার করতে পারেন। এটি মাঝেমাঝে খাবার বা
রাস্তাতে একটি অন্যরকম স্বাদ এনে দেয়।
-
এটি আপনি তরকারি ও চুপে ব্যবহার করতে পারেন যেমন
ডাল, মাছ-মাংস। এটি ব্যবহারের ফলে দরকারের স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ
বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন কারি পাতা গাছের পাতা থেকে
প্রাকৃতিক কীটনাশক তৈরি হয়। এটি ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দূর করতে
সাহায্য করে এবং ফসল কে ভালো রাখে।তাছাড়া কারি পাতা দিয়ে প্রাকৃতিক স্যার
তৈরি করা যায় যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং ফসল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
ইত্যাদি আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। আশা করি আপনি উপরোক্তা আলোচনা
থেকে কারী প্রথা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন
কারি পাতা গাছের কিভাবে যত্ন নিব
কারি পাতা গাছের কিভাবে যত্ন নিব এই বিষয়ে এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা
করব। কারি পাতার গাছ অনেক উপকারী। আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান করে এই
গাড়ির পাতার গাছ। কারি পাতার গাছ অনেকদিন এবং ভাল ফলন পাওয়ার
জন্য এর যত্ন নেওয়া অনেক দরকারি। সঠিক যত্নের মাধ্যমে এই গাছটি অনেক
তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং পাতাগুলো সব সময় টাটকা হয়ে থাকে।
এই গাছটি লাগানোর জন্য প্রথমে আমাদেরকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। তারপর কিছুদিন
ভিজিয়ে রেখে সেগুলোকে রোপন করতে হবে। এই চারা রোপনের জন্য উপযুক্ত মাটি হচ্ছে
বেলে দোয়াস মাটি এবং সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিতে হবে। পানি ও সার প্রয়োগ করতে
হবে গাছের শিকড়ের। পরিমিত পানি দেওয়া প্রয়োজন অতিরিক্ত দিলে শিকড় পৌচে যেতে
পারে। গাছের বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক সার প্রয়োগ করতে পারেন।
প্রাকৃতিক স্যার হিসেবে আপনি গোবর কম্পোস্ট সার ও তরল জৈব সার ব্যবহার করতে
পারেন। এই গাছটির জন্য পর্যাপ্ত রোদ প্রয়োজন তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন
অতিরিক্ত গরমে গাছটি নষ্ট না হয়ে যায়। এছাড়াও আপনি এই গাছটিকে রক্ষা
করার জন্য বা যত্ন নেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে কীটনাশকের পরিবর্তে
প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কীটপতঙ্গ দমন করতে হবে। আশা করি আপনি আমার এই আলোচনা থেকে
কারি পাতা গাছের কিভাবে যত্ন নিবেন সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
কারি পাতার গাছ টবে লাগাবেন যেভাবে
কারি পাতার গাছ টবে লাগাবেন যেভাবে। প্রথমে আপনি একটি টব নিবেন তারপর আপনি
গাছের জন্য প্রয়োজনীয় মাটি প্রস্তুত করবেন। মাটি প্রস্তুত হলে প্রয়োজন
অনুযায়ী স্যার কীটনাশক সেই মাটিতে মিশাই দিবেন। সবকিছু ভালোভাবে করার পর
এবার আপনি গাছটি রোপন করবেন সেই টবে। টবে গাছ লাগালে এর উপকারিতা আপনি পাবেন
বহুদিন।
যেমন ধরেন এটি আপনি বিভিন্ন স্থানে পরিবর্তন করতে পারবেন অর্থাৎ আপনি এক
জায়গা থেকে অন্য জায়গায় এটি সরাতে পারবেন। যার ফলে প্রয়োজনমতো সূর্যের আলো
ও পরিমান অনুযায়ী পানি দিতে পারবেন। এতে বহুদিন এই গাছটি সুন্দর ও সুসজ্জিত
ভাবে স্থায়িত্ব লাভ করবে এবং এটি থেকে আপনি অনেক সময় ধরে উপকার গ্রহণ করতে
পারবেন।
পেটের সমস্যায় কারি পাতা ব্যবহার
পেটের সমস্যায় কারি পাতা ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এটি
আমাদের শারীরের শরীরের অনেক রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন
ও পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। আমাদের পেটের
অনেক সমস্যা যেমন পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিক, পেটের মধ্যে শব্দ, পেট ব্যথা,
কোষ্ঠকাঠিন্য আরো অনেক সমস্যায় কারি পাতা ব্যবহার করলে এগুলো থেকে দ্রুত
পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। কারি পাতা ব্যবহার করলে আমাদের পেট থাকে সুস্থ তাই
আমাদের উচিত হবে নিয়মিত কারি পাতার ব্যবহার করা।
কারি পাতা কিভাবে ত্বককে সুস্থ রাখে
কারি পাতা কিভাবে ত্বককে সুস্থ রাখে তা হয়তো আমাদের অনেকেরও জানা
নেই। কারি পাতা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। কারি
পাতা আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং আমাদের মুখের ব্রণ দাগ মেছতা এই
সকল ধরনের সমস্যা থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে।কারিপাতা একটি গুণাগুণ সম্পন্ন
উপাদান এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য যে রকম গুরুত্বপূর্ণ।
সেই রকমই এটি আমাদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বা প্রয়োজনীয় উপাদান। আপনারা
যারা ত্বকে উজ্জ্বলতা দেখতে চান ও স্কিনকে ভালোবেসে থাকেন তাহলে অবশ্যই কারি
পাতা নিয়মিত ব্যবহার করবেন। কারি পাতাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের
ত্বককে বিভিন্ন ক্ষতির থেকে রক্ষা করে এবং বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য
করে। এর ভেতরে থাকা এন্টিবায়োটিয়াল ও এনটি ইনফ্লামেটরি ব্রণ ও ত্বকের
প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
কারি পাতা রক্ত পরিশোধনের সাহায্য করে যার ফলে আমাদের ত্বক স্বাভাবিকভাবেই
উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।কারি পাতার ভেতরে প্রাকৃতিক তেল ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা
আমাদের ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কারি পাতা আপনি যেভাবে
ব্যবহার করবেন। তা হচ্ছে কিছু টাটকা কারি পাতা আপনি বেটে নিবেন এবং সামান্য
তাতে গোলাপ জল বা দই মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে বানীয়ে ব্যবহার করবেন।
আরো পড়ুনঃ দ্রুত ওজন বৃদ্ধির সেরা ১৫টি উপায়
১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখে দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবেন। কারি পাতা আমাদের ত্বকের
জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত এটি ব্যবহার করা। উক্ত
আলোচনা থেকে আপনি অবশ্যই কারি পাতা কিভাবে ত্বককে সুস্থ রাখে সে সম্পর্কে
আপনি বিস্তারিত জেনেছেন।
কারি পাতা বীজ থেকে চারা উৎপাদন করার নিয়ম
কারি পাতা বীজ থেকে চারা উৎপাদন করার নিয়ম জানা আমাদের জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কারি পাতার বীজ থেকে চারা উৎপাদন করলে সেই
চারাটি দীর্ঘদিন ধরে বিষ দেওয়ার সক্ষমতা লাভ করে। অবশ্যই কারি পাতার বীজ
থেকে চারা উৎপাদন করতে আপনাকে ভালো বীজ সংগ্রহ করতে হবে। কেননা
ভালো বীজ থেকেই ভালো চারা উৎপাদন হয়।
বীজ টি যেন অবশ্যই একটি ভালো উৎপাদনকারী গাছ থেকে নেওয়া হয়। এরপর বীজ যে
স্থানে রোপন করা হবে সেই স্থানটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করবেন। যেন সেখানে কোন
কীট পতঙ্গর আস্তানা না থাকে। অবশ্যই বীজটি রোপন করার জন্য মাটির পূর্ব
প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন। এরপর সেখানে বীজটি রোপণ করবেন এবং নিয়মিত পানি
দিবেন।
লেখক এর মন্তব্যঃ কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে
কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে সেই সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যেই বিস্তারিত সব জেনে
নিয়েছেন। কারি পাতার উপকারিতা অনেক। এটি আমাদের দেহের অনেক সমস্যার
সমাধান করে থাকে। এমনকি বড় ধরনের রোগ থেকেও এটি আমাদের রক্ষা করে তাই আমি বলব
নিজেকে সুস্থ ও সতেজে রাখার জন্য আপনিও নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করা শুরু করে
দিন।
আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এটি আপনার
বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আপনার কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে, সেটি আমাদের
নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।
অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url