মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম সম্পর্কে আপনারা অনেকজনই আছেন যারা জানেন না।
তাই আজ আমি আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ওষুধের নাম সহ মাথা
ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এবং আঘাত জনিত ব্যথার ঔষধ কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করবো।
আপনি যদি সবথেকে ভালো মানের এবং ভালো কোম্পানির মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি
ওষুধের নাম জানতে চান। তাহলে অবশ্যই আমার এই পোস্টটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নিন মাথা ব্যথার জন্য ভালো ওষুধ গুলোর নাম এবং এর
কাজ সম্পর্কে।
পেজ সুচিপত্রঃ মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম
- মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম
- ১/প্যারাসিটামল (paracetamol) ট্যাবলেট ওষুধ
- ২/অ্যাসিটামিনোফেন (Acetaminophen) ওষুধ
- ৩/আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen) ওষুধ
- ৪/ন্যাপ্রক্সেন (Naproxen) ট্যাবলেট ওষুধ
- ৫/ডিক্লোফেনাক (Diclofenac) ট্যাবলেট ওষুধ
- ৬/কেটোরোলাক (Ketorolac) ট্যাবলেট ওষুধ
- ৭/অ্যাসপিরিন (Aspirin) ট্যাবলেট ওষুধ
- ৮/সুমাট্রিপটান (Sumatriptan) ট্যাবলেট ওষুধ
- ৯/রিজাট্রিপটান (Rizatriptan) ট্যাবলেট ওষুধ
- ১০/এরগোটামিন (Ergotamine) ট্যাবলেট ওষুধ
- হোমিওপ্যাথিক মাথাব্যথা কমার দশটি ওষুধের নাম
- মাথা ব্যথা কমানোর দোয়া
- মাথা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- দীর্ঘদিন মাথা ব্যাথার কারণ কী হতে পারে
- আঘাত জনিত ব্যথার ঔষধ কি
- লেখকের মন্তব্যঃ মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম এখন আমি আপনাদেরকে আমার আর্টিকেলের মাধ্যমে
বলবো। অনেকেই আছে যারা মাথা ব্যথার জন্য অনেক নিম্নমানের ওষুধ কিনে খেয়ে থাকে।
যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর ও অনিরাপদ হতে পারে। ওষুধ খাওয়ার সময় অবশ্যই সেই
ওষুধটি কোন কোম্পানির এবং ওষুধের মান কেমন সে দিকটা জেনেশুনে খাওয়া উচিত। তা না
হলে আপনি যদি নিম্নমানের ওষুধ খান সেক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আপনার শরীরে দেখা দিতে পারে।
তাই এখন আমি সেই ওষুধ গুলোর নাম বলবো। যে ওষুধগুলো আপনার জন্য নিরাপদ হবে এবং
ওষুধগুলো ভালো মানের এবং ভালো কোম্পানির হবে। যেটা খাওয়ার পর আপনার মাথা
ব্যথার সমস্যা খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে। নিচে মাথাব্যথা কমানোর দশটি ওষুধের
নাম বললাম যেগুলো আপনার জন্য নিরাপদ হবে এবং ভালো মানের ওষুধ।
১/প্যারাসিটামল (paracetamol) ট্যাবলেট ওষুধ
প্যারাসিটামল মাথা ব্যথা কমিয়ে থাকে। এই ওষুধটি শুধু যে মাথা ব্যথা কমায় তা
কিন্তু নয়। প্যারাসিটামল জ্বর ও মাথাব্যথা সহ শরীরের ব্যথা কমানোর জন্য ভালো কাজ
করে। প্যারাসিটামলের মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান আছে। যে উপাদান গুলো মাথার
ব্যথাকে এবং শরীরে তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে কমিয়ে দেয়।
আপনি এখন হয়তো ভাবছেন যে প্যারাসিটামল কোন কোম্পানির টা ভালো হবে। মাথা ব্যথার
জন্য বাংলাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় ওষুধ হচ্ছে নাপা। এই নাপা ওষুধটি তৈরি করে থাকে
বেক্সিমকো নামের একটি কোম্পানি। তাছাড়া আপনি স্কোয়ার কোম্পানির প্যারাসিটামলটি খেতে পারেন। এই ওষুধটি অনেক ভালো মানের একটি ওষুধ।
অনেক ডাক্তার মাথা ব্যথার জন্য এবং
মাইগ্রেনের সমস্যায় এই ওষুধটি খাওয়ার পরামর্শ দেয়। এছাড়াও আপনি মাথা ব্যথার
জন্য ফেবিক্স প্যারাসিটামল টি খেতে পারেন। এই ওষুধটা ইনসেপ্টা কোম্পানির এবং এই
ওষুধের মান খুব ভালো। এটা বিশেষ করে জ্বর ও ঠান্ডায় যে মাথা ব্যথা হয়, সেটা
ভালো করে থাকে। আপনি যদি ফার্মেসিতে গিয়ে স্কয়ার কোম্পানির প্যারাসিটামল নিতে
চান।
সেক্ষেত্রে দাম পড়বে ১০ থেকে ১৫ টাকা পাতা যেটায় ১০ টি ট্যাবলেট থাকে। নাপা ৫০০
এমজির দাম পড়বে ১০ থেকে ১৫ টাকা এবং ফেভেক্স ৫০০ এমজি এটার দামও ১০ থেকে ১৫ টাকা
প্রতিপাতা। আমি যে তিনটা কোম্পানির নাম বললাম ওষুধগুলো মাথা ব্যথার জন্য খাওয়া
নিরাপদ এবং দ্রুত মাথাব্যথা কমিয়ে থাকে। তবে মাথা ব্যথার জন্য এইসব ওষুধগুলো
অবশ্যই আপনি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন, এটাই আপনার জন্য সবথেকে নিরাপদ
ও ভালো হবে।
২/অ্যাসিটামিনোফেন (Acetaminophen) ওষুধ
অ্যাসিটামিনোফেন ওষুধটি হচ্ছে প্যারাসিটামলের আরেকটি নাম। এই ওষুধ টা সাধারণত
যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাতে ভালো ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধটি মাথাব্যথা করলে সেই
ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই ওষুধটি জ্বর ঠান্ডা লাগা শরীরের ব্যথা এবং
দাঁতের ব্যথার জন্য বেশ উপকারী হিসেবে কাজ করে থাকে। এই ওষুধটি বয়স অনুযায়ী ডোজ
নিতে হয়।
যেমন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য এই ট্যাবলেটি ৫০০ এমজি থেকে ১০০০ এমজির ডোজ নিতে
পারে। দিনে সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচটা ট্যাবলেট খেতে পারবে। চার থেকে ছয় ঘন্টা পর
পর। শিশুদের জন্য ১০ এমজি থেকে শুরু করে বয়স ও ওজন অনুযায়ী ডোজ বাড়বে। তবে এই
ওষুধ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সঠিক নিয়ম অনুযায়ী এই
ওষুধটি খেতে হবে।
৩/আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen) ওষুধ
আইবুপ্রোফেন মাথা ব্যথার জন্য অনেক ভালো একটি ওষুধ। এই ওষুধটি আমাদের শরীরের
মধ্যে ব্যথা তৈরি করে, এইরকম উপাদানকে কমিয়ে মাথা ব্যথা সহ শরীরের ব্যথা এবং
জ্বর ও ফোলা ভাব কমিয়ে থাকে। এই ওষুধটি আপনি বাজারে ২০০ এমজি ট্যাবলেট ও ৪০০
এমজি ট্যাবলেট এবং ২০০ এমজি একটি সিরাপ পাবেন। যেটার দাম প্রায় ১০ থেকে ১৫ টাকার
মধ্যে হয়ে থাকে। সিরাপ যদি নিতে চান সিরাপটির দাম পড়বে ৩০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে।
এই ওষুধটি দিনে তিন বেলা খাওয়া যেতে পারে। তবে সেটা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী। অতিরিক্ত যদি খাওয়া হয় সেটা লিভারের ক্ষতি করতে পারে। এই ওষুধটি
খাওয়ার পূর্বে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
আছে ও কিডনির সমস্যা রয়েছে এবং গর্ভবতী মহিলা যারা আছেন। এই ওষুধটি খালি পেটে
খাওয়া উচিত নয়। খাবারের পর ওষুধ খাওয়া ভালো হবে।
৪/ন্যাপ্রক্সেন (Naproxen) ট্যাবলেট ওষুধ
ন্যাপ্রক্সেন ট্যাবলেট এটা ব্যথা নাশক ওষুধ সেই সাথে এটা শরীরের ফোলা ভাব কমাতে
সাহায্য করে। এই ওষুধটা আমাদের শরীরে যখন ব্যাথা লাগে তখন সেই ব্যথা কমানোর জন্য
ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা অনেক ভালো মানের একটি ওষুধ। এই ওষুধটা যাদের
মাইগ্রেনের সমস্যা এবং টানটান মাথাব্যথা করে এবং হাটু, কোমর, হাত সহ জয়েন্টের
ব্যথা হলে বা ফোলা ভাব থাকলে এটা কমিয়ে দেয়।
সেই সাথে এটা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতেও ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধটি যদি একবার
খাওয়া হয় তাহলে ওষুধটা ৮ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করে থাকে। তাই এই ওষুধটি
দিনে দুইবার খেলেই যথেষ্ট। অবশ্যই ওষুধটি খাবারের পর খাওয়া উচিত। যাদের
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে এবং কিডনির সমস্যা আছে সেই সাথে যারা গর্ভবতী মহিলা
তারা এটি খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
৫/ডিক্লোফেনাক (Diclofenac) ট্যাবলেট ওষুধ
ডিক্লোফেনাক ট্যাবলেট মূলত যাদের তীব্র মাথাব্যথা হয় তাদের জন্য এই ওষুধটি
ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধটি কোমরের ব্যথা হাঁটুর ব্যথা এবং হাত,পায়ের ব্যথা সহ
আঘাত জনিত ব্যথায় অনেক উপকারী। এই ওষুধটি যারা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আছেন। তাদের
জন্য ৫০ এমজি প্রতি ট্যাবলেট দিনে দুই থেকে তিনবার খাওয়া যেতে পারে সেটা অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
এই ওষুধটি খাবার পর খাওয়া উচিত। এই ওষুধটি যদি অনেক দিন ধরে এবং বেশি ডোজে
খাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে এটা কিডনি ও লিভারের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন
গ্যাস্ট্রিক, বমি এবং পেট ব্যথা করা, কিডনির সমস্যা সহ হৃদরোগের ঝুঁকি হতে পারে।
তাই এই ওষুধটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী স্বল্প সময়ে ব্যবহার করলে সাধারণত কোন
সমস্যা হয় না।
৬/কেটোরোলাক (Ketorolac) ট্যাবলেট ওষুধ
আপনি প্রচন্ড মাথা ব্যথার জন্য কেটোরোলাক ট্যাবলেটটি খেতে পারেন। এই ট্যাবলেটটি
খুবই শক্তিশালী ব্যথা নাশক একটি ওষুধ। এই ওষুধটা মূলত কাটা ছেঁড়া বা অপারেশনের
পর যে ব্যথা হয় সে ব্যথাই ব্যবহার করা হয়। সেই সাথে এটা তীব্র যাদের মাথা ব্যথা
রয়েছে বা মাইগ্রেনের সমস্যা এবং দাঁতের ব্যথা কমাতে ব্যবহার করা হয়।
এই ওষুধটা সর্বোচ্চ পাঁচ দিন ব্যবহার করার পরামর্শ ডাক্তার দিয়ে থাকে।
দিনে সর্বোচ্চ তিন থেকে চার বার খাওয়া যেতে পারে। অবশ্যই খাবার খাওয়ার পর
ওষুধটি খেতে হবে। এই ওষুধটি অনেক শক্তিশালী যদি পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত
খাওয়া হয় বা নিয়ম না মেনে খাওয়া হয়।সেক্ষেত্রে এটা কিডনির ও পেটের
ক্ষতি করতে পারে। তাই এই ওষুধটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের
পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
৭/অ্যাসপিরিন (Aspirin) ট্যাবলেট ওষুধ
অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট মূলত মাথাব্যথা ও শরীরের জ্বর কমানো এবং রক্ত পাতলা করার কাজ
করে থাকে। যদি জ্বর ও মাথা ব্যথা করে সেক্ষেত্রে আপনি ৩০০ এমজি থেকে ৬০০ এমজি
ট্যাবলেটটি খেতে পারেন। এতে আপনার খুব সহজেই এবং খুব তাড়াতাড়ি শরীরের জ্বর এবং
মাথাব্যথা কমে যাবে।
এই ওষুধটা আপনি চার থেকে ছয় ঘন্টা পর পর দিনে মোট দুইবার থেকে তিনবার খেতে
পারেন। আর এটা যদি রক্তপাতলা রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। তাহলে ৭৫ থেকে ১০০ এমজি
ট্যাবলেটটি দিনে একবার ব্যবহার করা যায়। তবে সেটা একজন চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী খেতে হবে।
এটার কিছু সতর্কতা আছে যেটা হচ্ছে এই এসপিরিন ওষুধটি সবাই খেতে পারে না। বিশেষ
করে যাদের পেটে গ্যাসের সমস্যা আছে বা আলসার জনিত কোন সমস্যা আছে। কারণ এটি
খাওয়ার পর তাদের রক্তক্ষরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সাথে যারা গর্ভবতী
মহিলা এবং যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবধানতা
অবলম্বন করবেন।
যাদের বয়স ১৬ বছরের নিচে তাদের এই ওষুধটি ডাক্তার খাওয়া থেকে নিষেধ করে। কারণ
এই ওষুধটি ১৬ বছরের নিচে কোন শিশু যদি খেয়ে থাকে। তাহলে একটি বিরল ও ভয়ঙ্কর
রোগের ঝুঁকি থাকে। তাই এই ওষুধটি খাওয়ার পূর্বে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে
এবং এই ওষুধটি ব্যবহারের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া নিরাপদ হবে।
৮/সুমাট্রিপটান (Sumatriptan) ট্যাবলেট ওষুধ
সুমাট্রিপটান এই ওষুধটা মূলত যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে বা মাথাব্যথা তাদের
মাথাব্যথা দ্রুত ভালো করে থাকে। এই ওষুধটা অনেক ভালো মানের একটি ওষুধ। যেটা
খাওয়ার পর আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা রক্ত নালীগুলোকে সংকোচন করে মাথার ব্যথা
কমাতে সাহায্য করে। এই ওষুধটি Triptan গ্রুপের একটি ওষুধ।
এই ওষুধটা সাধারণ যাদের মাথা ব্যথা বা ঠান্ডা জনিত মাথাব্যথা করে তাদের জন্য কাজ
করে না। এই ওষুধটা মূলত যাদের চোখ বা কপালের পাশে হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা শুরু হয়।
তাদের জন্য ভালো কাজ করে থাকে। এই ওষুধটা আপনি যখন মাইগ্রেনের সমস্যা বা
মাথাব্যথা সমস্যা শুরু হবে। তখনই ৫০ এমজি বা ১০০ এমজির একটি ট্যাবলেট খেয়ে নিতে
পারেন।
প্রয়োজনে আপনি এই ওষুধটি দুই ঘন্টা পর আরও একটি খেতে পারেন। এই ওষুধটি শুধুমাত্র
মাইগ্রেন হয় তখনই খেতে হয় নিয়মিত এটি খাওয়ার জন্য নয়। যাদের হার্টের সমস্যা
উচ্চ রক্তচাপ লিভার এবং কিডনির সমস্যা আছে। তাদের জন্য এই ওষুধটি বিপদজনক হতে
পারে।
গর্ভবতী নারীদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটা খাওয়া উচিত নয়। এই ওষুধটি খাওয়ার
পর যদি বুকে চাপ বা ব্যথা, মাথা ঘোরা, ঘুম ঘুম ভাব এবং পেট
ব্যথা ও বমি হয় তাহলে ওষুধটি সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে এবং
ডাক্তারকে দেখাতে হবে।
৯/রিজাট্রিপটান (Rizatriptan) ট্যাবলেট ওষুধ
রিজাট্রিপটান ট্যাবলেটিও সুমাট্রিপটান ওষুধের মতই মাইগ্রেনের বা মাথাব্যথা কমানোর
জন্য কাজ করে থাকে। এই ওষুধটাও প্রচন্ড মাইগ্রেনের সমস্যা যখন হবে সাথে সাথে একটি
ট্যাবলেট খেয়ে নিতে পারেন এতে আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা দ্রুত কমে যাবে। এই
ওষুধটি নিয়মিত খাওয়ার জন্য না শুধুমাত্র মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথার সমস্যা যখন
হবে তখন ওই খাওয়া উচিত। তবে এই ওষুধটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের
পরামর্শ নিবেন।
১০/এরগোটামিন (Ergotamine) ট্যাবলেট ওষুধ
যাদের অনেক পুরনো মাইগ্রেনের বা ক্লাসটার হেডেকের সমস্যা আছে। তারা মূলত এই
এরগোটামিন ওষুধটি ব্যবহার করে থাকে। তবে এই ওষুধটি অনেক পুরনো হওয়ার কারণে এবং
এই ওষুধটির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকার কারণে। এটার ব্যবহার অনেক কম হয় এখন।
এটার বিকল্প হিসেবে রিজাট্রিপটান এবং সুমাট্রিপটান ওষুধটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এরগোটামিন ওষুধটি সাধারণত মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথার সময় ১ এমজির ট্যাবলেট
দিনে তিনটা খাওয়া যেতে পারে। এই ওষুধটি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ছয় টা খাওয়া
নিরাপদ। অবশ্যই খাবারের পর ওষুধটি খেতে হবে। যদি এই ওষুধটি দীর্ঘ সময়
ধরে ব্যবহার করা হয়। সেক্ষেত্রে এটা শরীরের জন্য অনেক বিপদজনক। কারণ এই ওষুধটি
শরীরে রক্ত প্রবাহের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এটার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যেমন বুকে ব্যথা করা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া,
আঙ্গুল ও পায়ের রক্ত চলাচল কমে যাওয়া সহ বমি ও মাথা ঘোরা। দীর্ঘদিন ধরে এই
ওষুধটি খাওয়া হলে শরীরের রক্ত চলাচল কমে যায় এবং শরীরের টিস্যু মারা পর্যন্ত
যেতে পারে। তাই এই ওষুধটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ
নিয়ে খেতে হবে। আর যদিও খাওয়া প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে
এবং কম পরিমাণে খেতে হবে।
হোমিওপ্যাথিক মাথাব্যথা কমার দশটি ওষুধের নাম
বর্তমান সময়ে এলোপ্যাথি ওষুধের থেকে হোমিও ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হিসেবে
কাজ করে। এলোপ্যাথি ওষুধ শরীরের অনেক সমস্যা তৈরি করে কিন্তু হোমিও ওষুধ সেরকম
কোন শরীরের ক্ষতি করে না বরং আস্তে আস্তে রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। মাথা ব্যথার
জন্য এখন আমি দশটি ওষুধের নাম বলবো যেটা মূলত রোগের লক্ষণ অনুযায়ী ব্যবহার করা
হয়ে থাকে।
মাথা ব্যথার কমানোর জন্য দশটি হোমিও ওষুধের নাম
- বেলাডোনা (Belladonna) এই ওষুধটা মূলত হঠাৎ করে যাদের অনেক মাথাব্যথা এবং শরীর গরম হয়ে যাওয়া সহ চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং শরীরে ব্যথা করে তাদের জন্য অনেক উপকারী একটি হোমিও ওষুধ। এই ওষুধটি ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যই একজন হোমিও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।
-
নক্স ভমিকা (Nux Vomica) এই ওষুধটার কাজ মূলত যাদের গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা রয়েছে, অতিরিক্ত চিন্তা করে এবং রাত জেগে মাথাব্যথা সমস্যা
সৃষ্টি হয়। তাদের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- নেট্রাম মুরিয়েটিকাম এই ওষুধটা যাদের সূর্য তাদের মাথাব্যথা হয় এবং মাইগ্রেনের সমস্যা আছে এসব ব্যক্তিরা এই ওষুধটি খেতে পারেন।
- যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে যেমন চোখ থেকে শুরু করে পুরো মাথায় ব্যথা ছড়ায়। তাদের জন্য Sanguinaria Canadensis এই ওষুধটা অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে থাকে।
-
যাদের দুঃখের কারণে এবং মানসিক আঘাত ও আবেগের কারণে মাথাব্যথা হয় তাদের জন্য
ইকনেসিয়া ওষুধটি অনেক ভালো ও কার্যকর।
-
মাথা ব্যথার জন্য বা মাইগ্রেনের সমস্যার জন্য ব্রায়োনিয়া আলবা এই
হোমিও ওষুধটি অনেক উপকারী।
-
মাথাব্যথা সহ লিভারের সমস্যা ভালো করার জন্য চেলিডোনিয়াম এই হোমিও ঔষধ
টি অনেক ভালো।
-
পরীক্ষার জন্য চাপ অথবা উদ্বেগজনিত মাথাব্যথা, মাথার পেছনে বা কানের
সাইডে ব্যথা কমানোর জন্য সবথেকে ভালো হোমিও ওষুধটি
হচ্ছে আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম।
-
যদি ঘুমের ঘাটতি বা ক্লান্ত হওয়ার কারণে এবং রাত জাগার কারণে মাথা ব্যথা
হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কোকুলাস ইন্ডিকাস এই হোমিও ওষুধটি এই ব্যথা
কমাতে অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে থাকে।
-
মাথা ভারি লাগা মাথার পেছনে বা ঘারে ব্যথা ঠান্ডা লাগা থেকে শুরু করে যেটা
মাথা ব্যথার সমস্যা তৈরি করে সেই ব্যথাকে ভালো করার জন্য চিলিসিয়া টেরা এই
ওষুধটি ভালো।
উপরে আমি মাথা ব্যথার জন্য যে ১০ টি হোমিও ওষুধের নাম বললাম। সেগুলো আপনার
সমস্যা অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে আপনার কি সমস্যা হচ্ছে বা কি রকম
সমস্যা থেকে মাথা ব্যথা হচ্ছে। সেগুলোর জন্য অবশ্যই আপনি একজন ভালো হোমিও
চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভালো হবে। উপরে আমি যে ওষুধ গুলোর নাম বললাম এগুলো
খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন তারপর এই ওষুধগুলো
ব্যবহার করবেন।
মাথা ব্যথা কমানোর দোয়া
মাথা ব্যথা কমানোর জন্য কোরআনে এমন কিছু দোয়া রয়েছে। যেগুলো পড়ার পর মাথা
ব্যথা অনেকটাই কমে থাকে। এমনকি অনেকেই মাথা ব্যথায় এই দোয়াটি পড়ে থাকে। এই
দোয়াটি পড়ার সময় অবশ্যই মাথায় ডান হাত রেখে তিনবার এই দোয়াটি পড়তে হবে।
দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ হচ্ছেঃ (লা ইউসাদ্দাউনা আনহা ওয়া লা ইয়ুংযিফুন)
সুরা(৫৬) ওয়াকিয়া আয়াত ১৯।
মাথা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
মাথা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে এখন আমি আপনাদের জানাবো। তাই আপনি যদি
মাথা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে অবশ্যই আমার এই
পোস্টটি প্রথম থেকে মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। চলুন তাহলে ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে আপনি
মাথা ব্যথা কমাবেন সেগুলো জেনে নিই।
- আপনি যদি মাথা ব্যথার জন্য ঘরে বসে আদা চা বানিয়ে খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার মাথা ব্যথা কমানোর জন্য এই আদা চা ভালো কার্যকর হিসেবে কাজ করবে। আদা চা মাইগ্রেনের সমস্যা এবং ঠান্ডা লাগার মত সমস্যা ও গ্যাস্ট্রিক জনিত মাথাব্যথায় অনেক উপকারী। এই আদা চা আপনি এক চামচ আদা দিয়ে এক থেকে দুই গ্লাস পানিতে আদা কুচি করে দিয়ে চা বানিয়ে দিনে দুই তিনবার খেলে মাথা ব্যথা সমস্যা দূর হয়।
-
শরীরে পানির ঘাটতি থাকলে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই পানির ঘাটতি পূরণ
করতে হবে দিনে অন্তত 8 থেকে 10 গ্লাস পানি পান করতে হবে গরমের
সময় পানি খাওয়ার পরিমাণ আরেকটু বেশি করতে হবে। কারণ হাইড্রেশন
মাথাব্যথার দায়ী।
-
মাথা ব্যথা কমানোর জন্য পুদিনা পাতার রস অনেক উপকারী। আপনি
মাথা ব্যথা কমানোর জন্য পুদিনা পাতার রস অথবা পুদিনা পাতার চা করে
খেতে পারেন।
-
অনেক সময় ঘুম কম হওয়ার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। তাই মাথা ব্যথা
হলে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। এতে করে
মাথা ব্যথা অনেকটাই কম হয়ে যায়।
-
অনেকে আছে যাদের মাথা ব্যথা করলে সেসময় এক কাপ চা বা কফি খেলে
মাথাব্যথা কম হয়ে থাকে। তাই আপনার যদি মাথা ব্যথা হয় তাহলে অবশ্যই
এক কাপ চা বা কফি খাবেন।
দীর্ঘদিন মাথা ব্যাথার কারণ কী হতে পারে
দীর্ঘদিন ধরে যদি মাথাব্যথা থাকে তাহলে সেটা কোন ছোটখাটো বা সাধারণ ব্যাপার না।
এটার কারণ হতে পারে অনেক রকম শারীরিক ও মানসিক। যদি মাথা ব্যথা প্রতি মাসে ১৫
বা তার থেকে বেশি হয় এবং এই ব্যথা তিন মাসের বেশি দিন ধরে যদি থাকে। এইসব মাথা
ব্যথাগুলোকে সাধারণত ডাক্তাররা বা চিকিৎসকরা বলে থাকে ক্রনিক হেডেক।
দীর্ঘদিন মাথা ব্যথার কারণ গুলো হতে পারে মাইগ্রেনের সমস্যা, টেনশন হেডেক,
চোখের সমস্যা সাইনুস হেডেক, গ্যাস ও হজমের সমস্যা থাকলে, ঘুম কম হওয়া বা
অনিয়মিত জীবন যাপন করলে, হরমোনের পরিবর্তন ঘটলে, উচ্চ রক্তচাপ এবং নিম্ন
রক্তচাপের সমস্যা হলে অথবা মস্তিষ্কের মধ্যে অনেক গুরুতর সমস্যা থাকলে দীর্ঘদিন
ধরে মাথা ব্যথা হতে পারে।
আপনার যদি এই ব্যথা প্রতিদিন হয়, ব্যথা অনেকক্ষণ ধরে থাকে, এই ব্যথার সাথে
চোখে ঝাপসা দেখা এবং বমি ও জ্বর থাকে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যায়, ব্যথার ধরন
হঠাৎ যদি বদলে যায়। তাহলে অবশ্যই আপনাকে দ্রুত একজন ভালো ডাক্তারকে দেখাতে হবে
এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। আশা করছি যে উপরের আলোচনা থেকে আপনি জানতে
পেরেছেন যে দীর্ঘদিন মাথা ব্যথার কারণ কি হতে পারে।
আঘাত জনিত ব্যথার ঔষধ কি
আঘাত জনিত ব্যথার ওষুধ কি এটাও অনেকজনেরই আছেন যারা জানতে চেয়েছেন। মাথা
ব্যথার ওষুধ যেগুলো উপরে আমি আলোচনা করেছি। মুলত সেগুলোই আঘাত জনিত ব্যথার
ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তারপরেও আঘাত জনিত ব্যথার জন্য আমি কিছু এলোপ্যাথি ওষুধের নাম বলছি যেগুলো
আপনি আঘাত জনিত ব্যথার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। ডিক্লোফেনাক এই ওষুধটি আপনি
ব্যথা এবং ব্যথা অংশ ফোলা কমায়, কেটোরোলাক এই ওষুধটা বড় ধরনের আঘাত। যেমন
অপারেশনের পর যে ব্যথা থাকে। সেই ব্যথার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ অমিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতা
আইবুপ্রোফেন এই ওষুধটিও আঘাত জনিত ব্যথার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে এটি
অনেক উপকারী।তবে এইসব ওষুধ বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ এসব ওষুধ বেশি
ব্যবহার করলে, সেটা কিডনি এবং লিভারের অনেক ক্ষতি করতে পারে। অবশ্যই এই
ওষুধগুলো ব্যবহার পূর্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করবেন।
লেখকের মন্তব্যঃ মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম
মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি ঔষধের নাম সম্পর্কে আমি আমার আর্টিকেলের মধ্যে
বিস্তারিত ভাবে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। আশা করছি আমার এই আর্টিকেলটি
পড়ার পর আপনি মাথা ব্যথা কমানোর ১০ টি ওষুধের নাম সহ মাথা ব্যথা কমানোর
ঘরোয়া উপায় ও মাথাব্যথা কমানোর দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আপনি যদি এই আর্টিকেলটি পড়ার পর উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এই
আর্টিকেলটি আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকেও জানার সুযোগ
করে দিবেন। তাছাড়া আপনার যদি আমার এই আর্টিকেলটি নিয়ে কোন প্রশ্ন বা মতামত
থাকে অথবা আপনি যদি নতুন কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে সেটা আপনি
আমাদের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।
অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url