অমিডন খেলে কি মোটা হয় জানুন বিস্তারিত

অমিডন খেলে কি মোটা হয় এই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই আছেন যারা জানেন না। তাই আজ আমি আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে অমিডন সিরাপ কিসের ঔষধ, অমিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতা, অমিডন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
অমিডন-খেলে-কি-মোটা-হয়
আপনি যদি অমিডন ট্যাবলেট এর কাজ কি জানতে চান। তাহলে অবশ্যই আমার এই পোষ্টটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক অমিডন কখন খাওয়া উচিত এবং অমিডন বেশি খেলে কি হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য।

পেজ সুচিপত্রঃ অমিডন খেলে কি মোটা হয়

অমিডন খেলে কি মোটা হয়

অমিডন খেলে কি মোটা হয় এ বিষয়ে আপনারা অনেকেই আছেন যারা জানতে চেয়েছেন। তাই এখন আমি আপনাদের এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দিবো। যে আসলে কি অমিডন খেলে মোটা হওয়া যায় কিনা।অমিডন হচ্ছে একটা ওষুধ যেটা আমাদের হজমের সমস্যার জন্য ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও এটা পেটের গ্যাসের সমস্যা থাকলে এবং বমি বমি ভাব এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। অনেক জনই আছে যারা মনে করে যে অমিডন খেলে মোটা হওয়া যায়। কিন্তু আসলেই কি অমিডন খেলে মোটা হওয়া যায়। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হবে যে অমিডন খেলে সরাসরি মোটা হওয়া যায় না। তবে কিছু কারণে অমিডন খেলে কিছু লোকের ওজন বৃদ্ধির হতে পারে।

কারণ অমিডন ওষুধ হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।যার কারণে খাবারের প্রতি প্রচুর পরিমাণে রুচি আসে। এই রুচি বাড়ার কারণে তখন খাওয়াও হয় বেশি। যার কারণে আস্তে আস্তে ওজন বাড়তে শুরু করে বা বেড়ে যায়। শিশুর ওজন বাড়ানোর জন্য সাময়িকভাবে অমিডন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে অনেক চিকিৎসক।

বিশেষ করে শিশুদের খাবারের প্রতি রুচি আনার জন্য এই ওষুধ দিয়ে থাকে। তবে এটা নিয়মিত ব্যবহারের জন্য না। এক কথায় বলা যায় যে অমিডন ওষুধ যদি খাওয়া হয়। সেটা সরাসরি ওজন বাড়ায় না বরং এটা পরোক্ষভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। আশা করছি আপনি উপরের আলোচনা থেকে অমিডন খেলে কি মোটা হয় এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

অমিডন সিরাপ কিসের ঔষধ

অমিডন সিরাপ কিসের ঔষধ এটা হয়তো অনেকেই আছেন যারা জানেন না। তাই এখন আমি আপনাদের জানাবো যে অমিডন সিরাপ আসলে কিসের ওষুধ। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নিই যে অমিডন সিরাপ কিসের ওষুধ। অমিডন সিরাপ টি হচ্ছে পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়াকে ভালো রাখার জন্য এবং বমি বমি ভাব কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

অমিডন সিরাপটি হচ্ছে হজমের সহায়ক একটি ওষুধ। এই অমিডন সিরাপটি Domperidone ওষুধ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। এই সিরাপটি বিশেষ করে যাদের বমি বমি ভাব আছে এবং পেটে হজমের সমস্যা আছে, খাবারে অরুচি আছে এবং যেসব বাচ্চারা খেতে চায় না বা ওজন কম।

তাদের রুচি বৃদ্ধি করার জন্য এই অমিডন সিরাপটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এক কথায় বলা যায় যে এই অমিডন সিরাপ হচ্ছে হজম শক্তি বৃদ্ধি এবং খাবারের রুচি আনার জন্য এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা ভালো করার জন্য এই ওষুধটি কাজ করে।আশা করছি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি অমিডন সিরাপ আসলে কিসের ওষুধ সেটা জানতে পেরেছেন।

অমিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতা

আপনারা অনেকেই আছেন যারা অমিডন ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন ঠিকই কিন্তু অমিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাই আপনাদের জন্য আমি এখন আমার আর্টিকেলের মধ্যে অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন তাহলে আর দেরি না করে এই ট্যাবলেট এর উপকারিতা জেনে নেওয়া যাক।

অমিডন ট্যাবলেট সাধারণত যাদের হজমের সমস্যা আছে এবং খাওয়ার প্রতি অরুচি আছে তাদেরকেই চিকিৎসক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। যাতে করে এটা হজমে সাহায্য করে এবং খাওয়ার প্রতি রুচি নিয়ে আসে। এই ওষুধটির অনেক উপকারিতা আছে সেগুলো হলোঃ
  • যাদের বমি বমি ভাব আছে এবং বমির সমস্যা রয়েছে। তারা যদি এই অমিডন ট্যাবলেট টি খায়। তাহলে এই ওষুধটি শরীরের মধ্যে গিয়ে শরীরের এমন অংশের কাজ করে। যেখান থেকে বমির সংকেত মস্তিষ্কে যায়। এই ওষুধটি ওই সংকেতটাকে বন্ধ করে দেয়। যার কারণে বমি বমি ভাব হওয়া কমে যায়। যাদের প্রচুর পরিমাণে বমি হয়, তাদের বমি বন্ধ হয় এবং শারীরিক যে অস্বস্তি হয় সেটা অনেকটাই কমে যায়।
  • আমিডন ট্যাবলেট হজম প্রক্রিয়াকে ভালো করে। যাদের পাকস্থলীতে অনেকক্ষণ ধরে খাবার আটকে থাকে তখন সেটা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। এর কারণে পেটের মধ্যে গ্যাস তৈরি হয়, পেট ভরা লাগে এবং পেটে অস্বস্তি শুরু হয়। অমিডন ট্যাবলেট পাকস্থলীর গতি বাড়াই এবং খাবারকে দ্রুত অন্ত্রের দিকে নিয়ে যায়। এর এর ফলে পেটের খাবার দ্রুত হজম হয়, পেটে গ্যাস হয় না এবং খাওয়ার পর পেট হালকা লাগে।
  • যাদের পেট ফাঁপা, পেট ভারী লাগা পেটে গ্যাস তৈরি হওয়া এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যায় অমিডন ট্যাবলেটি অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। যদি অমিডন ট্যাবলেটটি খাওয়া হয়। তাহলে এটা পেটের ফাঁপা ও পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করে, পেটের যে অস্বস্তি তৈরি হয়। সেটাকে দূর করে এবং পেটকে হালকা ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে থাকে। যাদের গ্যাস জনিত সমস্যা রয়েছে তারা যদি এই অমিডন ট্যাবলেটটি খায়। তাহলে পেটের এই সমস্যাগুলো ভালো হয়ে যায়।
  • অমিডন ট্যাবলেট যারা শিশু এবং দুর্বল রোগী আছে তাদেরকে চিকিৎসক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কারণ অনেক সময় অনেক জন আছে। যাদের হজমের সমস্যা হওয়ার কারণে খাওয়ার প্রতি অরুচি চলে আসে বা খাওয়ার প্রতি ইচ্ছা থাকে না। আর এই খাওয়া কমে যাওয়ার কারণে দিন দিন শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এই অমিডন ট্যাবলেট টি খেলে পেটে হজমের সমস্যা ভালো করে এবং খাবারের উপর রুচি নিয়ে আসে। তাই বলা যায় অমিডন ট্যাবলেট টি ক্ষুধা বৃদ্ধি করে থাকে।
  • যাদের খাবার খাওয়ার পর বুকের মধ্যে জ্বালাপোড়া করে এবং পেটের এসিড গলার দিকে উঠে আসে তাদের অমিডন ট্যাবলেটটি অনেক উপকারী। কারণ অমিডন ট্যাবলেটটি খাওয়ার পর সেটা পাকস্থলীর উপরের অংশে থাকা মাংসপেশির চাপ কমাই দেয় এবং পাকস্থলীর খাবার গুলোকে নিচে নামিয়ে দেয়। যার কারণে এসিড গলায় উঠে আসার মত সমস্যা এবং বুক জ্বালাপোড়া করার মতো সমস্যা গুলোকে ভালো করে দেয়। যাদের এসিড রিফ্লাক্স এর সমস্যা রয়েছে। তারা এই অমিডন ট্যাবলেটটি খেতে পারেন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
  • অমিডন ট্যাবলেটটি কেমোথেরাপি সহ আরো অন্যান্য ওষুধ জনিত বমি ভাব হয় সেটাকে রোধ করতে সাহায্য করে। কারণ অমিডন শরীরের মধ্যে হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং মস্তিষ্কের মধ্যে বমি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে কাজ করে থাকে। এতে বমি বমি ভাব কমে যায় এবং পাকস্থলী খালি হয়ে স্বস্তি ফিরে আসে।
  • অনেকের মাইগ্রেনের সমস্যায় বমি বমি ভাব অনুভব করে থাকে এ সময় অমিডন ট্যাবলেট খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • আমিডন ট্যাবলেট স্তন্যদাঙ্কারী মায়েদের শরীরের মধ্যে প্রোল্যাকটিন হরমোনকে বাড়িয়ে দিয়ে বুকের দুধ বাড়াতে সাহায্য করে।
আশা করছি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি অমিডন ট্যাবলেটের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

অমিডন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অমিডন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। তাই চলুন জেনে নিই যে অমিডন খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে সেগুলো সম্পর্কে। অমিডন ওষুধ অনেক উপকারী হলেও এটির কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে এ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো সবার ক্ষেত্রে নাও হতে পারে।

এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো সাধারণত যেসব কারণে দেখা দেয়, সেটা হচ্ছে টানা অনেকদিন কোন নিয়ম ছাড়া এবং পরিমাণ অনুযায়ী না খেলে অথবা এটা ভুল ডোজে গ্রহণ করলে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যদিও এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো সবার ক্ষেত্রে হয় না। তারপরেও কিছু লোকের ক্ষেত্রে যেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো দেখা যায় সেগুলো হচ্ছে।
  • অমিডন ওষুধ বমি বমি ভাব দূর করার জন্য উপকারী হলেও। অনেক সময় এটা খাওয়ার পর অনেকের বমি বমি ভাব বা হালকা বমি হতে পারে।
  • কিছু মানুষের ক্ষেত্রে অমিডন ওষুধ খাওয়ার পর মাথা ঘোরার মত সমস্যা এবং শরীরে একটা ঝিমঝিম ভাব তৈরি করতে পারে।
  • এটা খাওয়ার পর পেট ব্যথা বা পেটের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে। তবে এটা সবার ক্ষেত্রে হয় না।
  • মুখ শুকিয়ে যাওয়ার মত সমস্যা হতে পারে।
  • অমিডন স্বাস্থ্যের জন্য এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যার জন্য একটি উপকারী ওষুধ হলেও। কিছু লোকের ক্ষেত্রে এটি ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  • এটি খাওয়ার পর অতিরিক্ত ঘুম ভাব তৈরি হয়।
উপরে যেগুলো আলোচনা করলাম আপনাদের সাথে। সেগুলো সাধারণত কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে এবং ভুলডোজে ওষুধ খেলে বা ওষুধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম না মেনে খেলে এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো দেখা দিতে পারে। তবে এগুলা বাদেও আরো কিছু গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যদিও এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না তার পরে ও খেয়াল রাখতে হবে। গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো হলো। 
  • হৃদয় স্পন্দন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে।
  • বুক ধরফর এবং অস্বস্তি হতে পারে।
  • অমিডন যদি দীর্ঘদিন ধরে খাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের মধ্যে ডোপামিন কমে যেতে পারে এবং হাত কাঁপা চলাফেরার সমস্যা তৈরি হতে পারে।
  • মেয়েদের স্তনের দুধ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে এবং অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
  • অনিয়মে যদি খাওয়া হয় তাহলে এটা শিশুদের শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত উত্তেজনা তৈরি করতে পারে এবং ঘুম স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হতে পারে।
অমিডন একটি উপকারী ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটার মূলত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার কারণ হচ্ছে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই দীর্ঘ মেয়াদে যদি এটি খাওয়া হয়। তারপর সঠিক নিয়ম ছাড়া এটা ব্যবহার করলে এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো দেখা দিতে পারে।

যদি অমিডন খাওয়ার পরে উপরের উল্লেখিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো দেখা দেয়। তাহলে অবশ্যই সাথে সাথে অমিডন খাওয়া বন্ধ করে।একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আশা করছি উপরের আলোচনা গুলো থেকে আপনি অমিডনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। তাই আর দেরি না করে চলুন অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার সঠিক নিয়ম জেনে নেওয়া যাক। এই ওষুধটি সাধারণত ভারী কিছু খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খাওয়া উচিত।

এই ওষুধটি দিনে দুইবার থেকে তিনবার খেতে পারেন যেমন সকাল, দুপুর এবং রাতে। এই ট্যাবলেটটি এক গ্লাস পানি দিয়ে গিলে খেতে হবে। শিশুদের জন্য অমিডন সিরাপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাদের খাওয়ার নিয়মটা সাধারণত তাদের বয়স এবং ওজনের ওপর নির্ধারণ করে চিকিৎসক পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে এটি বাচ্চাকে খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।

অমিডন ট্যাবলেট টি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সাধারণত নির্ভর করে রোগীর বয়সের উপর, শরীরের ওজন দেখে, কোন সমস্যার জন্য ওষুধটি খাওয়া হচ্ছে সেটা নির্ধারণ করে এবং অন্য ওষুধের সাথে অমিডন ট্যাবলেটটি ব্যবহার হচ্ছে কিনা সেই দিকটি খেয়াল রেখে। তাই অমিডন ট্যাবলেট টি নিজে নিজে খাবার থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।

এই অমিডন ট্যাবলেটটি একেবারেই খালি পেটে খাওয়া যাবেনা, এই ওষুধটি খাওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন নির্দিষ্ট সময় মেনে খাওয়া হয়। যাতে করে শরীরে ওষুধের প্রভাব স্বাভাবিক থাকে।এই ওষুধটি দীর্ঘ সময় ধরে খাওয়া উচিত নয়। যেমন ৮ থেকে ১০ দিনের বেশি খাওয়া এটা বিপদজনক হতে পারে। এই ওষুধটি খেতে খেতে হুট করে বন্ধ করে দেওয়া যাবে না।
এই ওষুধটি আস্তে আস্তে খাওয়া বন্ধ করতে হবে। যদি নিজের ইচ্ছামতো এই ওষুধটি ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আপনার মধ্যে দেখা দিতে পারে। তাই  আমিডন ট্যাবলেটটি খাওয়ার আগে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। আশা করছি যে উপরের আলোচনা থেকে আপনি অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

অমিডন ট্যাবলেট এর কাজ কি

অমিডন ট্যাবলেট এর কাজ কি সেগুলো এখন আমি আপনাদেরকে আমার এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবো। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নিন যে অমিডন ট্যাবলেটের আসলে কাজটা কি। অমিডন অনেক উপকারী একটি ওষুধ। এটা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে ভালো করে এবং হজমে সাহায্য করে।

আবার বমি ভাব থাকলে বমি ভাব দূর করে। এই ওষুধটি আমাদের শরীরের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা ভালো করার জন্য কাজ করে। এই ওষুধের আসল কাজ হচ্ছে যাদের বমি বমি ভাব হয় এবং বমির সমস্যা রয়েছে তাদের বমি ভাব দূর করে। তারপর এই ওষুধটা হজম প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে দেয়, পেটের মধ্যে থাকা গ্যাস কমায় এবং পেটকে হালকা করতে সাহায্য করে।

খাবারের প্রতি অরুচি থাকলে খাবারের প্রতি রুজি বাড়িয়ে দেয়, খাবার বার বার গলায় উঠে আসার মত সমস্যা এবং বুক জ্বালাপোড়া করা ভালো করে। এটি মায়েদের বুকে দুধ বাড়াতে সাহায্য করে। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি ভালোভাবে জানতে পেরেছেন যে অমিডন ট্যাবলেট আসলে কি কাজ করে থাকে।

অমিডন কখন খাওয়া উচিত

অমিডন কখন খাওয়া উচিত এই বিষয়ে অনেকেই আপনারা জানতে চেয়েছেন। অমিডন কখন খেতে হয় এ সম্পর্কে অনেকেই জানে না। আসলে অমিডন ওষুধ খেতে হয় ভারি কিছু খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে। অমিডন যদি খাবারের ৩০ মিনিট পূর্বে খাওয়া হয়। তাহলে এটা পেটের মধ্যে হজম প্রক্রিয়াকে ভালো করে এবং পাকস্থলীর গতি বাড়িয়ে দেয়।

যাতে করে খাবার পর সেই খাবারগুলো সহজে হজম হতে পারে পেটের কোন সমস্যা ছাড়াই। এই ওষুধটি আপনি দিনে দুই থেকে তিন বেলা খেতে পারেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া সবথেকে ভালো হবে। কারণ এটা যদি নিজে নিজে খাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আশা করছি যে এই ওষুধটি কখন খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন।

অমিডন বেশি খেলে কি হয়

অমিডন বেশি খেলে কি হয় সে সম্পর্কে চলুন জেনে নিন এখনই। অমিডন যদি বেশি খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে এটা শরীরের মধ্যে অনেক রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন এটা যদি বেশি খাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে বুক ধড়ফড়ের মত সমস্যা এবং হৃদয় স্পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যেতে পারে। যার কারণে মাথা ঘোরার মত সমস্যা এবং শরীরের দুর্বল লাগা দেখা দিতে পারে।

অমিডন যদি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয়। তাহলে এটা হরমোনের মধ্যে সমস্যা করতে পারে বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে এটা মাথা ও নার্ভের ক্ষতি করতে পারে। এতে শিশুদের খিচুনি বা অতিরিক্ত উত্তেজনা তৈরি হতে পারে এবং হাত-পা কাঁপা শরীরে ব্যথা এবং শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। যদিও এটি হজমের জন্য একটি উপকারী ওষুধ।

তারপরেও যদি এটি বেশি খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে এটা হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। যেমন পেট ব্যথা, ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি অমিডন বেশি পরিমাণে খাওয়া হয়, তাহলে এটা আমাদের লিভার ও কিডনির উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সঠিক নিয়মে খেতে হবে। আশা করছি আপনি অমিডন বেশি খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

বাচ্চাদের অমিডন সিরাপ এর কাজ কি

বাচ্চাদের অমিডন সিরাপ এর কাজ কি এখন আমি এই বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। যা থেকে আপনারা জানতে পারবেন যে বাচ্চাদের জন্য অমিডন সিরাপ খাওয়ার কাজ কি সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক। অমিডন সিরাপটি মূলত শিশুদের জন্যই তৈরি করা হয়ে থাকে।

এটা শিশুদের শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে ভালো করে এবং বমি ভাব নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যেটা শিশুদের পেটের অস্বস্তি দূর করে থাকে।  এই অমিডন সিরাপটি যেসব শিশুর খাবারের প্রতি অরুচি, খাবার কম খায় এবং ওজন কম থাকে। সেসব শিশুদের খাবারের প্রতি রুচি নিয়ে আসার জন্য এবং ওজন ভালো করার জন্য ডাক্তার দিয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় অমিডন খাওয়া যাবে কিনা

গর্ভাবস্থায় অমিডন খাওয়া যাবে কিনা এই বিষয়টা অনেক গর্ভবতী নারী জানে না। তাই তাদের জন্য এখন আমি আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে গর্ভাবস্থায় অমিডন খাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে আলোচনা করবো। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় অমিডন খাওয়া যাবে কি সে সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমার এই আলোচনাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

গর্ভাবস্থায় একজন নারীর অমিডন খাওয়া পুরোপুরিভাবে নিরাপদ না আবার এটি যে একেবারেই খাওয়া যাবেনা সেটাও কিন্তু নয়। এটা যদি খাওয়ার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া যেতে পারে। এবার হয়তো আপনি ভাবছেন যে কেন এটা গর্ভাবস্থায় সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। আসুন তাহলে এ বিষয়টা আপনাকে ভেঙ্গে বলি।

এটা গর্ভাবস্থায় পুরোপুরি ভাবে নিরাপদ নয়। কারণ হচ্ছে অমিডনের মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো হরমোনের ভারসাম্য এবং হৃদয় স্পন্দনের ওপর প্রভাব ফেলে থাকে। যেটা গর্ভবতী মা এবং পেটে থাকা সন্তানের জন্য মোটেও ভালো নয়। গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে গর্ভাবস্থায় এই ওষুধটি খাওয়ার পর গর্ভে থাকা শিশুর হৃদযন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

আশা করছি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে কেন গর্ভাবস্থায় অমিডন খাওয়া পুরোপুরি ভাবে নিরাপদ নয়। এটা গর্ভাবস্থায় খাওয়া যেতে পারে। যখন গর্ভবতী মায়ের প্রচুর পরিমাণে বমির ভাব আসে তখন। তবে সেটা অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। তা না হলে এটা গর্ভবতী মা ও পেটে থাকা সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

অমিডন খেলে কি বুকে দুধ আসে

অমিডন খেলে কি বুকে দুধ আসে এই বিষয়টা আপনারা অনেকে আছেন যারা জানতে চেয়েছিলেন। তাই আমি এ বিষয়ে আপনাদের এখন বলবো যে অমিডন খাওয়া হলে বুকে দুধ আসে কিনা। আসলে সরাসরি বলতে গেলে অমিডন খেলে কিছু কারণে স্তনদানকারী মায়ের বুকে দুধ আসে।

কারণ অমিডন শরীরের মধ্যে এক ধরনের হরমোন বাড়ায় যেটার নাম বলা হয় প্রোল্যাকটিন। এই প্রোল্যাকটিন টি আসলে মায়ের বুকের দুধ উৎপাদনের জন্য দায়ী। এটা মস্তিষ্কের মধ্যে নিঃসরণ বাড়িয়ে থাকে যার কারণে স্তনের মধ্যে দুধ তৈরি পরিমান বাড়ে।

বিশেষ করে যেসব মায়েদের বুকে দুধ আসতে দেরি হয় বা কম পরিমাণে উৎপাদন হয় তাদের জন্য এটা উপকারী। তবে এটি নিজে নিজে খাওয়া নিরাপদ নয়। এই ওষুধটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক নিয়মে খেতে হবে। আশা করছি যে উক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন যে অমিডন খেলে কি বুকে দুধ আসে।

অমিডন ট্যাবলেট এর দাম কত

অমিডন ট্যাবলেট এর দাম কত এটা নিয়ে এখন আমি আপনাদেরকে বলবো। যাতে করে আপনারা অমিডন ট্যাবলেট এর সঠিক দাম জানতে পারেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক অমিডন ট্যাবলেট এর বর্তমান দাম সম্পর্কে। বর্তমানে অমিডন ট্যাবলেটের দাম প্রতি পিচ প্রায় ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা।
অমিডন ট্যাবলেটটি আপনি যদি এক স্ট্রিপ নিতে চান সেক্ষেত্রে এটার দাম ৭৫ থেকে ৫৩০ টাকার মধ্যে হতে পারে। এবার হয়তো আপনি ভাবছেন যে এই একই ওষুধের দাম ৭৫ থেকে ৫৩০ টাকা কেন আসুন এটা একটু ভেঙ্গে বলি। এই ওষুধটি অনেকগুলো কোম্পানি বানিয়ে থাকে। যার কারণে একাদ কোম্পানির ঔষধ একেক রকম দাম হয়ে থাকে।
আপনি যদি ইনসেপ্টা কোম্পানির অমিডন ১৫ নিতে চান। সেক্ষেত্রে দাম ৭৫ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে পেয়ে জাবেন। একই ওষুধ যদি আপনি একটু ব্র্যান্ড বা হাই কোয়ালিটির কোম্পানির নিতে যান। তাহলে এটার দাম একটু বেশি হতে পারে। তাছাড়া এই ওষুধের দামটি স্থান অনুযায়ী কম বা বেশি হতে পারে।আশা করছি যে আপনি অমিডন ট্যাবলেট এর দাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

লেখকের মন্তব্যঃ অমিডন খেলে কি মোটা হয়

অমিডন খেলে কি মোটা হয় এই বিষয়টা নিয়ে আমি আমার আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিতভাবে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। আশা করছি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার পর অমিডন ট্যাবলেট এর উপকারিতা সহ অমিডন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং অমিডন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যত তথ্য আছে সব জানতে পেরেছেন।

আপনি যদি এই আর্টিকেলটি পড়ার পর উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন। তাছাড়া আপনার যদি আমার এই আর্টিকেলটি নিয়ে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে অথবা আপনি যদি নতুন কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে সেটা আপনি আমাদের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url