গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা জানুন ডাক্তার কি বলে
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা এই সম্পর্কে এখন আমি বিস্তারিত আলোচনা
করবো আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে। এর পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
সম্পর্কেও আপনাদের জানাবো।
আপনি যদি তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে অবশ্যই আজকের এই
আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। চলুন গর্ভাবস্থায় তরমুজ সম্পর্কে বিস্তারিত
তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সুচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা
- গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা
- গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া কতটা নিরাপদ
- গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার নিয়ম
- তরমুজের বীজের উপকারিতা
- তরমুজের বীজের অপকারিতা
- তরমুজ খেলে কি গর্ভপাত হয়
- তরমুজের পুষ্টি উপাদান
- FAQ/তরমুজ সম্পর্কিত কিছু আলোচিত প্রশ্নের উত্তর
- তরমুজ খেলে কি হয়
- তরমুজ খেলে কি ওজন বাড়ে
- লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা এ বিষয়ে আপনারা অনেকেই আছেন যারা
জানতে চেয়েছেন। গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যায়, তবে সেক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে। গর্ভাবস্থায় সতর্কভাবে যদি তরমুজ খাওয়া হয়, তাহলে সেটা
গর্ভবতী মা এবং পেতে থাকা সন্তানের জন্য অনেক উপকারী। তরমুজের মধ্যে প্রায়
৯০% পানি থাকে, যেটা গর্ভবতী মায়ের শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরকে
হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের সকালবেলায় বমি বমি ভাব হয়। এই বমি বমি
ভাব কমাতে সাহায্য করে তরমুজ। তরমুজ যদি গর্ভাবস্থায় খাওয়া হয় তাহলে
সেটা বমি ভাব কমিয়ে মনকে এবং শরীরকে সতেজ অনুভূতি দিয়ে থাকে। তরমুজের
মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে এটা গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং
পেটের গ্যাস ভালো করে। গর্ভাবস্থায় শরীর অনেক ফুলে যায়।
তাই তরমুজ যদি গর্ভাবস্থায় খাওয়া হয়, তাহলে তরমুজে থাকা পানি শরীরের
মধ্যে থাকা খারাপ টক্সিন বার করতে সাহায্য করে। যার ফলে শরীরের ফোলা
ভাব কমে যায়। এছাড়াও তরমুজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে।
যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যেগুলো মা এবং পেটে থাকা সন্তানের শরীরের
জন্য অনেক উপকারী।
তবে এটি যদি গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত খাওয়া হয়, তাহলে উপকারের বদলে ক্ষতি
হতে পারে। যেমন অতিরিক্ত খেলে রক্তের মধ্যে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে
পারে। বিশেষ করে যেসব গর্ভবতী মায়েদের ডায়াবেটিস রোগ আছে তাদের জন্য এটি
ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এছাড়াও ফ্রিজে বা বেশি ঠান্ডা তরমুজ
গর্ভাবস্থায় না খাওয়াই ভালো এতে গর্ভবতী মায়ের সর্দি, ঠান্ডা এবং
পেট খারাপের মতো সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় তরমুজ বেশিক্ষণ কেটে না
রাখাই ভালো।
কারণ তরমুজ বেশিক্ষণ কেটে রাখলে সেটাতে ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হতে পারে।
যেটা গর্ভবতী মায়ের এবং পেটে থাকা সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে
পারে। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলার যদি তরমুজের প্রতি এলার্জি থাকে
অথবা তার যদি হজম শক্তি দুর্বল থাকে, তাহলে এটি না খাওয়াই
ভালো। তবে সবথেকে নিরাপদ হবে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের
পরামর্শ নেওয়া। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি গর্ভাবস্থায় তরমুজ
খাওয়া যায় কিনা এই বিষয়ে জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
আপনারা অনেকে আছেন যারা জানতে চেয়েছিলেন যে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি কি
উপকার পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া অনেক ভালো। এ সময়
যদি তরমুজ সঠিক নিয়ম মেনে খাওয়া যায়। তাহলে এটা থেকে গর্ভবতী নারী এবং
পেটে থাকা সন্তান ভালো উপকার পেয়ে থাকে। তবে অবশ্যই সেটা সঠিক পরিমাণ
অনুযায়ী খেতে হবে। চলুন তাহলে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে যত উপকার
পাওয়া যায় সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
- গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। যার কারনে মাথা ব্যাথার সমস্যা এবং শরীর সহজেই ক্লান্ত হয়ে যায়। এ সময় যদি তরমুজ খাওয়া হয়, তাহলে তরমুজ গর্ভবতী মহিলার শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখে। যার কারণে শরীরের ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীর থাকে সতেজ। তরমুজ শরীরের মধ্যে পানি এবং ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
- তরমুজ গর্ভবতী মায়ের মর্নিং সিকনেস এবং সকাল বেলায় বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে। সকালবেলায় যদি খালি পেটে তরমুজ খাওয়া হয় তাহলে সেটা গর্ভবতী মায়ের বমির ভাব এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। তরমুজের মিষ্টিও সতেজ স্বাদ গর্ভবতী মায়ের শরীরে মধ্যে একটা ফ্রেশ অনুভূতি তৈরি করে।
- গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার হজমে সমস্যা, গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় যদি তরমুজ খাওয়া হয়, তাহলে তরমুজে থাকা ফাইবার গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং এটা সহজে হজম হয়ে যায়। যার কারণে পেটে কোন গ্যাস হয় না এবং মল হয় নরম।
- গর্ভাবস্থায় মায়ের পা এবং হাত অতিরিক্ত ফুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যাগুলো ভালো করতেও তরমুজ অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। তরমুজের মধ্যে থাকা ৯০% পানি যেটা শরীরের মধ্যে থেকে অতিরিক্ত টক্সিন এবং পানি বের করতে সাহায্য করে। যার কারণে গর্ভবতী মায়ের পা হাত ফোলা অনেকখানি কমে যায়।
- গর্ভবতী মায়ের হাই ব্লাড প্রেসার থাকলে সেটা কমাতে সাহায্য করবে এই তরমুজ। কারণ তরমুজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক পটাশিয়াম থাকে। যেগুলো রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে উচ্চ ব্লাড প্রেসার এর ঝুঁকি থাকলে সেটা কমে যায়।
- গর্ভাবস্থায় যদি তরমুজ খাওয়া যায় তাহলে সেটা গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কাজ করে। তরমুজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। যেগুলো গর্ভবতী মায়ের শরীরে আয়রন শোষণ করতে সাহায্য করে। যার কারণে মায়ের শরীরের মধ্যে রক্তের ঘাটতি পূরণ করে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
- তরমুজ গর্ভবতী মা এবং পেটের সন্তানের ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ তরমুজের মধ্যে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকে। এইগুলো গর্ভবতী মায়ের শরীরের মধ্যে কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। যার কারণে মায়ের ত্বক ভেতর থেকে সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়। এমনকি পেটে থাকা সন্তানের ত্বকের, চুলের ও চোখের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
- তরমুজ পেটে থাকা সন্তানের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে। কারণ তরমুজের মধ্যে ভিটামিন এ থাকে প্রচুর পরিমাণে এর পাশাপাশি ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থেকে। এই উপাদানগুলো মূলত পেটে থাকা সন্তানের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র সহ তার ত্বকের এবং হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি হয় অনেক ভালো।
- গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়, এর মধ্যে একটি সমস্যা হচ্ছে মাংসপেশিতে টান ধরা। বিশেষ করে পায়ের রগে বা মাংসে টান ধরে বেশি। এই সমস্যা কমাতে তরমুজ অনেক উপকারী। তরমুজের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এই সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া উচিত।
- গরমকালে গর্ভবতী মহিলার হিট স্ট্রোকের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় তরমুজ হতে পারে অনেক উপকারী একটি ফল। গরমের সময় শরীরকে ঠান্ডা এবং সতেজ রাখার জন্য তরমুজ অনেক কার্যকারী একটি ফল। এই ফল যদি গরম কালে গর্ভাবস্থায় খাওয়া হয় তাহলে এটা গর্ববতী মহিলার শরীরকে ঠান্ডা এবং হিট স্ট্রোকের মতো সমস্যা থেকে রক্ষা করবে।
- তরমুজ গর্ভবতী মায়ের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তরমুজের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভবতী মহিলার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই তার পাশাপাশি বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে গর্ভাবস্থায় অসুখ বিসুখ কম হয়। এছাড়াও অনেক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, গর্ভাবস্থায় যদি তরমুজ খাওয়া হয় তাহলে সেটা প্রি টার্ম লেবারের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে।
-
গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা একটি কমন বিষয় এ সময় মূলত গর্ভবতী
মায়ের শরীরের হরমোনের পরিবর্তন হয় যার কারণে শরীর সহজেই অনেক
ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং ঘন ঘন মাথা ব্যথা করে। এ সময়
যদি তরমুজ খাওয়া হয় তাহলে তরমুজের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান
গুলো শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে এবং মাথা ব্যথার এই
সমস্যাগুলো ভালো করে দেয়।
গর্ভাবস্থায় আপনি যদি সঠিক নিয়ম মেনে এবং পরিমাণ অনুযায়ী তরমুজ খেতে
পারেন। তাহলে এটা আপনার এবং আপনার পেটে থাকা সন্তানের অনেক উপকার বয়ে
আনবে। তবে গর্ভাবস্থায় এই তরমুজ খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ
নিয়ে খাবেন। তাহলে এটি আপনার এবং আপনার পেটে থাকা সন্তানের জন্য আরো ভালো ও
নিরাপদ হবে। আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি গর্ভকালীন সময়ে তরমুজ খেলে
কি উপকার পাওয়া যায় এইগুলো ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া কতটা নিরাপদ
গর্ভাবস্থায় যদি সঠিক নিয়ম এবং পরিমাণ অনুযায়ী তরমুজ খেতে পারা যায়।
তাহলে এটা গর্ভবতী মা এবং সন্তানের জন্য অনেক নিরাপদ ও
উপকারী একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল হতে পারে। গর্ভাবস্থায় তরমুজ
খেলে সেটা গর্ভবতী মায়ের শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীর
হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজ শরীরের অতিরিক্ত পানি ইও টক্সিন বার করে দেয়। যার ফলে গর্ভবতী
নারীর হাত পা ফোলা কমে। এছাড়াও এটি গর্ভবতী মায়ের হজম প্রক্রিয়া
ভালো করে এবং পেটের গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গর্ভাবস্থায় তরমুজ
খাওয়া হলে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শিশুর সঠিক
বিকাশে গুরুত্ব রাখে।
তবে গর্ভাবস্থায় এটি অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। ফ্রিজে অতিরিক্ত ঠান্ডা করে
খাওয়া যাবে না এবং তরমুজ কেটে সেটা অনেকক্ষণ রাখা যাবে না। টাটকা
টাটকা কেটে তরমুজ খেতে হবে। তাহলে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া নিরাপদ
হবে। তবে সবথেকে বেশি নিরাপদ পাওয়া যাবে, যখন এটি আপনি খাওয়ার পূর্বে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে
বলবো। প্রথমে তরমুজটি ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
এরপর তরমুজটি কেটে খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় সকালে খালি
পেটে খুব বেশি তরমুজ না খাওয়াই ভালো। এতে পেটে গ্যাস, হজমের সমস্যা
এবং পেট ফাঁপার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
অবশ্যই এটি খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা
থেকে এক ঘন্টা পরে খাওয়া ভালো। সব থেকে ভালো হয় যদি এটা সকাল অথবা
দুপুরে খাওয়া হয়। এ সময় যদি তরমুজ খাওয়া হয় তাহলে তরমুজ গর্ভবতী
নারীর শরীরকে ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় তরমুজ টাটকা কেটে খাওয়া উচিত। বেশিক্ষণ কেটে রাখলে তরমুজের
ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হতে পারে। যেটা গর্ভ অবস্থায় স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ
হতে পারে। গর্ভাবস্থায় ফ্রিজে রাখা তরমুজ সরাসরি ঠান্ডা অবস্থায়
খাবেন না। এতে ঠান্ডা, জ্বর এবং সর্দি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
গর্ভবতী নারীর যদি ডায়াবেটিস থাকে। তাহলে তরমুজ খুব বেশি পরিমাণে না
খাওয়াই ভালো। একজন গর্ভবতী নারীর গর্ভাবস্থায় ১০০ থেকে ৩০০
গ্রাম তরমুজ খাওয়া নিরাপদ এর থেকে বেশি না খাওয়াই ভালো।
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে
খাওয়া উচিত।
তরমুজের বীজের উপকারিতা
আমরা অনেকে আছি যারা তরমুজের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। আর এই না
জানার কারণে আমরা অনেকেই তরমুজের বীজ ফেলে দিই। কিন্তু আমরা যদি জানতাম যে
তরমুজের বীজে কি উপকার পাওয়া যায়। তাহলে আমরা কখনোই তরমুজের বীজ ফেলে দিতাম
না। তরমুজের বীজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি
উপাদান।
তরমুজের বীজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে এছাড়াও এর
মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, পটাশিয়াম, মিনারেল,
ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন থাকে। যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চলুন তরমুজের বীজের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে
জেনে নেওয়া যাক।
- তরমুজের বীজ হজম শক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তরমুজের বীজের মধ্যে ডায়েটারি ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে। এইগুলো পেটের মধ্যে হজম প্রক্রিয়া বাড়ায় এবং পেটের খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে। ফলে পেটে গ্যাস হয় না মল নরম থাকে যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেটা কমে যায়।
- তরমুজের মধ্যে থাকা আয়রন জিঙ্ক ও ম্যাগনেসিয়াম হার্টকে সুস্থ রাখতে অনেক কার্যকারী অবদান রাখে। তরমুজের মধ্যে থাকা ও মেগা ৬ এবং উপকারী ফ্যাট শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে এবং ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যার কারণে হৃদ রোগের ঝুঁকি কম থাকে।
- তরমুজের ব্রিজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক ক্যালরি পাওয়া যায়। এছাড়াও এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং প্রোটিন থাকে প্রচুর পরিমাণে। যেগুলো শরীরের মধ্যে শক্তি উৎপন্ন করে এবং শরীরকে অনেক শক্তিশালী করে তোলে। তরমুজের বীজ খেলে শরীর থাকে সতেজ ও টাটকা। এটা মূলত যারা শারীরিক পরিশ্রম করে বা খেলাধুলা করে তাদের জন্য অনেক উপকারী। এটা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। ফলে কাজ ভালোভাবে করা যায় এবং কাজে মনোযোগ পাওয়া যায়।
- তরমুজের বীজ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তরমুজের বীজে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এই ম্যাগনেসিয়াম মূলত রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখতে কাজ করে থাকে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ এর সমস্যা আছে তারা তরমুজের বীজ খেতে পারেন।
- তরমুজের বীজের মধ্যে ম্যাঙ্গানিজ ফসফরাস ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে এটি শরীরের হাড় ও দাঁত শক্ত করে। যাদের হাড় ও দাঁত দুর্বল তাদের হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই তরমুজের বীজ। তাই তরমুজের বীজ ফেলে না দিয়ে এটি খাওয়া উচিত তাহলে এটা হাড়ের ও দাঁতের উপকারে কাজ করবে।
- তরমুজের বীজ ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অনেক কার্যকারী ভূমিকা রাখে। কারণ তরমুজের বীজের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি অনেক পাওয়া যায়। এগুলো ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও এটি ত্বকের ব্রণ, কালো দাগ এবং বয়সের ছাপ দূর করে। তরমুজের বীজ থেকে যে তেল তৈরি করা হয়। এই তেলটি ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক থাকে মশ্চারাইজ।
- অতিরিক্ত চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে তরমুজের বীজ অনেক উপকারী। তরমুজের বীজের মধ্যে কপার থাকে, প্রোটিন থাকে, আইরন থাকে এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যেগুলো চুলের গোড়াকে মজবুত করে যা অতিরিক্ত চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। যার কারণে চুল হয় চকচকে ও ঘন।
- এই বীজ শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই বীজের আয়রন ও জিংক রক্ত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যার কারণে বিভিন্ন সংক্রমণ এবং অসুখ থেকে শরীর থাকে সুরক্ষিত। যার কারণে সহজেই শরীরে অসুখ বিসুখ হয় না। বিশেষ করে সর্দি, কাশি, ঠান্ডা জনিত সমস্যাগুলো খুব কম হয়।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতেও তরমুজের বীজ অনেক উপকারী। তরমুজের বীজের মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এই ম্যাগনেসিয়াম রক্তের গ্লুকোজ কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কে রাখে স্বাভাবিক মাত্রায়। ফলে ডায়াবেটিসও থাকে নিয়ন্ত্রণে।
- তরমুজের বীজ কিডনির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এটি কিডনির উপর চাপ কমায় এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়। যা কিডনির জন্য অনেক উপকারী একটি প্রাকৃতিক উপাদান।
- তরমুজের বীজ পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তরমুজের বীজে জিঙ্ক থাকে আর এই জিংক থাকার কারণে এটা পুরুষের শুক্রাণুর মানকে উন্নত করে। যেটা পুরুষের প্রজনন ক্ষমতাকে বাড়াতে সাহায্য করে।
-
তরমুজের বীজ ফাইবার যুক্ত হওয়ায় এবং এর মধ্যে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর
ফ্যাট থাকার কারণে। এটা পেটকে অনেকক্ষণ ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। যার
কারণে অতিরিক্ত খিদা কম লাগে ফলে খাওয়াও কম হয়। যার কারণে ওজন আস্তে
আস্তে কমতে শুরু করে এবং ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে।
তরমুজের বীজের অপকারিতা
সাধারণত আপনি যদি পরিমাণ অনুযায়ী তরমুজের বীজ খান। তাহলে সেটা আপনার
স্বাস্থ্যের জন্য উপকার বয়ে আনবে। তবে এটি যদি আপনি ভুল নিয়মে
বা অতিরিক্ত খান, তাহলে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে
পারে। এটি বেশি পরিমাণে যদি খাওয়া হয়, তাহলে কি অপকারিতা পাওয়া যায়।
সেগুলো নিয়ে এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।
- বেশি যদি খাওয়া হয় তাহলে এটা হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং হজম শক্তি দুর্বল করে পেট ফাঁপা, পেটের মধ্যে গ্যাস হওয়া এমনকি ডায়রিয়ার মত সমস্যাও হতে পারে। যাদের হজম শক্তি আগে থেকেই অনেক কম তারা অতিরিক্ত এই বীজ খাবেন না।
- যাদের অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা আছে তাদের এই বীজ না খাওয়াই ভালো কারণ অতিরিক্ত যদি এ বীজ খাওয়া হয়, তাহলে এর মধ্যে থাকা ক্যালরি ও ফ্যাট শরীরের ওজনকে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই বীজ অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমাণে অল্প খাওয়ায় ভালো।
- যদিও তরমুজের বীজ কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায় তবে এটি যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে এটি কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে এটি কিডনি রোগী যারা তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই বীজ শরীরের মধ্যে এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যার কারণে ত্বকে চুলকানি লাল দাগ হয়ে যাওয়া এবং ফুসকুড়ি বার হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যাদের এই বীজে বা বীজ জাতীয় কোন খাবারে অ্যালার্জি আছে তারা এটি সতর্ক হয়ে খাবেন।
- তরমুজের বীজ পরিমাণে অল্প খেলে এটা ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এই বীজ যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয়, তাহলে এটা ডায়াবেটিস কে অনিয়ন্ত্রিত করে ফেলতে পারে। যেটা একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
- গর্ভবতী মায়েদের জন্য এটি খাওয়ার পূর্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত হবে কারণ। গর্ভবতী মায়েরা যদি এটি অতিরিক্ত খায় তাহলে এটা হজমের সমস্যা অথবা শরীরের মধ্যে এলার্জি দেখা দিতে পারে। তাই এটি খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তরমুজ খেলে কি গর্ভপাত হয়
তরমুজ খেলে কি গর্ভপাত হয় এই বিষয়ে অনেক গর্ভবতী মায়েরা আছে যারা জানতে
চায়। গর্ভাবস্থায় তরমুজ একটি উপকারী ফল হিসেবে কাজ করে। এটা গর্ভবতী মা
এবং পেটে থাকা সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। গর্ভাবস্থায় যদি
তরমুজ খাওয়া হয় তাহলে গর্ভবতী মায়ের অনেক সমস্যা আছে যেগুলো ভালো হতে
সাহায্য করে।
তাই বলা যায় যে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে গর্ভপাত হয় না বরং গর্ভাবস্থায় এটি
খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। তবে গর্ভাবস্থায় তরমুজ অতিরিক্ত না
খেয়ে পরিমাণ অনুযায়ী খেতে হবে এবং কিছু নিয়ম আছে সে নিয়মগুলো মেনে খেতে
হবে। তবে আমার পরামর্শ থাকবে যে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার
আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে উপরে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা এই সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ে আসতে পারেন।
তরমুজের পুষ্টি উপাদান
আপনারা যেন খুব সহজেই তরমুজের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানতে পারেন। তার
জন্য আমি নিচে সুন্দরভাবে আপনাদেরকে তরমুজের পুষ্টি উপাদান
গুলো উল্লেখ করছি। চলুন আর দেরি না করে তরমুজের মধ্যে যত
পুষ্টি উপাদান আছে সেগুলো জেনে নিই।
তরমুজের পুষ্টি উপাদান গুলো হচ্ছেঃ
তরমুজের পুষ্টি উপাদানের নাম | তরমুজের পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ |
---|---|
পানি | ৯০% |
ক্যালরি | ৩০ কিলো ক্যালরি |
কার্বোহাইড্রেট | ৭.৬ গ্রাম |
চিনি | ৬.৫ গ্রাম |
প্রোটিন | ০.৬ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.৩ গ্রাম |
ডায়েটারি ফাইবার | ০.৪ গ্রাম |
তরমুজের মধ্যে থাকা ভিটামিনের নামঃ
তরমুজের ভিটামিন এর নাম | ভিটামিনের পরিমাণ |
---|---|
ভিটামিন এ | ২৮ মাইক্রগ্রাম |
ভিটামিন সি | ৮.১ গ্রাম |
ভিটামিন বি ১ | ০.০৩৫ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি ২ | ০.০২৫ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি ৩ | 0.180 মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি ৫ | ০.২২২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি ৬ | ০.০৪৫ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি ৯ | ৪ মাইক্রগ্রাম |
তরমুজের মধ্যে থাকা খনিজ উপাদানের নামঃ
খনিজ উপাদানের নাম | খনিজ উপাদানের পরিমাণ |
---|---|
ক্যালসিয়াম | ৭ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.২৫ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ১০ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ১০ মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ১১১ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ১ মিলিগ্রাম |
জিংক | ০.১ মিলিগ্রাম |
FAQ/তরমুজ সম্পর্কিত কিছু আলোচিত প্রশ্নের উত্তর
এখন আমি আপনাদেরকে তরমুজ নিয়ে কিছু আলোচিত প্রশ্নের উত্তর দিবো। তাই
আর দেরি না করে চলুন সেই আলোচিত প্রশ্নের উত্তর গুলো জেনে নিন।
তরমুজের বিচি খেলে কি কোন ক্ষতি হয়?
- উত্তরঃ অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে তরমুজের বিচি খেলে কি কোন ক্ষতি হয়। এর উত্তর হবে না তরমুজের বিচি খেলে কোন ক্ষতি হয় না। বরং এটা যদি সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ অনুযায়ী খাওয়া হয়। তাহলে এটা থেকে ভালো উপকার পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত খেলে এর কিছু ক্ষতিকর দিক দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই কিডনির সমস্যা বা ডায়াবেটিসের সমস্যা অথবা এলার্জির সমস্যা আছে তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।
এক কেজি তরমুজে কত ক্যালরি থাকে?
- উত্তরঃ অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে এক কেজি তরমুজে কত ক্যালরি থাকে। সাধারণত একশ গ্রাম ক্যালরিতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কিলো ক্যালরি থাকে। যেটা ১ কেজিতে হিসাব করলে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ কিলো ক্যালরি হয়। তাই বলা যায় এক কেজি তরমুজে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ ক্যালোরি থাকে।
তরমুজের বীজ কিভাবে খেতে হয়?
- উত্তরঃ সাধারণত তরমুজের বীজ খাওয়ার সব থেকে জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে। এটি ভালোভাবে শুকিয়ে এটার গুঁড়ো করে খাওয়া। তবে এটি আপনি চা বানিয়েও খেতে পারেন অথবা এই বীজ আপনি ভেজেও খেয়ে খেতে পারেন।
তরমুজ খেলে কি মোটা হওয়া যায়?
- উত্তরঃ তরমুজ খেলে সাধারণত ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে। কারণ তরমুজের মধ্যে ফ্যাট অনেক কম থাকে এবং এটি খেলে পেটকে অনেকক্ষণ ভরিয়ে রাখে। যার কারণে অতিরিক্ত খিদা লাগে না ফলে ওজন কমতে সাহায্য করে। তাই বলা যায় তরমুজ খেলে মোটা করে না বরং ওজন কম করে।
প্রতিদিন এক কেজি তরমুজ খাওয়া যাবে কি?
- উত্তরঃ প্রতিদিন তরমুজ এক কেজি খাওয়া যাবে তবে অবশ্যই সেটা যেন একবারে না খাওয়া হয় এই ১ কেজি তরমুজকে দুই থেকে তিন ভাগে ভাগ করে নিতে হবে তারপর সেটি সময় অনুযায়ী ভাগ ভাগ করে খেতে হবে। তাহলে এটি আপনার কোন ক্ষতি করবে না তবে যাদের ডায়াবেটিস এর সমস্যা আছে এছাড়া অন্যান্য অসুখ বিসুখ আছে তারা এটি পরিমাণ অনুযায়ী খাবেন তা না হলে এটা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
তরমুজ খেলে কি হয়
আপনারা অনেকেই আছেন যারা জানতে চেয়েছেন যে তরমুজ খেলে কি হয়। তরমুজ
সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটা শরীরকে সতেজ ও টাটকা রাখতে ভালো
কাজ করে। এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক পুষ্টি গুনাগুন গুলো শরীরের বিভিন্ন
পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে। সেইসাথে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে শরীরকে রাখে
হাইড্রেট।
এর মধ্যে ফাইবার থাকার কারণে এটা ওজন কেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও
এটা ডাইবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের গ্যাস ও পেট
ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা গুলোকে কমাতে সাহায্য করে। তরমুজ
খেলে শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। চোখ ও ত্বকের
জন্যেও এটি অনেক উপকারী।
তরমুজ গর্ভবতী মায়েদের সকালের সিকনেস ও বমি বমি ভাব কমাতে ভালো কাজ
করে। এছাড়াও এর মধ্যে প্রাকৃতিক চিনি ও মিনারেল থাকে। যেগুলো
শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং শরীরকে দ্রুত শক্তি দিয়ে থাকে। আপনি যদি
সঠিক নিয়ম ও পরিমান অনুযায়ী তরমুজ খেতে পারেন। তাহলে এটা
আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনবে। আশা করছি আমার এই
আলোচনা থেকে আপনি তরমুজ খেলে কি হয় এ বিষয়ে জানতে পেরেছেন।
তরমুজ খেলে কি ওজন বাড়ে
তরমুজ খেলে কি ওজন বাড়ে এ বিষয়ে একটু আগে আমি উপরে আলোচনা করলাম। তার পরেও
আপনাদেরকে আরেকটু স্পষ্ট ভাবে বলি। তরমুজ সাধারণত কম ক্যালরি হওয়ার কারণে
এটা খেলে ওজন বাড়ে না বরং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
এর কিছু কারণ আছে সে কারণগুলো হচ্ছেঃ তরমুজের মধ্যে প্রায় ৯০% পানি থাকে
এবং ক্যালরি থাকে অনেক কম থাকে যা শরীরে চর্বি জমতে দেয় না। সেই সাথে এর
মধ্যে প্রাকৃতিক ফাইবার থাকে যেটা পেটকে অনেকক্ষণ ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। ফলে
অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
যার কারণে আস্তে আস্তে ওজন কমতে থাকে বা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনকি এর
মধ্যে প্রাকৃতিক চিনির পরিমানও তুলনামূলক ভাবে অনেক কম থাকে। যার কারণে মোটা
হওয়ার কোন চান্সই থাকে না। আশা করছি আপনি আমার এই আলোচনা থেকে তরমুজ
খেলে কি ওজন বাড়ে এ বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে জানতে পেরেছেন।
লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কিনা এই বিষয়ে আমি আমার আর্টিকেলের মধ্যে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সেই সাথে তরমুজ খেলে কি ওজন বাড়ে, তরমুজের বীজের
উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও আপনাদের
জানিয়েছি। আশা করছি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি গর্ভাবস্থায়
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পেরেছেন।
আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আমার এই
আর্টিকেলটি আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকেও জানার
সুযোগ করে দিবেন। এছাড়াও আপনার যদি আমার আর্টিকেলটি নিয়ে কোন প্রশ্ন বা
মতামত থাকে অথবা আপনি যদি অন্য কোন বিষয় সম্পর্কে কোন তথ্য
জানতে চান? তাহলে আমাদের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে
জানাবেন।
অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url