তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা জানলে অবাক হবেন

তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই আছেন জানেন না। তাই এখন আমি আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সহ তেতুল বীজ চূর্ণ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
তেতুলের-বিচির-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
আপনি যদি তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে অবশ্যই আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আর দেরি না করে তেতুল বীজ চূর্ণ দাম এবং তেঁতুলের বিচির সকল তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সুচিপত্রঃ তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা

তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা

তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই আছেন যারা জানেন না। তেতুল চিনে না এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। তেঁতুল আমরা অনেকেই আছি যারা রান্না করে খাই। যেমন ফুচকার সাথে তেতুলের টক খেতে অনেক স্বাদ লাগে। এছাড়াও এই ফলটির আচার বানিয়ে খাওয়া হয়ে থাকে। অনেকেই মনে করে এটি শুধু রান্না বা এমনি খাওয়ার জন্য।

কিন্তু আসলে এটা সঠিক না। তেতুল শুধু রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় না। এটি প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন চিকিৎসায় ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। অনেকেই তেতুলের রস ও তেতুলের খোসা শুধু খেয়ে থাকে এবং বিচিগুলো ফেলে দেয়। কিন্তু তারা জানে না যে তেতুলের বিচির আসলে কতটা উপকারিতা আছে। তেতুলের বিচি ওষুধিগুণ সম্পূর্ণ একটি উপাদান।
এটা যদি সঠিক নিয়ম ও পরিমাণে ব্যবহার করা হয়, তাহলে এ বিচিতে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের দেহের হজম শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি এটা আমাদের হৃদরোগ, দাঁতের সমস্যা, ডায়াবেটিসের সমস্যা এবং শারীরিক অনেক রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এটির শুধু যে উপকারিতায় আছে তা কিন্তু নয়, এটার উপকারিতা থাকার পাশাপাশি কিছু অপকারিতাও আছে।

যদি আপনি এটা সঠিক নিয়ম ও পরিমাণে ব্যবহার না করেন তাহলে এটা থেকে আপনার উপকারের বদলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তাই আপনাকে আগে ভালোভাবে জানতে হবে, তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এবং এটা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আপনি তেঁতুলের বিচি থেকে কি কি উপকারিতা এবং অপকারিতা পাবেন চলুন সে সম্পর্কে জেনে নিই আগে।

তেতুলের বিচির উপকারিতা

  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ তেতুলের বিচি আমাদের পেটের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ তেতুলের বিচিতে প্রাকৃতিক ফাইবার অনেক থাকে। যেটা আমাদের পাকস্থলীতে হজমের প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটের মধ্যে গ্যাস, এসিডিটি ও বদ হজমের মত সমস্যা ভালো করে দেয় এবং পেটকে রাখে পরিষ্কার।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ তেতুলের বিচি শরীরের মধ্যে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে রক্তের মধ্যে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে। যেটা ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ তেতুলের বিচি যদি খাওয়া হয় তাহলে সেটা আমাদের শরীরের রক্তের চাপ স্বাভাবিক করে যার জন্য হৃদপিণ্ড সচল ও সুস্থ থাকে। এটা যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। কারণ তেতুলের বিচিতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম থাকে।
  • দাঁত ভালো রাখেঃ তেতুলের বিচির গুঁড়া দিয়ে যদি দাঁত মাজা যায়, তাহলে সেটা দাঁতের জন্য অনেক উপকারী। এটা দাঁতের পোকা, দাঁতের মাড়ি এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। এক কথায় বলা যায় যে এটা দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।
  • মস্তিষ্কের জন্য ভালোঃ আপনি যদি নিয়মিত তেতুলের বিচির রস খান। তাহলে সেই রসে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান গুলো মাথার মধ্যে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে আমাদের স্মৃতিশক্তি ভালো হওয়ার পাশাপাশি, মনোযোগ বাড়িয়ে যেকোনো কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • আমাশয় ও ডায়রিয়াঃ আপনি যদি আমাশায় ও ডায়রিয়াতে ভোগেন। তাহলে আপনি তেঁতুলের বিচি শুকিয়ে গুড়া করে খেতে পারেন। এতে আপনার পেটের খারাপ ব্যাকটেরিয়া গুলো দূর হয়ে যাবে। এর ফলে আপনার পাতলা পায়খানা এবং আমাশয় এর মত সমস্যা ভালো হয়ে যাবে। বলা যায় এটা আমাশয় ও ডায়রিয়া কমাতে ভালো উপকারী।
  • কিডনির জন্য উপকারীঃ তেতুলের বিচি কিডনির জন্য অনেক ভালো। এটা যদি নিয়মিত খাওয়া হয়, তাহলে সেটা কিডনির বিভিন্ন সমস্যা ভালো করে এবং প্রসাব পরিষ্কার রাখে। কারণ তেতুলের বিচি আমাদের শরীরের মধ্যে ডিউরেটিক হিসেবে কাজ করে থাকে। যেটা শরীরের মধ্যে খারাপ ও অতিরিক্ত পানির সাথে টক্সিন বার করে দেয়। ফলে কিডনি পরিষ্কার থাকে এবং কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • চুলের জন্য উপকারীঃ তেতুলের বিচি যদি আপনি গুড়া করে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে সেটা চুলের গোড়ায় ব্যবহার করেন তাহলে সেটা আপনার মাথার খুশকি দূর করে, চুলের গোড়া শক্ত করে চুল পড়া বন্ধ করে দেয়। এটি চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য অনেক ভালো একটি উপাদান।
  • ত্বকের যত্নেঃ ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনি তেঁতুলের বিচি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি ত্বকে তেতুলের বিচির গুঁড়া লাগান। তাহলে সেটা আপনার ত্বকের ব্রণ, কালো দাগ দূর করে দেয় এবং আপনার ত্বক হয় মসৃণ, পরিষ্কার ও উজ্জ্বল।
  • বাতের ব্যথা কমাতেঃ যাদের বাতের ব্যথা ও জয়েন্টের ব্যথা আছে তারা যদি তেতুলের বিচির রস নিয়ম মেনে খেতে পারেন। তাহলে সেটা আপনার বাতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। কারণ তেতুলের বিচির রসে প্রদাহনাশক উপাদান থাকে। যেটা জয়েন্টের ব্যথা ও ফোলা ভাব দূর করে দেয়।
  • ক্ষত শুকাতেঃ আপনার শরীরে যদি ঘা অথবা ছেঁড়াফাটা থাকে। তাহলে সেই ক্ষতস্থান দ্রুত শুকানোর জন্য তেতুলের বিচির পেস্ট সবথেকে উপকারী। এটা যদি আপনি আপনার ক্ষতস্থানে দেন। তাহলে দ্রুত আপনার ক্ষতস্থান শুকিয়ে ভালো হয়ে যাবে এবং আপনার ক্ষতস্থানের খারাপ ব্যাকটেরিয়ার ধ্বংস করবে।
  • হাড় শক্তঃ শরীরের হাড় ও দাঁতের জন্য তেঁতুলের বিচি অনেক উপকারী। কারণ তেতুলের বিচির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যেটা শরীরের হাড় ও দাঁত কে শক্ত করতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ এই বিচি আমাদের শরীরের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ উপাদান বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যার কারণে খুব সহজে আমাদের সর্দ্‌ কাশি ও ভাইরাসজনিত কোন অসুখ হওয়ার ঝুঁকি থাকেনা।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণঃ আপনি যদি আপনার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তাই থাকেন। তাহলে তেতুলের বিচির গুঁড়া আপনার জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। কারণ তেতুলের  বিচির গুঁড়ো আপনি যদি খেতে পারেন, সেটা আপনার পেটকে অনেকক্ষণ ভরিয়ে রাখবে। যেটা আপনার অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতাকে কমিয়ে দিবে এবং আপনার ওজন ধীরে ধীরে কমবে ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
  • কৃমিনাশকঃ পেটের মধ্যে থাকা জীবাণু ও কৃমি যেটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এই ক্ষতিকর জীবাণু ও কৃমিকে ধ্বংস করার জন্য তেঁতুলের বিচি অনেক উপকারী। কারণ এ তেঁতুলের বিচির মধ্যে থাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিপ্যারাসাইটিক উপাদান। এই উপাদান পেটের ক্ষতিকর জীবাণু এবং কৃমি ধ্বংস করে ও পেটকে রাখে পরিষ্কার। এতে করে পেটের ব্যথা, শরীরের দুর্বলতা, বদ হজম ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা ভালো হয়ে যায়।
  • ক্যান্সার রোধেঃ তেতুলের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে। এটা শরীরের মধ্যে থাকা ক্যান্সার হওয়ার কোষগুলোকে ধ্বংস করে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
  • যৌন দুর্বলতাঃ তেতুলের বিচির পাউডার যৌন চিকিৎসায় আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তেতুলের বিচির গুড়া যদি খাওয়া হয়, সেটা শারীরিক দুর্বলতা দূর করে এবং দ্রুত বীর্যপাত হওয়ার সমস্যাকে ভালো করে। এটা যদি নিয়মিত খাওয়া হয়, সেটা বীর্যের মান উন্নত করে এবং বীর্যকে গারো করে। যাদের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা আছে তাদের জন্য এটি অনেক উপকারী। তেতুলের বিচি যদি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করা হয়, সেটার জন্য শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যৌন শক্তি বাড়াতে নারী পুরুষ দুজনের জন্যই এটি অনেক উপকারী।
  • নারীদের জন্যঃ তেতুলের বিচি নারীদের জন্য অনেক উপকারী। কারণ এটা যদি নারীরা নিয়মিত ব্যবহার করে, তাহলে নারীদের জরায়ুর বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং জরায়ু থাকে সুস্থ ও সবল। এটা নারীদের জরায়ুর দুর্বলতাকে দূর করে দেয় এবং জরায়ুতে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। এ ছাড়াও যে মেয়েদের মাসিক নিয়মিত হয় না বা মাসিকের সমস্যা আছে। তাদের মাসিক স্বাভাবিক রাখতে এটা সাহায্য করে।
  • রং তৈরিতেঃ তেতুলের বিচি শুধু যে স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য ব্যবহার করা হয় তা কিন্তু নয়। এটি ছবি আঁকার জন্যেও একটি উপকারী উপাদান। কারণ তেতুলের বিচি থেকে এক ধরনের আঠা তৈরি করা হয় যে আঠা দিয়ে ছবি আঁকার কাজ করা হয়ে থাকে।
  • মশা তাড়াতেঃ তেতুলের বিচি মশা তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমনকি এই তেঁতুলের বিচির ব্যবহার করে মশা তাড়ানোর জন্য কয়েল তৈরি করা হয়।

তেতুলের বিচির অপকারিতা

  • হজমে সমস্যাঃ তেঁতুলের বিচি হজমের জন্য উপকারী হলেও। এটি যদি পরিমাণের চেয়ে বেশি বা অতিরিক্ত খাওয়া হয়। তাহলে সেটা হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। যার কারণে গ্যাস, পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা তৈরি হতে পারে।
  • ওষুধের সাথে বিরূপ প্রতিক্রিয়াঃ তেতুলের বিচি অনেক উপকারী একটি উপাদান। যেটা শরীরের মধ্যে রক্তচাপ কমায় এবং রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। তবে কেউ যদি ডায়াবেটিসের ওষুধ বা উচ্চ রক্তচাপের জন্য ওষুধ খান এবং সেই সাথে তেতুলের বিচিও পরিমাণে অনেক খান। সেক্ষেত্রে রক্তচাপ বা রক্তের মধ্যে চিনির মাত্রা অনেক কমে যেতে পারে যেটা আপনার জন্য অনেক বিপদজনক।
  • মহিলাদের জন্য সাবধানতাঃ গর্ভাবস্থায় ও স্তনদানকারী মহিলারা তেতুলের বিচি খাওয়ার পূর্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন কারণ। এ সময় যদি তেতুলের বিচি অনেক খাওয়া হয়, তাহলে তেতুলের বিচিতে থাকা কিছু প্রাকৃতিক উপাদান জরায়ুকে সংকোচন করতে পারে। যেটা গর্ভাবস্থায় মোটেও ভালো না। তাই এ সময় নারীদের এটি অতিরিক্ত খাওয়া উচিত না। এমনকি যারা স্তনদানকারী মা তারাও এটি খাওয়ার পূর্বে একটু সাবধানতা অবলম্বন করবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  • রক্তচাপঃ তেতুলের বিচি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অনেক উপকারী। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এটি সাহায্য করে। তবে যাদের আগে থেকেই রক্তচাপ অনেক কম তারা যদি এটা অতিরিক্ত খায় তাহলে তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর। এমনকি এটা খাওয়ার পর তাদের শারীরিক অনেক অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, মাথা ঘুরা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি।
  • এলার্জিঃ যাদের আগে থেকেই এলার্জির সমস্যা আছে তারা যদি তেতুলের বিচির গুড়া বা রস খায় সে ক্ষেত্রে তাদের এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন শরীরে চুলকানি, ত্বকে জ্বালাপোড়া, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, পেটের মধ্যে অস্বস্তি হওয়া, ত্বকে ফুসকুড়ি বার হওয়া।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে ঝুঁকিঃ আপনি যদি ওজন কমানোর জন্য তেতুলের বিচির গুঁড়া অতিরিক্ত পরিমাণে খান। সেক্ষেত্রে আপনার শরীরের ক্ষতি করতে পারে। কারণ এটি যদি আপনি পরিমাণের চেয়ে বেশি বা অতিরিক্ত খান সেটা আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোর এর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যার কারণে আপনার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত শরীরের চর্বি কমে যেতে পারে।
  • ত্বকের ক্ষতিঃ তেঁতুলের বিচির পেস্ট করে সেটা চুলে দিলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে এটা সবার ক্ষেত্রে একই রকম কাজ করে না। কারো ক্ষেত্রে এটা ত্বকে লাগালে জ্বালাপোড়া সহ চুলকানি হতে পারে। তাই এটি ব্যবহারের পূর্বে অল্প একটু দিয়ে পরীক্ষা করা উচিত। তারপর সে অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত।
  • দাঁতের সমস্যাঃ এটি দাঁত ও মাড়ির জন্য উপকারী হলেও যদি অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়। সেটা দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই এটি সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করলে নিরাপদ হবে।
  • জন্ডিসঃ তেতুলের বিচি যদি স্বাভাবিক অথবা নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়। সেক্ষেত্রে এটা শরীরের অনেক সমস্যা বা রোগ তৈরি করতে পারে তার মধ্যে জন্ডিস অন্যতম। তবে পরিমাণ অনুযায়ী খেলে এটি নিরাপদ।
উপরে আমি এই বিচির উপকারিতা এবং তেতুলের বিচির অপকারিতা সম্পর্কে উল্লেখ করেছি। তেতুলের বিচি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী তবে এর কিছু অপকারিতাও আছে। আপনি যদি সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ অনুযায়ী খান সেটা আপনার জন্য নিরাপদ। সব থেকে ভালো হয় আপনি যদি এটা খাওয়ার পূর্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খান।

তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা

উপরেই আমরা আলোচনা করলাম এই বিচির উপকারিতা সম্পর্কে। এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা নিয়ে। তেতুলের বিচির পাউডার আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি ভেষজ ওষুধ। যেটা অনেক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা কাজে এটির ব্যবহার করে থাকে।

এটি শরীরের অনেক রোগ প্রতিরোধ করে এবং শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। এই বিচির পাউডারের অনেক উপকারিতা আছে। উপকারিতা গুলো হচ্ছেঃ আপনি যদি এই বিচির পাউডার সঠিক নিয়ম ও পরিমাণে খেতে পারেন। তাহলে আপনার হজম শক্তি খারাপ থাকলে হজম শক্তি বৃদ্ধি হবে এবং আপনার পেটকে রাখবে পরিষ্কার ও সুস্থ।

শুধুই যে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে তা কিন্তু নয়। এটি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটা আপনার হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাবে। এমনকি এটি নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে আপনার কিডনিকে থাকবে পরিষ্কার ও সুস্থ।

সেই সাথে পেটের কৃমি ধ্বংস করে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দাঁতের সমস্যা ভালো করে, ত্বক ও চুল ভালো রাখে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এছাড়াও এর আরো অনেক উপকারিতা আছে। আপনি যদি তেতুলের বিচির পাউডারের সঠিক ব্যবহার করতে পারেন সেটা আপনার জন্য উপকারী বয়ে আনবে।

সবথেকে নিরাপদ ও উপকারী হতে পারে যদি এই পাউডারটি আপনি ব্যবহারের পূর্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করেন। আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

তেতুল বীজ খেলে কি হয়

অনেকেই আপনারা আছেন যারা জানতে চেয়েছিলেন যে তেতুল বীজ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে। চলুন তাহলে এই বীজ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আমরা অনেকেই আছি যারা তেতুল বীজ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে ভালোভাবে জানিনা। এজন্য আমরা শুধুমাত্র তেতুলের উপরের অংশ খেয়ে তেতুলের বীজ ফেলে দিই।

আমরা যদি এই বীজ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতাম, তাহলে কখনোই আমরা এই বীজ ফেলে দিতাম না। কারণ এই বীজে থাকে অনেক পুষ্টি গুনাগুন। এই বীজটা যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়। সেটা আমাদের শরীরের অনেক বড় বড় রোগ ভালো করতে সাহায্য করে। এমনকি আমাদের শরীরের পুষ্টির ঘাটতি থাকলে, সেই পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতেও সাহায্য করে।

এই তেতুলের বীজ অনেক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক আছে যারা তাদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে এবং রোগীকে সুস্থ করে তোলে। তেতুলের বীজ যাদের যৌন সমস্যা আছে, তাদের জন্য অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। এটা যৌন দুর্বলতা কমিয়ে যৌনশক্তি বাড়িয়ে দেয় এবং বীর্যের গুণগতমান ভালো করে।
যাদের বাচ্চা হওয়াই সমস্যা দেখা দেয়, তারা যদি এই তেতুলের বীজ সঠিক নিয়মে খাই তাহলে তাদের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থাকলে সেটা দূর হয়ে যায়। এমনকি এটা পেটকে পরিষ্কার রাখতে এবং পেটের বিভিন্ন অসুখ ভালো করতে সাহায্য করে। সেই সাথে কিডনি, ডায়াবেটিস, ত্বক, চুলের জন্য অনেক উপকারী ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

তবে এটার এত উপকারিতা থাকলেও এটা যদি আপনি সঠিক নিয়মে না ব্যবহার করেন বা পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত খান সেটা আপনার ক্ষতি করতে পারে। তাই এটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সঠিক নিয়ম এবং পরিমাণ অনুযায়ী খাবেন। অবশ্যই এটি খাওয়ার পূর্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি তেঁতুল বীজ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন

তেতুল বীজ চূর্ণ খাওয়ার নিয়ম

তেতুল বীজ চূর্ণ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এখন আমি আপনাদেরকে বলবো। আপনি যদি সঠিক নিয়মে এই তেতুল বীজ চূর্ণ খাওয়ার নিয়ম না জানেন। তাহলে সেটা থেকে আপনি ভালো উপকার পাবেন না। তাই আগে আপনাকে এই নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। চলুন তাহলে এটি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
তেতুলের-বিচির-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
তেতুলের বিচিকে ভালো করে শুকিয়ে সেটাকে গুড়া করে তৈরি করা হয় এই চূর্ণ। এই চূর্ণ মূলত শরীরের বিভিন্ন অসুখ বিসুখ ভালো করার জন্য ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমের সমস্যা থাকে। তাহলে এই চূর্ণ আপনি সকালবেলায় খালি পেটে এক চামচ কুসুম গরম পানিতে অথবা মধু বা দুধের সাথে মিশিয়ে খাবেন।

অথবা আপনি এটি রাতের বেলায় ঘুমানোর আগে খেতে পারেন। এতে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমের সমস্যা ভালো হয়ে যাবে। এটি অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা। এটি আপনি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন দিনে সর্বোচ্চ দুইবার খেতে পারেন এটা আপনার জন্য নিরাপদ হবে তবে এটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেলে সেটা আপনার জন্য আরো উপকার এবং নিরাপদ হবে।

তেতুলের বিচি খাওয়া নিয়ম

একটু আগেই আমরা তেতুল বীজ চূর্ণ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানলাম। এবার আমরা জানবো তেতুলের বিচি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। তেতুলের বিচি শক্ত হওয়ার কারণে এটি খাওয়া অনেক কঠিন। তাই এটা খাওয়ার সঠিক নিয়ম আগে আপনাকে জানা লাগবে, তাহলে আপনি এটি সহজেই খেতে পারবেন।

প্রথমে তেঁতুলের বিচি গুলোকে ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর সেই বিচিগুলোকে সারা রাতের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে। সারারাত পানিতে ভিজানোর পর সেই বিচিগুলো সকাল বেলায় উঠে খালি পেটে চিবিয়ে খেয়ে নিতে হবে। এছাড়াও আপনি তেতুলের বিচি সিদ্ধ করে খেতে পারেন।

প্রথমে তেতুলের বিচি গুলো পরিমাণ অনুযায়ী পানি নিয়ে। সেই পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভালোভাবে সিদ্ধ করতে হবে। এরপর যখন ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে যাবে এই বিচিগুলো চিবিয়ে খেয়ে নিতে হবে অথবা আপনি সিদ্ধ করা পানিও খেতে পারেন। আরেকটি উপায়ে আপনি এটি খেতে পারেন, সেটা হচ্ছে এই তেতুলের বিচিকে ভালোভাবে শুকিয়ে সেটাকে চিবিয়ে খেতে পারেন যদিও এটা অনেক কঠিন।

তারপরেও আপনি এটি খেতে পারেন। অথবা উপরে যে দুইটা আরো নিয়ম বললাম সে নিয়মে খেতে পারেন। অবশ্যই এটা গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে না যাদের রক্তচাপ কম তারা এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। সব থেকে ভালো হয় এই বিচি খাওয়ার আগে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া।

গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে

এখন আমরা গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে কিনা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যাতে গর্ভবতী মহিলারা জানতে পারে যে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া যাবে কিনা। গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া যাবে তবে সেটা পরিমাণ অনুযায়ী ও নিয়ম মেনে। তা না হলে এটা ক্ষতি করতে পারে। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় তেতুল নিয়ম মেনে খেতে পারেন। তাহলে সেটা আপনার শরীরের উপকার করবে।

আপনি যদি গর্ভ অবস্থায় এই তেতুল নিয়ম মেনে খেতে পারেন। সেটা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করবে। কারণ তেতুলের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে। যেটা আপনার শরীরের মধ্যে গিয়ে আপনার শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করবে এবং আপনার শরীরের স্বাস্থ্য রাখবে সুস্থ। তেতুলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যেটা কে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

গর্ভ অবস্থায় সকালবেলায় বমি বমি ভাব দেখা দিয়ে থাকে। এ সময় যদি আপনি তেতুল খেতে পারেন। সেটা আপনার বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের শরীর অনেক দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়ে এ সময় যদি তেতুল খাওয়া হয় তেতুলে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করে এবং গর্ভবতী মায়ের শরীরকে রাখে সুস্থ। তবে এটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন গর্ভবতী মাকে সতর্ক থাকতে হবে।

কারণ এটি যদি পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত খাওয়া হয় সেটা জরায়ুকে সংকোচন করতে পারে যেটা গর্ভকালীন সময়ে মোটেও হওয়া উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় দাঁত এমনিতেই দুর্বল থাকে এ সময় যদি বেশি পরিমাণে টক খাওয়া হয় সেটা দাঁতের রক্ত আবরণ কে নষ্ট করতে পারে। এমনকি এটা যদি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে গর্ভবতী মায়ের রক্তচাপ অর্থাৎ রক্তের মধ্যে চিনি পরিমাণ প্রচুর পরিমাণে কমিয়ে দিতে পারে।

যেটা গর্ভবতী মহিলার জন্য অনেক বিপদজনক। ডাক্তাররা বলেন গর্ব অবস্থায় এটি অনেক কম পরিমাণে খাওয়া উচিত এবং টানা অনেকদিন না খাওয়াই সবথেকে নিরাপদ। তার পরেও আপনি যদি এটা গর্ভাবস্থায় খান তার আগে আপনি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে এই বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

তেঁতুল বিচির পুষ্টি উপাদান

এতক্ষণ তো তেতুলের বিচির উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানলেন। সেই সাথে তেতুলের বিচির অপকারিতা গর্ভাবস্থায় তেতুলের বিচি খাওয়া যাবে কিনা এবং এ বিচি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেন।

এবার চলুন তেতুলের বিচির পুষ্টি উপাদান কতটুকু আছে সে বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক। যাতে আপনি খুব সহজেই তেতুল বিচির মধ্যে কি পরিমান পুষ্টি উপাদান থাকে। সে সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারেন। চলুন তাহলে প্রতি ১০০ গ্রাম তেতুলের বিচির মধ্যে কতটুকু পুষ্টি গুনাগুন থাকে সে সম্পর্কে আলোচনা করি।

পুষ্টি উপাদান পরিমান
এনার্জি/শক্তি ৩৫০-৩৮০ কিলোক্যালরি
কার্বোহাইড্রেট 50-70 গ্রাম
প্রোটিন ১০-১৫ গ্রাম
ফ্যাট ৪-৫ গ্রাম
ফাইবার ৭-১০ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ১১০-১৫০ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ২৬০-৩০০ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৬০-১০০ গ্রাম
ফসফরাস ১১০-১৫০ মিলিগ্রাম
আইরন ৭-১০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৪-৫ মিলিগ্রাম
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অনেক বেশি পরিমানে

তেতুলের বিচির মধ্যে থাকা এইসব পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এগুলো আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করে, রক্তশূন্যতা দূর করে, শরীরকে শক্তিশালী করে, দাঁত ও হাড় মজবুত করে, হৃদরোগের ঝুকি কমায়, ক্যান্সারে ঝুকি কমায়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ডিহাইড্রেশন ও ইউরিন সমস্যা থাকলে সেগুলোকে ভালো করতে সাহায্য করে।

আপনি যদি তেতুলের বিচি থেকে এইসব উপকারিতা নিতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ অনুযায়ী খেতে হবে। আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি তেতুলের বিচির পুষ্টি উপাদান গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

তেতুল বীজ চূর্ণ দাম

তেতুল বীজ চূর্ণ দাম সম্পর্কে এখন আমি আপনাদের জানাবো। আপনি যদি সঠিক দাম না জেনে থাকেন অবশ্যই আমার এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে এটি আপনি কোথায় এবং কত দামে কিনতে পারবেন সেটা জানতে পারবেন। আপনি যদি তেতুল বীজের পাউডার অনলাইন প্লাটফর্ম গুলো থেকে কিনতে চান।

তাহলে সেটার দাম প্রতি ১০০ গ্রামে ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দাম পড়বে। কারণ অনলাইন প্লাটফর্মে এক এক জন একেক রকম দামে বিক্রি করে থাকে। যেমন এই পাউডারটি ১০০ গ্রাম দারাজে দাম পড়বে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এই জিনিসই আবার অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মে দেড়শো ২০০ টাকাতে বিক্রি হয়। আর এই পাউডারটি যদি আপনি সরাসরি কোন দোকান অথবা আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকানে কিনেন।

 সেটার দাম প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, যেটাই আপনি ১০০ গ্রাম পাউডার পাবেন। তাছাড়া এই পাউডারটি জায়গা অনুযায়ী দাম কম বা বেশি হতে পারে। অনেকেই এই পাউডারটি ভেজাল অথবা ডুবলিকেট বিক্রি করে থাকে। তাই এটি ক্রয়ের সময় পাউডারটি আসল নাকি নকল সেটা ভালো করে যাচাই করবেন। আর চেষ্টা করবেন পরিচিত কোন দোকান থেকে কেনার।

তেতুল খেলে কি বীর্য পাতলা হয়

তেতুল খেলে কি বীর্য পাতলা হয় এ বিষয়ে আপনারা অনেকে আছেন যারা জানতে চেয়েছেন। অনেকেই মনে করেন যে তেঁতুল খেলে বীর্য পাতলা হয়ে যায়। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এটার কোন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। তেতুলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে সেই সাথে আরো অনেক পুষ্টি গুনাগুন থাকে।

যেগুলো আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটা খাওয়ার পর আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু তেতুলের মধ্যে এমন কোন উপাদান পাওয়া যায়নি যে উপাদানটা সরাসরি বীর্য পাতলা করে। তাই বলা যায় যে তেতুল খেলে বীর্য পাতলা হয় না।

তবে মানুষের এই ধারণা হওয়ার কিছু কারণ আছে, যেগুলোর কারণে তারা ভাবে যে তেতুল খেলে বীর্য পাতলা হয়ে যায়। কারণগুলো হচ্ছে তেতুল একটি এসিডিক ফল এটা যদি পরিমাণ এর চেয়ে বেশি অর্থাৎ অতিরিক্ত খাওয়া হয়। তাহলে সেটা কিছু মানুষের ক্ষেত্রে শরীরকে অনেক ঠান্ডা করে দেয়।

যার কারণে মানুষ মনে করে যে এটা জনশক্তি বা বীর্য পাতলা করে দেয়। কিন্তু তাদের এই ধারণাটা একেবারেই কুসংস্কার জনক এবং ভিত্তিহীন। তেতুল ছেলেদের বীর্য পাতলা করে না বরং এটা জনশক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বীর্যের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি তেতুল খেলে কি বীর্য পাতলা হয় এই বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

তেতুল খেলে কি ক্ষতি হয়

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন যে তেঁতুল খেলে কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে। তেতুল বা তেতুলের বিচি সাধারণত আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী একটি ফল। এটি যদি সঠিক নিয়ম মেনে পরিমান অনুযায়ী খাওয়া যায় সেটা আমাদের অনেক রোগ প্রতিরোধ সহ শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। তবে আপনি যদি এটি সঠিক নিয়ম না মেনে পরিমানের চেয়ে বেশি অর্থাৎ অতিরিক্ত খান।
তেতুলের-বিচির-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
তাহলে সেটা আপনার কিছু ক্ষতি করতে পারে। চলুন কি ক্ষতিগুলো আপনার হতে পারে সে সম্পর্কে আলোচনা করি। আপনি যদি তেঁতুল পরিমাণ এর চেয়ে বেশি খান সেক্ষেত্রে আপনার পেটের মধ্যে গ্যাসের সমস্যা সহ পেটে জ্বালাপোড়া, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ তেতুলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে টারটেরিক অ্যাসিড থাকে, যেটা পেটে বেশি হলে এই সমস্যা তৈরি হতে পারে।

অতিরিক্ত তেঁতুল খেলে সেটা দাঁতের উপরের শক্ত আবরণ কে ক্ষয় করে দিতে পারে। অতিরিক্ত রক্তকে পাতলা করে দিতে পারে, রক্তচাপ অনেক কমে যেতে পারে, শরীরের হরমোনের ব্যালেন্স অনিয়ন্ত্রিত হতে পারে, গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারী ও পেটে থাকা সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। এগুলো আপনি যদি তেতুল বা তেতুলের বিচি সঠিক পরিমাণে না খান বা ভুল নিয়মে খান।
তাহলে মূলত এই ক্ষতিগুলো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে আপনি যদি তেতুল বা তেতুলের বিচি সঠিক নিয়ম মেনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খান। সেটা আপনার ক্ষতি করবে না বরং এটা থেকে আপনি উপকার পাবেন। আশা করছি যে আপনি আমার আলোচনা থেকে তেতুল খেলে কি কোন ক্ষতি হয় এই বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

লেখকের কথাঃ তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা

তেতুলের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমি আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যা থেকে আপনি তেঁতুলের বিচির উপকারিতা সহ এর ক্ষতির দিক গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন এছাড়াও আপনি তেতুলের বিচির পাউডার উপকারিতা, তেতুলের বিচি খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে, তেঁতুল বিচির পুষ্টি উপাদান সহ আরো অনেক তথ্য ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আমার পরামর্শ থাকবে এটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনি একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আমার এই আর্টিকেলটি আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এছাড়াও আপনার যদি আমার এই আর্টিকেলটি নিয়ে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে অথবা আপনি নতুন কোন বিষয়ে যদি জানতে চান। তাহলে অবশ্যই সে বিষয় সম্পর্কে আপনি আমাদের নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা চেষ্টা করবো আপনি যে বিষয়ে জানতে চান সে বিষয়ে একটি সঠিক তথ্য দেওয়ার ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url