গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয় - এটি খাওয়া কতটা নিরাপদ?
গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয় সে সম্পর্কে এখন আমি আমার এই আর্টিকেলে
আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাবো। আমার এই আর্টিকেলে গর্ভকালীন সময়ে সুপারি যদি খাওয়া হয় তাহলে কি হয়?
সুপারি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গর্ভবস্থায় সুপারি খাওয়া যাবে কি না, সে বিষয়ে আমি আপনাদের সকল তথ্য দিবো।
আপনি যদি এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন।
তাহলে গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় সুপারি খাইলে কি হয়
সে সম্পর্কে।
পেজ সুচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার অপকারিতা
- সুপারি খেলে কি কিডনিতে পাথর হয়
- সুপারিতে কোন কোন ভিটামিন থাকে
- সুপারি খেলে মাথা ঘুরায় কেন
- সুপারি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- কাঁচা সুপারি না শুকনা সুপারি খেতে হয়
- সুপারি খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়
- লেখকের শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই আছি জানিনা। কিন্তু
গর্ভ অবস্থায় সুপারি খাওয়া হলে কি হয় এটা আমাদের জানা অনেক দরকার। কেননা
গর্ভকালীন সময়ে একটু অসতর্ক যদি হয়। তাহলে সেটাই গর্ভবতী মা ও পেটে থাকা
সন্তানের জন্য অনেক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। তাই গর্ভকালীন সময়ে সুপারি খাওয়া
যাবে কি না এবং এটা যদি খায় তাহলে কি হবে সে সম্পর্কে আমি নিচে বিস্তারিত বলবো।
চলুন তাহলে জেনে নিই গর্ভাবস্থায় সুপারি খাইলে কি হয়।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় বেদানা খাওয়ার উপকারিতা
আসলে গর্ভকালীন সময়ে একজন মাকে অনেক সতর্ক ও নিয়ম অনুযায়ী চলতে হয়। এ সময়
অনেক মেনে বেঁছে খাবার গ্রহণ করতে হয়। আর যদি এই সময় না মেনে বেছে চলে তাহলে মা
ও তার পেটে থাকা সন্তানের সমস্যা হতে পারে। একজন মা যদি গর্ভাবস্থায় সুপারি খাই
সেক্ষেত্রে তার অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই তার উচিত হবে গর্ভাবস্থায় সুপারি না
খাওয়া।
গর্ভাবস্থায় এটি খেলে যা হবে সেগুলো হচ্ছেঃ গর্ভাবস্থায় যদি এটি খাওয়া হয়,
তাহলে পেটের বাচ্চা দুর্বল এবং ওজন কম হয়ে জন্মাতে পারে। কারণ সুপারির মধ্যে এমন
কিছু উপাদান রয়েছে যেটা পেটের সন্তানের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এমনকি এটা গর্ভকালীন
সময়ে খাওয়া হলে সময়ের আগেই বাচ্চার জন্ম হতে পারে অর্থাৎ গর্ভকাল সময় পূর্ণ
হওয়ার আগেই বাচ্চা জন্ম নিতে পারে।
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের শরীর এমনিতেই অনেক সেনসিটিভ থাকে। সেসময় অনেক সতর্ক
থাকতে হয়। আর এ সময় যদি সুপারি খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে মায়ের পেটে গ্যাস হতে
পারে এবং বমি বমি ভাব হতে পারে। যা গর্ভকালীন সময়ে এটি খাওয়া একদম উচিত নয়। এই
সুপারি খাওয়ার ফলে দাঁত লাল হয়ে যায়।
দাঁতের গোড়া ক্ষয় হয়ে যায় আবার পেটে থাকা সন্তানের মস্তিষ্কের গঠনে এটি বড়
হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। কারণ সুপারির মধ্যে খারাপ কিছু উপাদান রয়েছে। যেগুলো পেটের
সন্তানের জন্য মোটেও ভালো নয়। আশা করছি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন, যে
গর্ব অবস্থায় সুপারি খেলে কি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত
আলোচনা করবো। তাই চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক। আসলে গর্ভাবস্থায় সুপারি
খাওয়ার তেমন কোন উপকার নাই বললেই চলে। অনেকেই আছে যারা মনে করে গর্ভাবস্থায়
সুপারি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় কিন্তু এটা সঠিক না। সুপারি খাওয়ার উপকারিতা
আছে কিন্তু সেটা গর্ভাবস্থায় না।
কারণ সুপারিতে এমন কিছু উপাদান আছে যে গুলো গর্ভাবস্থায় যদি খাওয়া হয়, তাহলে মা ও
পেটে থাকা সন্তানের অনেক ক্ষতি হয়। কারণ সুপারিতে এরোকোলাইন নামের এক ধরনের
রাসায়নিক উপাদান আছে। যেটা গর্ভের সন্তানের মস্তিস্কের বিকাশে সমস্যা করে। তারপর
এটা যদি গর্ভবতী নারী খায় তাহলে হঠাৎ শরীরে রক্তের চাপ বেড়ে জাওয়ার ঝুঁকি হতে
পারে, পেটের সন্তানের ওজন কম হতে পারে, গর্ভপাতের ঝুঁকি হতে পারে এবং মুখের
সমস্যা হতে পারে।
তাই বলা যায় গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার উপকারিতা থেকে অপকারিতাই
বেশি। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার বিভিন্ন মেডিকেল গবেষণা থেকে
পেয়েছে যে সুপারি একটি ক্যান্সার সৃষ্টিকারী দ্রব্য। আর এটি গর্ভাবস্থায় যদি
কোন মা খেয়ে থাকে তাহলে সেটা মা ও পেটে থাকা সন্তানের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তবে এই
সুপারি যদি গর্ভাবস্থার বাইরে অর্থাৎ গর্ভবতী মহিলা বাদে কেউ খায় তাহলে সেটা থেকে
কিছু উপকার পাওয়া যায় বলে মানুষ বিশ্বাস করে।
সে উপকারগুলো হচ্ছে, মুখের স্বাদ নিয়ে আসে, হজমে সাহায্য করে, মাথা ঘুরা ভালো
করে, শরীরের দুর্বলতা দূর করে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। এটা কেবল মাত্র
মানুষের বিশ্বাস এটা কিন্তু কোনো গবেষণা ভিত্তিক নয়। তবে এটা কিন্তু গর্ভাবস্থায়
মটেও খাওয়া যাবে না। আশা করছি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন যে
গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার উপকারিতা আছে কি নাই।
গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই আছে যারা জানে না। তাই
তাদের জন্য আমি এখন গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি অপকারিতা রয়েছে বা কি ক্ষতি হয়
সে সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায়
সুপারি খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। কারণ গর্ভাবস্থায় যদি কোন
গর্ভবতী নারী এই সুপারি খেয়ে থাকে ।তাহলে তার এবং তার পেটে থাকা সন্তানের জন্য
এটি মারাত্মক ক্ষতি ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভবস্থায় এটা না খাওয়াই ভালো।
গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে যেসব অপকারিতা বা ক্ষতি হয় সেগুলো হচ্ছেঃ
সুপারির মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ রয়েছেন যেগুলো পেটে থাকা সন্তানের
মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহত করে। যার ফলে জন্মের পর তার মানসিক সমস্যা হতে
পারে। তাছাড়া গর্ভ অবস্থায় এটি যদি খাওয়া হয় তাহলে এটা গর্ভপাতের মতো
সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি এটি খাওয়ার ফলে সময়ের আগেই সন্তান
জন্মদানের মত সমস্যা হতে পারে। এর কারণে শিশুর ওজন কম হয় এবং শিশু শিশুর রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম হয়।
তারপর সুপারির মধ্যে থাকা উপাদান শরীরের রক্তচাপ হুট করেই বাড়িয়ে দিতে পারে যা
গর্ভবতী মা ও তার পেটে থাকা সন্তানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ । এটি যদি গর্ভ
অবস্থায় কোন মা খেয়ে থাকে তাহলে সেটি তার মুখ ও দাঁতের অনেক ক্ষতি করতে পারে।
যেমন দাঁতের রং কালো হয়ে যায়, দাঁতের মাড়ি ক্ষয় হয়, মুখে ঘা হয় আর যদি এটা
অনেক সময় ধরে খাওয়া হয়। তাহলে এটি থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা
থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার বিভিন্ন পরীক্ষাতে পেয়েছে যে সুপারি ক্যান্সার
সৃষ্টিকারী দ্রব্য। এছাড়াও অনেক গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে এটা যদি
গর্ভাবস্থায় কোন মা নিয়মিত খেয়ে থাকে। তাহলে তার পেটে থাকা সন্তানের শারীরিক
অনেক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই উচিত গর্ভাবস্থায় সুপারি না খাওয়াই ভালো।আশা
করি উপরের আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন যে গর্ভাবস্থায় সুপারি খাওয়ার
অপকারিতা কি।
সুপারি খেলে কি কিডনিতে পাথর হয়
সুপারি খেলে কি কিডনিতে পাথর হয় এটা অনেকেই আছেন যারা এই বিষয়ে জানতে চান। চলুন
তাহলে জেনে নেই যে সুপারি খেলে কিডনিতে পাথর হয় কি না। সুপারি খেলে কিডনিতে কোন
পাথর হয় না।তবে পরোক্ষভাবে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। আসুন
তাহলে যে ভাবে কিডনিতে পাথর হয় সেগুলো জেনে নি।
সুপারি খেলে মুখ শুকিয়ে যায় এবং শরীরে পানি অনেকটাই শোষণ করে।যার ফলে প্রসাব কম
হয় আর পানি কম খেলে কিডনিতে সেটা খারাপ প্রভাব পড়ে। সুপারি খাওয়ার জন্য শরীরে
বিভিন্ন খনিজ পদার্থ জমা হয় যা কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে। তারপর সুপারির
মধ্যে অতিরিক্ত রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যেগুলো প্রসাবকে এসিডিক করে। এর ফলে
কিডনিতে এটা ইউরিক অ্যাসিড অথবা ক্যালসিয়াম অক্সালেট জাতীয় পাথর তৈরি হতে পারে।
সুপারি যদি নিয়মিত খাওয়া হয় তাহলে সেটি লিভার ও কিডনিতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি
করতে পারে যার কারনে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বেড়ে যায়। ফলে কিডনিকে এইসব ক্ষতিকর
পদার্থ ফিল্টার করার জন্য বা পরিশোধন করার জন্য অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। যেটা
দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়ে যায়।
গবেষণায় সুপারি খেলে কিডনিতে পাথর হতে পারে এরকম সরাসরি কোন প্রমাণ পাওয়া
যায়নি।
তবে সুপারি ও তামাক দ্রব্য যদি দীর্ঘমেয়াদে খাওয়া হয়, তাহলে সেটি কিডনির ক্ষতি
করতে পারে এরকম প্রমাণ রয়েছে। এক কথায় বলা যায় যে সুপারি খেলে কিডনিতে পাথর
হওয়ার সরাসরি কোন সম্পর্ক না থাকলেও। এটি খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি
তৈরি হতে পারে। তাই যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তাদের এটা একেবারেই খাওয়া উচিত
নয়। আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন যে সুপারি খেলে কিডনিতে
পাথর হয় কিনা সে সম্পর্কে।
সুপারিতে কোন কোন ভিটামিন থাকে
সুপারিতে কোন ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ রয়েছে সেগুলো অনেকেই জানেন না। তাই আপনাদের
জানার জন্য আমি নিচে সুপারির মধ্যে থাকা পুষ্টি গুনাগুন ও ভিটামিন সম্পর্কে নিচে
উল্লেখ করলাম।
প্রতি ১০০ গ্রাম সুপারিতে থাকা ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ
উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
শক্তি | ৩৩৯ কিলোক্যালরি |
প্রোটিন | ৫.৩ গ্রাম |
চর্বি | ১১ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৫০ গ্রাম |
ফাইবার | ১৫ গ্রা |
প্রতি ১০০ গ্রাম সুপারিতে থাকা খনিজ ও ভিটামিন
ভিটামিন - খনিজ | পরিমাণ |
---|---|
ভিটামিন বি১ | ০.১২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি২ | ০.০২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি৩ | ০.৯০ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ২ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি৬ | মিডিয়াম |
ফলিট | অল্প |
ক্যালসিয়াম | ৪৫ মিলিগ্রাম |
লৌহ | ২ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ৮০ মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ১০০ মিলিগ্রা |
অবশ্যই সতর্ক থাকবেন কারণ সুপারিতে কিছু পুষ্টি গুনাগুন ও ভিটামিন থাকার পরেও এর
মধ্যে অনেক পরিমাণে রাসায়নিক উপাদান থাকে যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে খাওয়ার ফলে
স্বাস্থ্যের অনেক সমস্যা রোগ সৃষ্টি করতে পারে। আশা করি উপরের সকল আলোচনা
থেকে আপনি জানতে পেরেছেন সুপারিতে কি কি ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান থাকে সে
সম্পর্কে
সুপারি খেলে মাথা ঘুরায় কেন
সুপারি খেলে মাথা ঘুরায় কেন এই বিষয়ে এখন আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা
করবো।অনেকেই আছেন যারা কাচা সুপারি খেলে মাথা ঘোরা অনুভব করে থাকে আবার অনেকের
কাছে এগুলো কিছু মনে হয় না। কেন সুপারি খেলে মাথা ঘুরায় সে সম্পর্কে আসুন জেনে
নিই।
আরো পড়ুনঃ মরিয়ম ফুল কিভাবে খেলে বাচ্চা হয়
সুপারির মধ্যে এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। যে উপাদানটির জন্য শরীরে হঠাৎ
করে রক্তচাপ বেড়ে যায় যার ফলে মস্তিষ্কে রক্তের প্রবাহ অস্থিরতা তৈরি হয় এবং
মাথা ঘোরা ও চোখে ঝাপসা দেখা দেই। সুপারি খাওয়ার পর ব্লাড প্রেসার অনেক বেড়ে
যায়। যার ফলে মাথা ঘোরা শরীরে ঝিমঝিম ভাব ও দুর্বলতা সৃষ্টি হয়।
সুপারিতে থাকা উপাদান শরীরের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিবর্তন করে দেয়। যার
কারণে এই মাথা ঘুরা হয়। সুপারি খাওয়ার কারণে সুপারিতে থাকা কিছু উপাদান যা
মুখ শুকিয়ে দেয় এবং শরীরের পানি শূন্যতা দেখা দেয়। যার কারণে মস্তিষ্কে
পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না, ফলে মাথা ঘোরার মত সমস্যা হয়।
এক কথায় বলা যায় যে, সুপারি খাওয়া পর মাথা ঘোরা এটা কোন স্বাভাবিক বিষয় নয়।
এটার কারণ হচ্ছে সুপারিতে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। যেগুলো আপনার
মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলে। যার কারণে আপনার মাথা ঘোরার মত সমস্যা দেখা দেয়।
আশাকরছি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন যে সুপারি খেলে কেন মাথা ঘুরায় সে
সম্পর্কে।
সুপারি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
সুপারি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই আছেন যারা জানেন না। কখন খেলে ভালো আর
কখন খেলে ভালো হয় না। সে সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকে যখন ইচ্ছা যে কোন সময়
এটি খেয়ে থাকেন। যার কারণে পরবর্তীতে শরীরের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই আজ আমি
আপনাদের জানাবো সুপারি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। চলুন দেরি না করে জেনে নিই
সুপারি খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম সম্পর্কে।
অনেকেই আছে যারা প্রতিনিয়ত এবং প্রতিদিনেই এই সুপারি খেয়ে থাকে। আসলে এই সুপারি
প্রতিদিন না খেয়ে দিনে একবার বা সপ্তাহে দুই থেকে তিনবারের বেশি না খাওয়াই
ভালো। অবশ্যই এই সুপারি খাওয়ার সময় ভালো দেখে শুকনো সুপারি নিয়ে খেতে হবে।
সুপারি যেন ভেজা বা পচা না হয়। খালি পেটে এটা খাওয়া যাবে না। কারণ খালি পেটে
এটি খেলে মাথা ঘোরার মত সমস্যা এবং পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনেকে আছে যারা এই সুপারির সাথে চুন ও জর্দা দিয়ে খেয়ে থাকে। এটি অবশ্যই বর্জন
করতে হবে। এমনি সুপারি খেলে খেতে পারেন। অবশ্যই সুপারি খাওয়ার সময় সুপারিটি
মুখে নিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। যেন হজম হয় সহজে এবং পাকস্থলীতে চাপ বেশি
না পরে। বেশিক্ষণ ধরে এটি মুখে না রাখাই ভালো। কারণ বেশিক্ষণ মুখে রাখলে সেটা
থেকে মুখে ঘা এবং মুখের অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সুপারি খাওয়ার পর বেশি করে পানি খেতে হবে। কারণ সুপারি খাওয়ার পর মুখ শুকিয়ে
যায় এবং পানি শূন্যতা দেখা দেয় তাই বেশি পানি পান করতে হবে। সর্বশেষ এটি
খাওয়ার পর ভালোভাবে দাঁত ও মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এমনিতেই এই সুপারি
খাওয়া সাস্থের জন্য ক্ষতিকর। তারপরও যারা খেতে চান তাদের জন্য এই নিয়মটি ভালো
হবে।
আর এই সুপারি একেবারেই যাদের খাওয়া উচিত নয়। তারা হচ্ছে গর্ভবতী মেয়েকে, তারপর
যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, যাদের কিডনি ও লিভারের সমস্যা রয়েছে। যাদের মুখে ঘা ও
দাঁতের সমস্যা আছে তাদের। আশা উপরের আলোচনা থেকে আপনি সুপারি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
কাঁচা সুপারি না শুকনা সুপারি খেতে হয়
অনেকে আছেন যারা ভাবেন যে কাঁচা সুপারি না শুকনা সুপারি খেতে হয়? আসলে সুপারি
খাওয়াই উচিত নয়। কারণ এটি হচ্ছে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকারক উপাদান।
সুপারির মধ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান পাওয়া গিয়েছে। তাই কাঁচা হোক বা
শুকনো হোক কোনো সুপারি খাওয়া উচিত নয়।
তবে শুকনো সুপারি কাচা সুপারির থেকে খাওয়া নিরাপদ। যদি সুপারি খাওয়াই লাগে
তাহলে অবশ্যই কাচার থেকে শুকনো সুপারি খাওয়াই ভালো। আর অবশ্যই এটি খাওয়ার সময়
জর্দা ও চুন মিশিয়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আশা করছি আপনি এই আলোচনা থেকে
জানতে পেরেছেন কাঁচা সুপারি না শুকনা সুপারি খেতে হয়।
সুপারি খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়
সুপারি খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় সে সম্পর্কে অনেকেই আছেন যারা জানতে চেয়েছেন।
তাদের এই জানার উদ্দেশ্যে আজ আমি আমার এই পোস্টে সুপারি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়
কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যা থেকে আপনারা জানতে পারবেন যে সুপারি
খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে
নেওয়া যাক যে সুপারি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় কিনা।
সুপারি খেলে অনেকে আছে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, আবার অনেকে আছে যাদের হয় না। এটা
মূলত যাদের হজমের সমস্যা আছে তাদের জন্যই এই সমস্যা বেশি দেখা দিয়ে থাকে। এছাড়াও
সুপারিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো পেটে গিয়ে হজমে সমস্যা করে করে থাকে।
তাই যাদের হজম শক্তি কম তাদের এই সুপারি না খাওয়াই ভালো। আর যদিও খায় সে
ক্ষেত্রে কম পরিমাণে খাওয়ায় ভালো হবে।
আরো পড়ুনঃ কারি পাতা গাছের উপকারিতা কি
সুপারির এর মধ্যে অ্যারেকোলিন নামে একটি উপাদান আছে। এটাই সেই উপাদান যেটা
পেটের হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা করে থাকে। যার ফলে পেটে গ্যাস, দেরিতে হজম হওয়া
এবং পেট ফাঁপার মতো সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি
হয়।। আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি সুপারি খেলে কষ্ট কাঠিন্য হয় কিনা
সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় সুপারি খেলে কি হয় এবং সুপারি খাওয়ার সকল নিয়ম এবং সুপারি
খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ সুপারি সম্পর্কিত আরো অনেক বিষয় নিয়ে আমাদের এই
আর্টিকেলে আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে গর্ভাবস্থায়
সুপারি খেলে কি হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এটি আপনি
আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। তাছাড়া আপনি যদি অন্য কোন বিষয়ে জানতে চান,
তাহলে নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা আপনার সেই বিষয়টি
সম্পর্কে ইনফরমেশন নিয়ে সঠিক তথ্য লেখার চেষ্টা করবো।
অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url