কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক - সতর্ক হোন আজই

কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে কি আপনি জানতে চান? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই। কারণ আজ আমি আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কার্বলিক এসিডের ক্ষতির দিক নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
কার্বলিক-এসিডের-ক্ষতিকর-দিক
যা থেকে আপনি জানতে পারবেন কার্বলিক এসিডের সংকেত, কার্বলিক এসিড কোথায় পাওয়া যাবে, কার্বলিক এসিড এর ব্যবহার, কার্বলিক এসিড দাম কত সকল বিষয় সম্পর্কে। তাই আমাদের পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে আপনি কার্বলিক এসিডের সব তথ্য জানতে পারবেন।

পেজ সুচিপত্রঃ কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক

কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক

কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক আপনারা অনেকে আছেন যারা জানেন না। তাদের জানার জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা। এই পোস্টটি আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। তাহলে কার্বলিক এসিডের ক্ষতি সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন। নিচের কার্বলিক এসিডের সকল ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
  • ত্বকের জন্য ক্ষতিকর
  • চোখের মারাত্মক ক্ষতি
  • শ্বাস প্রশ্বাসের ক্ষতি করে
  • এটি খাওয়া হলে বিসক্রিয়া
  • লিভার ও কিডনি সমস্যা
  • মাটির উর্বরতা নষ্ট করে
  • জলজ প্রাণীদের জন্য বিষাক্ত
  • ক্যান্সারের সম্ভাবনা
  • হরমোনের সমস্যা
  • স্নায়ুতন্ত্রে ক্ষতিকর প্রভাব
ত্বকের জন্য ক্ষতিকরঃ কার্বলিক এসিড অনেক ক্ষতিকর একটি রাসায়নিক পদার্থ। এটা যদি শরীরে বা ত্বকে লেগে যায় তাহলে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। যেমন ত্বকের সাধারণ ভাব বা কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয় যার ফলে ত্বকে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। ত্বকে লাল ভাব দেখা দেয় এবং যে জায়গায় এসিড লেগেছে সে জায়গাটির চামড়া উঠে যেতে পারে।
এমনকি এটার কারণে ত্বকের রং সাদা বা কালচে রঙের হয়ে যেতে পারে। এমনকি তাড়াতাড়ি কোন ব্যবস্থা না নিলে এই দাগটি স্থায়ী ভাবে থেকে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। তাই কার্বলিক এসিড ব্যবহার করার সময় অবশ্যই সুরক্ষা গ্লাভস এবং নিরাপত্তার জন্য যা লাগে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। যদি কোন ভাবে এটি ত্বকে লেগে যায়, তাহলে সে জায়গাটি পরিষ্কার পানি নিয়ে কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ মিনিট ধুতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

চোখের মারাত্মক ক্ষতিকরঃ কার্বলিক এসিড চোখের জন্য অনেক বিপদজনক। কার্বলিক এসিড যদি কাজ করার সময় ভুল করে চোখে পড়ে যায়। তাহলে চোখে তীব্র জ্বালাপোড়া পানি পড়া, ব্যথা করা এবং চোখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা হতে পারে। যদি একটু দেরি হয় আস্তে আস্তে চোখের দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। 

বেশি দেরি করে ফেললে বা দ্রুত ডাক্তারের কাছে না গেলে স্থায়ীভাবে অন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাই কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহারের সময় অবশ্যই চোখের সুরক্ষার জন্য চশমা ব্যবহার করা প্রয়োজন। তারপরও যদি কোন ভাবে চোখে এসিড পড়ে যায়। তাহলে দ্রুত চোখকে ঠান্ডা পানি বা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং ডাক্তারের কাছে অথবা আপনার আশেপাশের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে।

শ্বাস প্রশ্বাসের ক্ষতি করে

কার্বলিক এসিড বাতাসে ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো নিঃশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এগুলো প্রবেশের পর নাক গলার মধ্যে জ্বালাপোড়া শুরু হতে পারে। গলায় খুসখুসে কাশি শুরু হতে পারে। যদি কার্বলিক এসিডের তীব্রতা বেশি হয় তাহলে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, গলার ব্যথা আরো বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। যদি দীর্ঘ সময় ধরে এই গ্যাস শরীরে প্রবেশ করে। তাহলে ফুসফুসের কার্যকারিতা অথবা শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। তাই কার্বলিক এসিড ব্যবহারের সময় অবশ্যই মাস্ক পড়ে ব্যবহার করতে হবে। আর যদি কেউ এই সমস্যায় পড়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই তাকে বাইরে খোলা বাতাসে যেতে হবে এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

এটি খাওয়া হলে বিসক্রিয়াঃ কার্বলিক এসিড যদি কেউ ভুলবশত খেয়ে ফেলে। তাহলে সেটা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি এটা পেটে গিয়ে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এটি খাওয়ার পর শরীরের রক্তচাপ কমে যেতে পারে এবং মারাত্মক অবস্থায় স্নায়ুতন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই অবশ্যই এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আর যদি ভুলবশত কেউ খেয়ে নেয় তাহলে দ্রুত তাকে চিকিৎসকের কাছে অথবা নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে হবে।

লিভার ও কিডনি সমস্যা 

কার্বলিক এসিড যদি শরীরে প্রবেশ করে। তাহলে সেটি আমাদের দেহের লিভার, কিডনির মারাত্মক সমস্যা করতে পারে। কারণ কার্বলিক এসিড লিভার ও কিডনির কোষগুলোকে ধ্বংস করে। ফলে কিডনি ও লিভার বিকল হয়ে যায় এবং শরীর ফুলে যায়। তাই কার্বলিক এসিড যদি শরীরে প্রবেশ করে তাহলে রক্ত টেস্ট করাতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

মাটির উর্বরতা নষ্ট করেঃ কার্বলিক এসিড শুধু মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। এটি পরিবেশের জন্যও অনেক ক্ষতি কর।কারণ এই এসিড যদি মাটিতে পড়ে তাহলে মাটির প্রাকৃতিক উর্বরতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। মাটির মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপকারী জীবাণু যেগুলো গাছের বৃদ্ধিতে বা গাছ জন্মাতে সাহায্য করে। কার্বলিক এসিড যদি সেই মাটিতে পড়ে তাহলে সেই উপকারী জীবাণুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

ফলে সেখানে কোন গাছ জন্মাতে পারেনা এবং মাটির উর্বরতা কমে যায়, জৈবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।কার্বলিক এসিড মাটির পিএইচ পরিবর্তন করে ফেলতে পারে। যার কারনে গাছপালা ঠিকভাবে জন্মাতে পারে না। তাই অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এ কার্বলিক এসিড যেন কোন মাটিতে বা ফসলি জমিতে না পড়ে।

জলজ প্রাণীদের জন্য বিষাক্তঃ কার্বলিক এসিড যদি পানির সাথে মিশে যায় তাহলে সেই পানির ভয়ঙ্কর রকমের ক্ষতি হতে পারে। এতে করে যদি কোন পুকুর বা জলাশয়ে কার্বলিক এসিড মিশে যায়। তাহলে সে পুকুরে বা জলাশয়ে মাছ এবং সেই পুকুরের মাছ খাই যেগুলো ছোটখাটো পোকামাকড়। যেমন ব্যাঙ এবং অন্যান্য জীব সব মারা যেতে পারে।

কার্বলিক পানির গঠন পরিবর্তন করে দেয় যার ফলে জীবাণু ও শৈবালসহ পানিতে থাকা বিভিন্ন জীববৈচিত্র ধ্বংস হতে পারে। আর একবার যদি এই এসিড পানিতে মিশে যায় তাহলে পূর্বের অবস্থানে ফিরতে অনেক সময় লাগে। যার ফলে সে পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। তাই কার্বলিক এসিড ব্যবহার করার পর সেগুলো যেন পানিতে বা অন্য কোথাও না ফেলা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ক্যান্সারের সম্ভাবনা

যারা কার্বলিক এসিড নিয়ে কাজ করে বা সব সময় এর সংস্পর্শে থাকে তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ এ কার্বলিক এসিডের দ্বারা তাদের ত্বক শাসনালী ও যকৃত মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয় এবং অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে কার্বলিক এসিড বারবার শ্বাস বা ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে সেল মিউটেশন ঘটাতে পারে।

যা থেকে ক্যান্সারের কোষ জন্ম হয়। বিশেষ করে লিভার ক্যান্সার, কিডনি ক্যান্সার এমনকি ব্লাড ক্যান্সার হতে পারে। তাই এসব কোম্পানিতে বা কারখানাতে কাজ করার সময় নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যের পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে ডাক্তারের কাছে।

হরমোনের সমস্যাঃ কার্বলিক এসিড শরীরে প্রবেশ করলে সেটি শরীরের হরমোনের কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে। যার ফলে হরমোনের ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি এর ফলে বন্ধ্যাত্ব, গর্ভধারণের জটিলতা, মানসিক অস্বাভাবিকতা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই কার্বলিক এসিড অনেক সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। যেন কোনোভাবেই সেগুলো আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে না পারে।

স্নায়ুতন্ত্রে ক্ষতিকর প্রভাবঃ কার্বলিক এসিড চোখে অন্ধকার দেখা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, ঝিমঝিম ভাব, মনোযোগের অভাব ইত্যাদি তৈরি করতে পারে। স্নায়ু উত্তেজনা কমিয়ে দিয়ে প্যারালাইসিস বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। যদি দীর্ঘদিন ধরে শরীরে কার্বলিক এসিড জমে থাকে। তাহলে সেগুলো স্নায়ু কোষ ধ্বংস করতে পারে। যার ফলে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে। তাই এসিড ব্যবহারের সময় সর্বদা সতর্ক ও সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত শরীরের টেস্ট করাতে হবে।

কার্বলিক এসিডের উপকারিতা কি

কার্বলিক এসিডের উপকারিতা কি কি রয়েছে সেগুলো নিয়ে এখন আমি আপনাদের বিস্তারিত বলবো। যা থেকে আপনি কার্বলিক এসিডের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক কার্বলিক এসিডের উপকারিতা। কার্বলিক এসিড অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি রাসায়নিক পদার্থ যার উপকারিতা অনেক। এটা ব্যবহার করার সময় অনেক সতর্কতা ও সাবধান থাকা প্রয়োজন।

কারন এটি উপকারী হলেও এটি যদি নিয়ম ছাড়া ব্যবহার করা হয়। তাহলে এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে। কার্বলিক এসিড জীবাণু নাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা প্রথমে ব্যবহার করা হতো হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে কারণ এটি জীবাণুনা ধ্বংস করে। তারপরে কোন ক্ষত স্থান পরিস্কার ও জীবাণুমুক্ত করার জন্য এটার ব্যবহার করা হতো বা হয়।

ওষুধ প্রস্তুতিতে এটার ভালো উপকারিতা রয়েছে কারণ ওষুধ তৈরিতে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।শিল্পক্ষেত্রে কার্বলিক এসিডের ব্যবহার হয়ে থাকে যা অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন প্লাস্টিক, রেজিন, রং সুগন্ধি ও অন্যান্য রাসায়নিক উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে এটা ব্যবহার করা হয়। বেকেলাইট এক ধরনের প্লাস্টিক যেটা তৈরিতে কার্বলিক এসিডের দরকার হয়। কীটনাশকে কার্বলিক এসিডের ব্যবহার করা হয় যার উপকারিতা অনেক।

রাসায়নিক গবেষণায় কার্বলিক এসিডের উপকারিতা অনেক বিভিন্ন জৈব যৌগ তৈরিতে এটির গুরুত্ব অনেক। এছাড়ও এর অনেক গন্ধ এবং বিষাক্ততার কারণে অনেক পোকামাকড় উইপোকা ইত্যাদি দূরে থাকে এবং এগুলার উপদ্রব কম হয়। এটি চর্ম রোগে আবার হালকা পোড়া ঘা জীবাণমুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। আশা করি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন কার্বলিক এসিডের উপকারিতা কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

কার্বলিক এসিডের সংকেত

কার্বলিক এসিডের সংকেত আমরা অনেকেই জানতে চাই। কার্বলিক এসিডের সংকেত কি সেটা নিচে উল্লেখ করা হলো। কার্বলিক এসিডের সংকেত হচ্ছে C6H5OH এই সংকেতটি কে আরেকটু সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করা হলো। যেমন C5H6 এটি হচ্ছে অ্যারোমেটিক রিং, যেটার মধ্যে ছয়টি কার্বন পরমাণু এবং পাঁচটি হাইড্রোজেন থাকে। OH আর এটা হচ্ছে হাইড্রোকিল গ্রুপ এই দুইটি হচ্ছে একটি অক্সিজেন আরেকটি হাইড্রোজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। আশা করছি আপনি কার্বলিক এসিডের সংকেত ইতোমধ্যেই জানতে পেরেছেন।

কার্বলিক এসিড এর ব্যবহার

কার্বলিক এসিড এর ব্যবহার আমরা অনেকেই আছি জানিনা। আর এই না জানার কারণে আমরা কার্বলিক এসিডের অনেক অপব্যবহার বা ব্যবহার করতে না জানার কারণে আমরা অনেক সমস্যায় পড়ে থাকি বা অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। এখন আমি কার্বলিক এসিড এর ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের বলবো। আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কার্বলিক এসিড জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ওষুধ ও চিকিৎসায় যেমন এন্টি সেফটিক ওষুধ এবং থাইমল এসপিরিন ধরনের ওষুধ তৈরিতে এটির ব্যবহার করা হয়। দাঁতের জীবাণু ও মুখের জীবাণু দূর করার ক্ষেত্রে এটি অল্পমাত্রায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রাসায়নিক শিল্পে কার্বলিক এসিডের ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেমন প্লাস্টি রেজিন রং ইত্যাদি।

সাবান ও ডিটারজেন্টে এই এসিড ব্যবহার করা হয়। কৃষিখাতে যেমন বিভিন্ন কীটপতঙ্গ বা ছত্রাক নাশক ওষুধে তারপর গোডাউনে পোকামাকড় দূর রাখতে এটার ব্যবহার করা হয়। ল্যাবরেটরির কাজে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আশা করছি আপনি কার্বলিক এসিডের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবার জানব কার্বলিক এসিড ব্যবহারে কি কি সর্তকতা মানতে হবে সে সম্পর্কে

কার্বলিক এসিড ব্যবহারে সতর্কতা

আমরা অনেকেই আছি যারা অনেক কাজের ক্ষেত্রে কার্বলিক এসিডের ব্যবহার করে থাকি। তবে এই কার্বলিক এসিড ব্যবহার করার পূর্বে কিছু সতর্কতা বা সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ এটি অনেক উপকারী হলেও এটির অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আর এইসব সতর্কতা না মেনে এটার ব্যবহার করলে আপনার অনেক ক্ষতিও হতে পারে। তাই অবশ্যই এই সতর্কতা গুলো আপনি এই এসিড ব্যবহার করার পূর্বে মেনে চলবেন নিচে সতর্কতা গুলো উল্লেখ করা হলো
  • কার্বলিক এসিড ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই হাতে গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।
  • কার্বলিক এসিডের ধোঁয়া যেন মুখে চোখে বা ফুসফুসের ক্ষতি করতে না পারে। সেজন্য মুখে মার্কস ও চোখে চশমা ব্যবহার করতে হবে।
  • বন্ধ জায়গায় এটার ব্যবহার করা যাবে না। করলেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অবশ্যই চেষ্টা করবেন বায়ু চলাচল জায়গায় ব্যবহার করার।
  • এটি শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। 
  • যদি কোন কারণে খালি হাতে এটা লেগে যায় বা ত্বকের স্পর্শ হয় সঙ্গে সঙ্গে এটি ধুয়ে ফেলতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • গরম জায়গা বা আগুনের ব্যবহার হয় এরকম জায়গা থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • এটি ব্যবহারের পর যদি আপনার বমি ভাব, চোখে জ্বালা, ত্বকে জ্বালা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যা হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয়

কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে করণীয় কি সেটা এখন আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। কার্বলিক এসিড অনেক ক্ষতিকর এবং অনেক বিষাক্ত একটি রসায়নিক পদার্থ। এটি যদি হাতে ভুলবশত পড়ে যায় বা লেগে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বা দ্রুত ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

যেন এই এসিড টি ত্বকে বেশিক্ষণ না লেগে থাকতে পারে। তারপর জীবাণুনাশক সাবান দিয়ে ভালোভাবে এসিড লাগা জায়গাটি ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি এসিড লেগে যায় তবে মোটেও কোন কাপড় বা টিস্যু দিয়ে সেটিকে মোছার চেষ্টা করবেন না কারণ এর জন্য এসিডটি আরো অন্য জাইগায় লাগতে পারে। হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করার পর যদি হাত জ্বালাপোড়া বা লাল বা ফোস্কা উঠার মত দেখা দেয়।

তাহলে অবশ্যই আপনি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। তার আগে আপনার বাসায় যদি অ্যান্টিসেপটিক মলম থাকে সেটা সেই জায়গায় ব্যবহার করতে পারেন। আর এ সময় বারিতে থাকা দুধ, মধু ও তেল এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। আশা করছি উক্ত আলোচনা থেকে আপনি জানতে পেরেছেন কার্বলিক এসিড হাতে পড়লে আপনার করণীয় কি সেটা।

কার্বলিক এসিড কি সাপ তাড়াতে পারে

কার্বলিক এসিড কি সাপ তাড়াতে পারে এটা আমাদের অনেকের প্রশ্ন আসুন তাহলে জেনে নেই কার্বলিক এসিড কি সত্যি সাপ তাড়াতে পারে সে সম্পর্কে। কার্বলিক এসিড কিছুটা হলেও সাপ তাড়াতে পারে কারণ কার্বলিক এসিডের গন্ধ অনেক তীব্র এবং কার্বলিক এসিড অনেক ক্ষতিকর একটি পদার্থ। সাপের মধ্যে এমন কিছু বিশেষত্ব আছে যা তারা দূর থেকেই কোন কিছুর গন্ধ পেয়ে নেয়।

আর কার্বলিক এসিডের গন্ধ অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ায়। কার্বলিক এসিডের গন্ধ প্রচন্ড ক্ষতিকর এবং অস্বস্তিকর লাগে সাপের কাছে তাই তারা কার্বলিক এসিডের আশেপাশে যায় না দূরে থাকে। আপনি সাপ তাড়ানোর জন্য কার্বলিক এসিড একটি বোতলের মধ্যে বাড়িতে কোন একটি জায়গায় রেখে দিতে পারেন। এতে করে সাপ সেই বাড়ির আশেপাশে সহজে আসবেনা দূরে দূরে থাকবে। তবে এটি সাপ তাড়ানোর জন্য নিরাপদ বা নির্ভরযোগ্য সমাধান নয়।

এটার জন্য আপনি অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। তাই বলে যে কার্বলিক এসিড একবারে কাজের না তা কিন্তু নয় এই এসিডের কারণেও বাড়িতে সাপ আসতে পারে না। আপনি কার্বলিক এসিড যুক্ত যেগুলো অরজিনাল সাবান সে সাবানগুলো টুকরো টুকরো করে বাড়ির বিভিন্ন স্থানে রেখে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রেও সাপ তাড়াতে এটি অনেক সাহায্য করবে। আশা করছি কার্বলিক এসিড সাপ তাড়াতে পারে কিনা সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

কার্বলিক এসিড কোথায় পাওয়া যাবে

কার্বলিক এসিড কোথায় পাওয়া যাবে সেটা হয়তো অনেকেই জানেন আবার অনেকেই জানেন না। কার্বলিক এসিড বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য বিক্রি করে সেই দোকানগুলোতে অথবা ফার্মেসিতে খোঁজ করলে পেতে পারেন। তাছাড়া আপনি আরো যে সব জায়গায় এটি পেতে পারেন সে সব জায়গাগুলো হলো হাসপাতাল, বিভিন্ন হার্ডওয়ারের দোকান থেকে আপনি এটা খোঁজ করলে খুব সহজে পেয়ে যাবেন। আশা করছি আপনি আমার এই বর্ণনা থেকে বা তথ্য থেকে কার্বলিক এসিড কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

কার্বলিক এসিড দাম কত

কার্বলিক এসিডের দাম যারা জানেন না। তাদের জন্য মূলত এখন আমি বর্তমান কার্বলিক এসিডের দাম সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। তবে এই দামটি জায়গা অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে। এই এসিডের দাম সাধারণত আপনি কতটুকু নিবেন তার ওপর নির্ভর করে।
আপনি যদি ৫০ গ্রাম নেন তাহলে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা মতন লাগতে পারে। এক কেজি নিলে ১ হাজার ৬৫০ টাকার মতো লাগতে পারে। এক কথাই আপনি যত বেশি নিবেন দাম তত বেশি হতে থাকবে। আশা করি আপনি কার্বলিক এসিডের দাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

কার্বলিক এসিডের আলোচিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

কার্বলিক এসিডের আলোচিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হলো 
কার্বলিক-এসিডের-ক্ষতিকর-দিক
কার্বলিক এসিড কি বিষাক্ত?
  • হাঁ কার্বলিক এসিড বিষাক্ত। কারণ কার্বলিক এমন পদার্থ দিয়ে তৈরি যা জীবাণুনাশক এবং এটি অনেক ক্ষতিকারক।
কার্বলিক এসিড কি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর?
  • কার্বলিক এসিড ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এটি তকে পড়লে ত্বক জ্বালাপোড়া শুরু হতে পারে এবং ত্বকে লাল ও ফোসা হতে পারে। এমত অবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কার্বলিক এসিড কি সাপ তাড়াতে পারে?
  • কার্বলিক এসিড সাপ তাড়াতে পারে। কারণ এই এসিডের বিষাক্ত দুর্গন্ধ সাপ সহ্য করতে পারে না তাই সাপ এটি থেকে দূরে থাকে। তাই বলা যায় কার্বলিক এসিড সাপ তাড়াতে পারে
কার্বলিক এসিডের সংকেত কি?
  • কার্বলিক এসিডের সংকেত হচ্ছে C6H5OH
কার্বলিক এসিড কি জীবাণু নাশক?
  • কার্বলিক এসিড একটি জীবাণু নাশক উপাদান যা দিয়ে হাসপাতালে অথবা বিভিন্ন ক্ষতস্থানে জীবাণু ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

লেখকের মন্তব্যঃ কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক

কার্বলিক এসিডের ক্ষতিকর দিক সহ আপনি জানতে পেরেছেন কার্বলিক এসিডের সংকেত, কার্বলিক এসিড কোথায় পাওয়া যাবে, কার্বলিক এসিড এর ব্যবহার, কার্বলিক এসিড দাম কত এক কথায় কার্বলিক এসিডের সকল দিক সম্পর্কে আপনি আমার এই আর্টিকেল থেকে জানতে পেরেছেন।

আশা করছি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকে জানার সুযোগ করে দিবেন। আমার উক্ত আর্টিকেলটি থেকে আপনার যদি কোন প্রশ্ন বা আপনি আরো কিছু জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অপরাজিতা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url